চীনকে রুখতে ৩৫ হাজার ৮০০ কোটির রণতরী নামাচ্ছে ভারত

চীনের সঙ্গে টেক্কা দিতে আরও এক ধাপ এগোল ভারত। আগামী রোববার ভারতীয় নৌবাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত হতে চলেছে দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি ক্ষেপণাস্ত্র ধবংসরকারী রণতরী আইএনএস মুরমুগাও।

৭ হাজার ৪০০ টন ওজনের এই যুদ্ধজাহাজের নাম গোয়ার ঐতিহাসিক বন্দর শহর মুরমুগাওয়ের নামে রাখা হয়েছে। শত্রুপক্ষকে মোকাবেলায় একগুচ্ছ অত্যাধুনিক ব্যবস্থা রয়েছে এই রণতরীতে। আইএনএস মুরমুগাও দৈর্ঘ্যে ১৬৩ মিটার ও প্রস্থে ১৭ মিটার।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, আইএনএস মুরমুগাওয়ে রয়েছে ‘স্টেলথ প্রযুক্তি’। এই প্রযুক্তি থাকায় রেডার বা অন্য কোনও পদ্ধতিতে এই যুদ্ধজাহাজের গতিবিধি ধরা পড়বে না। তবে এই প্রযুক্তির সাহায্যে প্রতিপক্ষের জাহাজের গতিবিধি দেখা যাবে। যার ফলে শত্রুপক্ষের উপর হামলা চালাতে এই ধরনের যুদ্ধজাহাজ বাজিমাত করতে পারে বলেই ।

রণতরীতে রয়েছে অত্যাধুনিক সব অস্ত্র। আইএনএস মুরমুগাওতে রয়েছে ব্রাহ্মোস সুপারসনিক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র, যা ২৯০ কিমি থেকে ৪৫০ কিমি পর্যন্ত দূরত্বে থাকা লক্ষ্যবস্তুকে আঘাত করতে পারে। এ ছাড়াও এই যুদ্ধজাহাজে রয়েছে ৭০ কিমি মাঝারি পাল্লার ‘সার্ফেস টু এয়ার’ (স্থলভাগ থেকে আকাশসীমা) ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার ব্যবস্থা, টর্পেডো, রকেট লঞ্চার ও নানা ধরনের বন্দুক।

ভারতে তৈরি শক্তিশালী যুদ্ধজাহাজগুলোর মধ্যে অন্যতম আইএনএস মুরমুগাও। পারমাণবিক হামলা বা জৈব হামলা চালালেও এই রণতরীর কিছু হবে না বলেই দাবি করা হয়েছে।

আইএনএস মুরমুগাও ভারতীয় নৌবাহিনীর ‘প্রজেক্ট ১৫বি’-এর আওতায় তৈরি দ্বিতীয় রণতরী। যা তৈরি করতে খরচ হয়েছে ৩৫ হাজার ৮০০ কোটি রুপি। এই প্রকল্পের আওতায় প্রথম তৈরি হয়েছিল আইএনএস বিশাখাপত্তনম। যার সূচনা হয় ২০২১ সালের নভেম্বর মাসে।

ভারতীয় নৌবাহিনীর ‘প্রজেক্ট ১৫ বি’-তে অধিকাংশ দেশীয় প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে ‘স্টেলথ জাহাজ’ তৈরি করা হয়। এই প্রকল্পে মোট চারটি জাহাজ রয়েছে। এই প্রকল্পের অধীনে তৈরি অপর দুই রণতরী আইএনএস ইম্ফল ও আইএনএস সুরতকে নৌবাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করা হতে পারে ২০২৩-২৪ সালে। সবকটি জাহাজেরই নকশা তৈরি করেছে ভারতীয় নৌবাহিনীর ‘ওয়ারশিপ ডিজাইন ব্যুরো’। এই জাহাজগুলি তৈরি করেছে মুম্বইয়ের মজাগন ডক শিপবিল্ডার্স লিমিটেড।

আগামী ১৮ ডিসেম্বর গোয়া মুক্তি দিবস উপলক্ষে দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংহের হাত ধরে ভারতীয় নৌবাহিনীতে এই নতুন রণতরীর যাত্রা শুরু হওয়ার কথা।

এদিকে, যে প্রেক্ষাপটে ভারতীয় নৌবাহিনীতে যুক্ত হতে চলেছে এই অত্যাধুনিক রণতরী, তা তাৎপর্যপূর্ণ। পূর্ব লাদাখের পর সম্প্রতি অরুণাচলে তাওয়াংয়ে আগ্রাসন দেখিয়েছে চীন। দুইদেশের সেনার মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় ভারত-চীন সীমান্ত বিবাদ নতুন করে মাথাচাড়া দিয়েছে। আবার, ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ক্রমশ বাড়ছে চীনা সক্রিয়তা। এই পরিস্থিতিতে ভারতীয় নৌবাহিনীতে ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংসকারী এই রণতরীর আগমন গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা ।

সূত্র: আনন্দবাজার

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com