ভুট্টা থেকে ৪ হাজার কোটি টাকার তেল পাওয়া সম্ভব

বছরে দেশে উৎপাদিত ৫৪ লাখ টন ভুট্টা থেকে প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার টন ভুট্টার তেল আহরণ করা সম্ভব। যার বাজার মূল্য প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকা। ভুট্টার তেল তৈরির পাশাপাশি ভুট্টা থেকে কর্ন ফেক্স, কর্ন চিপস্ তৈরি করাও সম্ভব। এ তথ্য বাংলাদেশ গম ও ভুট্টা গবেষণা ইনস্টিটিউটের।

শনিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাকের সঙ্গে টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে নাসির স্টার্চ, অয়েল অ্যান্ড অ্যানিমেল ফিড ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড পরিদর্শনকালে মন্ত্রীকে বিষয়টি অবহিত করেন বাংলাদেশ গম ও ভুট্টা গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. মো. এছরাইল হোসেন।

এ সময় দেশে বাণিজ্যিকভাবে ভুট্টা থেকে তেল উৎপাদন করতে পারলে ভোজ্যতেলের আমদানি নির্ভরতা অনেক হ্রাস পাবে বলে মন্তব্য করেছেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, তেল যথাযথভাবে আহরণ করা গেলে ভুট্টাচাষিরা অনেক লাভবান হবে ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিতে সহায়ক হবে।

কৃষিমন্ত্রী ড. রাজ্জাক বলেন, উন্নত দেশের মতো বাংলাদেশেও ভুট্টা থেকে তেল উৎপাদনের অনেক সম্ভাবনা রয়েছে। দেশে শিল্প-কারখানা স্থাপন করে বাণিজ্যিকভাবে ভুট্টার তেল উৎপাদন করতে পারলে একদিকে যেমন বিদেশ থেকে তেল আমদানি হ্রাস পাবে অন্যদিকে তেলের দেশজ উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে।

গম ও ভুট্টা গবেষণা ইনস্টিটিউটের তথ্য বলছে, বাংলাদেশে ভুট্টা নতুন সম্ভাবনাময় ফসল। বাংলাদেশের মাটি ও জলবায়ু ভুট্টা চাষের অনুকূল। দেশের দক্ষিণাঞ্চলের লবণাক্ত জমিতেও ভুট্টার ভালো ফলন হচ্ছে। কৃষকদের কাছেও ভুট্টাচাষ জনপ্রিয়তা লাভ করছে।

সংস্থাটির হিসেবে, ভুট্টার উৎপাদন ক্রমশ বাড়ছে। বর্তমানে দেশে ভুট্টা চাষের মোট আবাদি জমি সাড়ে ৫ লাখ হেক্টরেরও বেশি। তবে উন্নত দেশে ভুট্টার বহুমুখী ব্যবহার থাকলেও দেশে শুধু প্রাণি, পোল্ট্রি ও মাছের খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। দেশে উৎপাদিত ভুট্টার অধিকাংশই (৯৫ শতাংশ) প্রাণি, হাঁস-মুরগির ফিড ও মাছের খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়। তবে ইদানীং খই ভুট্টা, মিষ্টি ভুট্টা (৫ শতাংশ) হিসেবেও মানুষের খাদ্য হিসেবে বেশ গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে।

গম ও ভুট্টা গবেষণা ইনস্টিটিউটের তথ্যে আরও জানা যায়, উন্নত বিশ্বে ভুট্টা থেকে স্টার্চ, ইথানল, জৈব জ্বালানি, তেল উৎপাদনসহ রয়েছে আরও বহুমুখী ব্যবহার। বর্তমানে পৃথিবীর প্রায় ৫২টি দেশে ভুট্টা থেকে উৎকৃষ্ট মানের ভোজ্যতেল উৎপাদিত ও ব্যবহৃত হয়। ভুট্টার তেল স্বাস্থ্যসম্মত ও পুষ্টিসমৃদ্ধ। এতে কোনো আমিষ বা শর্করা নেই, শতকরা ১০০ ভাগই চর্বি বিদ্যমান যার পুষ্টিমান অন্যান্য তেলের চেয়ে তুলনামূলকভাবে বেশি।

জানা গেছে, ভুট্টা তেলে বিদ্যমান সম্পৃক্ত ফ্যাটি এসিড ও অসম্পৃক্ত ফ্যাটি এসিড সয়াবিন ও সূর্যমুখী তেলের সমপরিমাণ। ভুট্টা তেলে ভিটামিন ই (টোকোফেরল)-এর পরিমাণ সূর্যমুখী তেলের চেয়ে বেশি। বিশেষত ভুট্টার তেলে ভিটামিন কে (১.৯ মাইক্রো গ্রাম) রয়েছে যেখানে সয়াবিন ও সূর্যমুখী তেলে তা অনুপস্থিত। এছাড়াও সালাদ, বিস্কুট, চানাচুর, কেক, পাউরুটি, মাখন তৈরি করতে ভুট্টার তেল ব্যবহৃত হয়।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

আজকের দিন-তারিখ
  • বৃহস্পতিবার (সন্ধ্যা ৬:০৩)
  • ২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • ১৬ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি
  • ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (গ্রীষ্মকাল)
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com