তুরস্ক-সিরিয়ায় ভয়াবহ ভূমিকম্প প্রাণহানি ১৫ হাজার ছাড়ালো, পুরোদমে চলছে উদ্ধারকাজ

তুরস্ক-সিরিয়ায় ভয়াবহ ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা ১৫ হাজার ছাড়িয়েছে। তাদের মধ্যে শুধু তুরস্কেই মারা গেছে ১২ হাজার ৩৯১ জন। অন্যদিকে, সিরিয়ায় নিহতের সংখ্যা দুই হাজার ৯৯২ জন।

এদিকে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান ভূমিকম্প পরবর্তী সময়ে সরকারের সাড়াদান নিয়ে সৃষ্ট সমালোচনা প্রত্যাখ্যান করেছেন। নিজ সরকার সমর্থন করে তিনি বলেন, পর পর যে ভয়াবহ দুটি ভূমিকম্প ঘটেছে, তাতে তাৎক্ষণিকভাবে সাড়াদান খুব একটা সহজ ছিল না।

অনেক তুর্কি নাগরিক পর্যাপ্ত সরঞ্জাম ও সহায়তার অভাবের অভিযোগ করে বলেন, ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়া জীবিত ব্যক্তিরা সাহায্যের জন্য চিৎকার করে কান্না করছেন। কিন্তু প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম ও অভিজ্ঞ উদ্ধারকারীর অভাবে তাদের ‍উদ্ধার করা সম্ভব হচ্ছে না।

সমালোচকদের দাবি, জরুরি বিভাগগুলোর প্রতিক্রিয়া খুবই ধীর ছিল। পাশাপাশি সরকারের প্রস্তুতিতেও ঘাটতি ছিল। এরদোয়ানও বিষয়টি স্বীকার করেন। তিনি বলেন, সরকার কিছু সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে, তবে পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রিত। পুরোদমে উদ্ধারকাজ চলছে।

তুরস্কের প্রধান বিরোধীদলীয় নেতা কামাল কিলিচদারোগ্লু দ্বিমত পোষণ করে বলেন, যদি এত বিশাল হতাহতের জন্য কেউ দায়ী থাকেন, তবে তিনি হলেন এরদোয়ান। তার এ দাবি অস্বীকার করে এরদোয়ান বলেন, দুর্যোগের পর সবার মধ্যে ঐক্যের প্রয়োজন ছিল। দেশের এমন সংকটময় সময়েও যারা রাজনৈতিক স্বার্থে নেতিবাচক প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সময় এখন নয়।

এদিকে, যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়ার কেবল ইদলিব প্রদেশেই মারা গেছেন এক হাজার ৫০০ জনেরও বেশি। এমন অবস্থায় সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের এক উপদেষ্টা বলেন, আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞাগুলো সিরিয়াকে প্রয়োজনীয় সহায়তা পেতে বাধা দিচ্ছে।

‘আমাদের পর্যাপ্ত বুলডোজার ও ক্রেন নেই। তাছাড়া ইউরোপীয় ও মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কারণে উদ্ধারকাজ ও সহায়তা পাওয়ার সুযোগ ব্যাহত হচ্ছে।’

এদিকে, ভূমিকম্পে তুরস্ক-সিরিয়ার সীমান্তবর্তী রাস্তাগুলোর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হওয়ায় বাধাগ্রস্ত হচ্ছে জাতিসংঘের সহয়তা কার্যক্রম। প্রতিকূল পরিস্থিতিতে সিরিয়ায় সহায়তা সরবরাহ বন্ধ রাখতে বাধ্য হয় সংস্থাটি।

যদিও এর জাতিসংঘের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেছিলেন, খুব শিগগির সিরিয়ায় সহায়তা সরবরাহ চালু হতে পারে। তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত কাভুসোগলু নিশ্চিত করেছেন, সিরিয়ায় আন্তর্জাতিক সহায়তা পৌঁছানোর সুবিধার্থে আরও দুটি সীমান্ত গেট খুলে দেওয়া হবে।

ইউরোপী ইউনিয়ন (ইইউ) নিশ্চিত করেছে, সিরিয়া সরকারের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে সহায়তা বাবদ ৩০ লাখ ৫০ হাজার পাউন্ড দেওয়া হবে। তবে, ওই অর্থ অবশ্যই সরকারি ও বিদ্রোহী-নিয়ন্ত্রিত এলাকায় পৌঁছে দিতে হবে।

 

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com