দেশের প্রত্যেক নাগরিকের ব্যক্তিগত তথ্যের গোপনীয়তা রক্ষার অধিকার রয়েছে। কারও ব্যক্তিগত তথ্য বা ফোনালাপ ফাঁস করা অপরাধ। কাজেই কোনো নাগরিকের ব্যক্তিগত তথ্যের গোপনীয়তা ফাঁস হলে এর জন্য যারা দায়ী, তাদের শাস্তি হওয়া উচিত।
আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার মানুষের জীবনে গতি এনেছে; একই সঙ্গে বাড়িয়েছে প্রাইভেসি ও নিরাপত্তাজনিত ঝুঁকিও। তবে এসব ঝুঁকি নিরসনের জন্য দেশে আইন ও কর্তৃপক্ষ আছে। তাদের কাছ থেকে এ ব্যাপারে যথাযথ ভূমিকা প্রত্যাশিত।
বস্তুত প্রযুক্তিনির্ভর আর্থিক লেনদেনে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা না হলে ক্ষতির আশঙ্কা থাকে। এ ধরনের লেনদেনের ক্ষেত্রে কোনো ব্যক্তির গোপন তথ্য যাতে ফাঁস হয়ে না যায়, সেজন্য কর্তৃপক্ষের উচিত বিশেষ সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নেওয়া। দেশে বর্তমানে আর্থিক লেনদেনের একটি বড় অংশ হচ্ছে ডিজিটাল মাধ্যমে। এক্ষেত্রে বড় অঙ্কের অর্থ লেনদেনে প্রযুক্তির নানা সহায়তা নেওয়া হয়।
দেশে অনলাইন লেনদেন, এটিএম লেনদেন এবং মোবাইল ব্যাংকিংয়ে লেনদেনের ক্ষেত্রে নানা রকম জালিয়াতি হচ্ছে। সম্প্রতি একটি বেসরকারি ব্যাংকের গ্রাহকের মোবাইল ফোন নম্বর পরিবর্তন করে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাতের ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া দুটি বেসরকারি ব্যাংকের গ্রাহকের ব্যক্তিগত তথ্য চুরি করে বিকল্প ক্রেডিট কার্ড তৈরির করে এটিএম বুথ থেকে অর্থ আত্মসাতের ঘটনাও ঘটেছে।
প্রতারকরা ভুয়া নম্বর থেকে গ্রাহককে ফোন করে কৌশলে ব্যক্তিগত তথ্য জেনে নিচ্ছে; পরে সেগুলো ব্যবহার করে গ্রাহকের হিসাবের নিয়ন্ত্রণ নিজের হাতে নিয়ে অর্থ আত্মসাৎ করছে। এসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোয় গ্রাহকের হিসাবের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যক্তিগত তথ্য গোপন রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বস্তুত প্রতারকরা গ্রাহকের ব্যক্তিগত তথ্য জেনে হিসাব থেকে কৌশলে অর্থ আত্মসাতের চেষ্টা করে থাকে। এ কারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংক গ্রাহকের এসব তথ্য গোপন রাখার জন্য ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে।
গ্রাহকদেরও এসব বিষয়ে সতর্ক থাকা জরুরি হয়ে পড়েছে। বস্তুত প্রতারক চক্রগুলো বিভিন্ন উৎস থেকে গ্রাহকের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করে থাকে। কাজেই গ্রাহকের জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি, মোবাইল ফোন নম্বর, ব্যাংক হিসাব নম্বর ইত্যাদি তথ্য যাতে ফাঁস হয়ে না যায় সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নিতে হবে কার্যকর পদক্ষেপ। একই সঙ্গে প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে নিতে হবে যথাযথ ব্যবস্থা।