মিসরে হাজার বছর পূর্বের ২২ শাসকের মমিগুলোকে নতুন জাদুঘরে স্থানান্তর

মিসরে হাজার হাজার বছর পূর্বের রাজকীয় মমিগুলোকে নতুন এক জাদুঘরে স্থানান্তর উপলক্ষে চোখ ধাধানো আর জাকজমকপূর্ণ শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়েছে। উক্ত মমিগুলোকে অভিবাদন ও শ্রদ্ধা জানাতে শনিবার (৩ এপ্রিল) রাতে রাস্তার দুপাশে জড়ো হয়েছিলেন হাজারও মানুষ। এ আয়োজনে ব্যয় হয়েছে কয়েক মিলিয়ন ডলার। পুরো আয়োজনটিতে অংশ নেন মিশরের প্রেসিডেন্ট আব্দেল ফাত্তাহ আল সিসি।
কায়রোর মিসরীয় জাদুঘর থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে মিসরীয় সভ্যতার ওপর নির্মিত নতুন একটি জাদুঘরে মমিগুলো স্থানান্তর করা হয়। মমিগুলোর মধ্যে প্রাচীন মিশরীয় ১৮ রাজা ও ৪ রানি রয়েছেন বলে জানা গেছে।
এদের মধ্যে রাজা দ্বিতীয় রামসেসের মমিও রয়েছে। আয়োজকরা জানান, দ্বিতীয় রামসেসের মমি নিয়েই জনসাধারণের মধ্যে আগ্রহ ছিল সবচেয়ে বেশি। কেননা, তিনি ৬৭ বছর শাসন করেছেন এবং নিউ কিংডমে তিনিই ছিলেন সবচেয়ে জনপ্রিয় ফারাও। বলা হয় যে, তিনিই প্রথম কোনও শান্তি চুক্তিতে সই করেছিলেন। আরেকজন রানি হাটসেপসুট। ওই সময়ে কোনও নারীর ফারাও হওয়ার প্রথা না থাকলেও তিনি শাসক হয়েছিলেন।
শোভাযাত্রায় প্রতিটি মমিকে নেয়া হয় বাহারি একেকটি যানে। আর মমিগুলো রাখা হয় নাইট্রোজেন-ভর্তি বিশেষ বাক্সে। যাত্রাপথে মমিগুলো যাতে কোন ধরনের ঝাঁকুনি না খায়, সে জন্য নেয়া হয় বিশেষ ব্যবস্থা। এছাড়া মমিগুলো নিয়ে যাওয়ার পথটিও মসৃণ করে তোলার জন্য ভালোভাবে মেরামত করা হয়। মমি বহনকারী গাড়িবহরগুলোর নিরাপত্তায় ছিল নিñদ্র নিরাপত্তা। সেইসঙ্গে ছিল ঘোড়ায় টানা রথের রেপ্লিকাও।
এ সময় ২১ বার গান স্যালুট দিয়ে তাদের স্বাগত জানান মিসরের প্রেসিডেন্ট জেনারেল সিসি। ইউনেস্কো ও বিশ্ব পর্যটন সংস্থার প্রধানরাও নতুন জাদুঘর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
ফারাওদের মৃতদেহ মমি করে রাখার পদ্ধতি আবিষ্কৃত হয় প্রাচীন মিসরে। ১৮৮১ সালে থেকে ১৮৯৮ সালের মধ্যে প্রাচীন মিসরের রাজধানী থিবস থেকে মমিগুলো উদ্ধার করা হয়। আধুনিককালে এই জায়গাটি লাক্সর নামে পরিচিত।
এর আগেও এসব মমিকে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় স্থানান্তর করা হয়েছিল। লাক্সর থেকে রাজধানী কায়রোতে আনা হয়েছে নীল নদ দিয়ে নৌকায় করে। কিছু মমিকে আনা হয়েছিল ট্রেনের প্রথম শ্রেণির বগিতে।
কর্মকর্তারা আশা করছেন, নতুন জাদুঘরে স্থানান্তর করার পর এগুলো সারা বিশ্ব থেকে প্রচুর পর্যটক আকর্ষণ করবে। এর ফলে চাঙ্গা হয়ে উঠবে পর্যটন শিল্প যা মিসরের রাজস্ব আয়ের অন্যতম প্রধান উৎস। সূত্র: আল জাজিরা, ভয়েস অব আমেরিকা।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

আজকের দিন-তারিখ
  • শুক্রবার (রাত ৩:১৭)
  • ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • ১৯শে রমজান, ১৪৪৫ হিজরি
  • ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ (বসন্তকাল)
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com