বগুড়ায় যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে হত্যার দায়ে উজ্জ্বল প্রাং নামের এক ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। হত্যাকাণ্ডের ১৬ বছর পর আসামি দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় আদালত তাকে এ দণ্ড দেন। এছাড়া এ মামলার অন্য আরো ৪ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদেরকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত।
রবিবার দুপুরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক এ,কে,এম ফজলুল হক এ রায় ঘোষণা করেন। তবে রায় ঘোষণার সময় আসামি পলাতক ছিলেন। এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন বগুড়ার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যাল-১ এর পিপি নরেশ চন্দ্র মূখার্জী।
দণ্ডপ্রাপ্ত উজ্জল বগুড়া সদরের কৈচর দক্ষিণ পাড়ার মৃত আবুল হোসেনের ছেলে।
বেকসুর খালাসপ্রাপ্তরা হলেন- উজ্জ্বলের ভাই হিরা প্রাং, উজ্জ্বলের মা আলেয়া বেওয়া, কাহালুর আলোক্ষছত্র এলাকার মৃত মজিবর রহমানের ছেলে নাজমুল হোসেন লাবু এবং তার স্ত্রী লাভলী বেগম।
জানা গেছে, ২০০৬ সালের জুন মাসে উজ্জ্বলের সঙ্গে শহরের সূত্রাপুর এলাকার আকবর আলী শেখের মেয়ে আলো বেগমের বিয়ে হয়। এতে যৌতুক হিসেবে ৩০ হাজার টাকা প্রদান করে উজ্জ্বলকে। পরে বিদেশ যাওয়ার জন্য উজ্জ্বল আরও ৫০ হাজার টাকা দাবি করে। এ নিয়ে দুই পরিবারের মধ্যে বাগবিতণ্ডাসহ শালিস হয়। পরে ৫০ হাজার টাকা না দিলে আলো বেগমকে তালাক দেবে বলে উজ্জ্বল জানায়। এদিকে আর কোন টাকা তাকে দেয়া হবে না বলে আলো বেগমের পরিবার থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়। এরপর ২০০৬ সালের ১ আগস্ট বিকাল ৪টায় আলো বেগমের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে ১৮ আগস্ট নিহত আলো বেগমের ভগ্নিপতি জাহাঙ্গীর আলম উজ্জ্বলকে প্রধান আসামি করে ৫জনের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ ১৬ বছর পর রোববার দুপুরে মামলার সাক্ষ্যপ্রমাণে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় আদালত এ রায় ঘোষণা করেন।
নিহত আলো বেগমের স্বজনেরা জানান, আলো বেগমের বাবা-মা মারা গেলেও ন্যায় বিচারের প্রত্যাশায় তারা মামলা পরিচালনা করে আসছেন।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যাল-১ বগুড়ার পিপি নরেশ চন্দ্র মূখার্জী জানান, উজ্জ্বল দীর্ঘদিন ধরে পলাতক রয়েছে। রায়ে তাকে এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও এক বছর সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন আদালত।