মামলা করতে বাদীর জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর দিতে হবে: হাইকোর্ট

থানায় বা আদালতে এখন থেকে মামলা বা অভিযোগ করতে গেলে বাদী বা অভিযোগকারীর জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর উল্লেখ করতে হবে। প্রয়োজনে জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি দিতে হবে।

এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চ্যুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ সোমবার এ আদেশ দেন।

ধর্ষণ, মারধর, চুরি, মানব পাচার—এমন সব অভিযোগে দেশের ১৩টি জেলায় করা ২০টি মামলার চক্করে রাজধানীর শান্তিবাগের বাসিন্দা ও ব্যবসায়ী একরামুল আহসানকে ১ হাজার ৪৬৫ দিন কারাভোগ করতে হয়। এ অবস্থায় ওই সব মামলা ‘মিথ্যা’ উল্লেখ করে মামলা দায়েরে সম্পৃক্ত বা বাদীকে খুঁজে বের করতে তদন্তের নির্দেশনা চেয়ে ৭ জুন হাইকোর্টে রিট করেন ৫৫ বছর বয়সী একরামুল।

রিটের ওপর আজ শুনানি হয়। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী জয়নুল আবেদীন ও এমাদুল হক বশির। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার ও অরবিন্দ কুমার রায়।

শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট ওই সব মামলা দায়ের ও তার পেছনে কারা আছেন, তা খুঁজে বের করতে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) নির্দেশ দিয়েছেন। তদন্তের অগ্রগতি জানিয়ে আদালতে প্রতিবেদন দিতেও বলা হয়েছে।

মারধর, প্রতারণা, চুরি, এডিস নিক্ষেপ, মানব পাচার, ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের অভিযোগে ১৩টি জেলায় একরামুলের বিরুদ্ধে ৪৯টি মামলা হয় বলে জানান তাঁর আইনজীবী এমাদুল হক বশির।

এমাদুল হক বশির বলেন, এসব মামলার মধ্যে কোনোটিতে বাদীকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। আবার কোনটিতে সাক্ষী আসেননি। এ দিক বিবেচনায় ৩৬টি মামলায় ইতিমধ্যে একরামুল নিম্ন আদালত থেকে খালাস পেয়েছেন। বাকি ১৩টি মামলা বিচারাধীন। ৪৯টি মামলার মধ্যে ২০টি মামলায় ১ হাজার ৪৬৫ দিন কারাভোগ করেছেন একরামুল। হয়রানির উদ্দেশ্যে ‘মিথ্যা’ মামলা দিয়ে তাঁকে কারাগারে রাখা তাঁর ব্যক্তি স্বাধীনতার লঙ্ঘন উল্লেখ করে রিটটি করা হয়।

আইনজীবীর তথ্যমতে, ঘটনার শুরু ২০১১ সালে। মারধরের অভিযোগে নারায়ণগঞ্জের এক মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা সূত্রে ওই বছরের ১৭ নভেম্বর কারাগারে যান একরামুল। একে একে তার সামনে আসতে থাকে মামলা। পরোয়ানা সূত্রে ১৩টি জেলায় নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। একবার জামিনে বের হন, পরে আবার অন্য মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো বা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা সূত্রে তাঁকে আবার কারাগারে যেতে হয়। আবার কোনো মামলাসূত্রে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করেন তিনি। এর মধ্যে মানব পাচারের অভিযোগে চাঁদপুরের এক মামলায় গত বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি জামিনে মুক্তি পান একরামুল।

মামলায় জামিনে মুক্তি পেয়ে একরামুল রিট করেন। নারায়ণগঞ্জের কুতুবপুরে অবস্থিত আনোয়ার ডাইং অ্যান্ড প্রিন্টিংয়ের মালিক তিনি।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

আজকের দিন-তারিখ
  • শুক্রবার (দুপুর ১:২৮)
  • ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • ১০ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি
  • ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (গ্রীষ্মকাল)
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com