বিশ্বের ৫২টি দেশে মৎস্য ও মৎস্যজাত পণ্য রপ্তানী করা হচ্ছে

বর্তমানে বিশ্বের ৫২টির বেশী দেশে বাংলাদেশের মৎস্য ও মৎস্যজাত পণ্য রপ্তানী করা হচ্ছে। এ মৎস্য রপ্তানী করে ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে প্রায় ৭০ হাজার মেট্রিক টন মৎস্য ও মৎস্যজাত পণ্য রপ্তানীর মাধ্য দেশের আয় হয়েছে ৪ হাজহার ৭৯০ কোটি ৩০ লাখ টাকা। মৎস্য উৎপাদন ও রপ্তানী আরও বাড়াতে এবং নিরাপদ মাছ চাষের জন্য নানা পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।

নিরাপদ মাছে ভরবো দেশ,গড়বো স্মাট বাংলাদেশ। এই প্রতিপাদ্য নিয়ে আগামী ২৪ জুলাই সোমবার থেকে ৩০ জুলাই পর্যন্ত জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ -২০২৩ উদযাপন করা হবে। দেশে মাছ উৎপাদন ও ব্যবস্থাপনায় অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সমন্বয় ঘটিয়ে নিরাপদ ও স্বাস্থ্য সম্মত মাছ উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে দেশের আপামর মানুষের খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখার পাশাপাশি প্রযুক্তি নির্ভর,অর্থনৈতিক ভাবে সমৃদ্ধ ও উন্নত স্বাট বাংলাদেশ গড়ার বিনির্মাণের দৃঢ় প্রত্যয়ে এবারের জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উদযাটন করা হবে।

মন্ত্রণালয়ের এক তথ্যে জানা গেছে, বাংলাদেশের মাছ নেদারল্যান্ডস, বেলজিয়াম,জার্মানী,যুক্তরাজ্য ,চীন ,ভারত ,ফ্রান্স,যুক্তরাষ্ট,জাপান ,রাশিয়া অন্যতম। বাংলাদেশ থেকে প্রধানত গলদা,বাগদা,হরিণাসহ বিভিন্ন প্রজাতির চিংড়ি,স্বাদুপানির মাছ-রুই,কতলা,মৃগেল,আইড়,টেংরা,বোয়াল, পাবদা,কৈ ও সামদ্রিক মাছের মধ্যে ভেটকি, দাতিনা, রুপচাঁদা, কাটল ফিস,কাঁকড়া, কুচিয়া রপ্তানী করা হয়ে থাকে।

এছাড়াও শুটকি মাছ,মাছের আাঁইশ ও চিংড়ির খোলস্ রপ্তানী হয়ে থাকে। রপ্তানীকৃত মৎস্যজাত পণ্যের প্রায় ৭ ভাগ ভ্যালু অ্যাডেট প্রোডক্টস। আন্তর্জাতিক বাজারে নিরাপদ ও মানসম্মত মৎস্য ও মৎস্যপণ্য রপ্তানীর লক্ষ্যে ঢাকা ,চট্রগ্রাম ও খুলনায় তিনঁিট বিশ্বমানের মাননিয়ন্ত্রণ পরীক্ষাগার স্থাপন করা হয়েছে।

আন্তর্জাতিক বাজারে চিংড়ি রপ্তানী অব্যাহত রাখার জন্য চাষি পর্যায়ে রোগমুক্ত ও মানসম্পন্ন চিংড়ি, পোনা সরবরাহ নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে কক্¦াজার,সাতক্ষীরা ও খুলনায় পিসিআর ল্যাব প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।

মৎস্য উৎপাদনের বিভিন্ন পর্যায়ে নিষিদ্ধ এণ্টিবায়োটিকসহ ক্ষতিকর রাসায়নিকের রেসিডিউ, র্দূষণ মনিটরিংয়ের জন্য মৎস্য অধিদপ্তর প্রতি বছর ন্যাশনাল রেসিডিউ কন্ট্রোল প্ল্যান প্রণয়ন ও তার সুষ্ঠু বাস্তবায়ন করছে। রপ্তানীযোগ্য মাছ ও চিংড়ির ভ্যালুচেইনের সকল পর্যায়ে ট্রেসেবিলিটি সিস্টেম কার্যকর করা হয়েছে। বর্তমান সরকার মৎস্য ও মৎস্যপণ্য (পরিদর্শন ও মান নিয়ন্ত্রণ) আইন ২০২০ প্রণয়ন করেছে। ইতোমধ্যে বাগদা চিংড়ি বাংলাদেশের বাগদা চিংড়ি ভৌগলিক পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ায় তা নিজস্ব পরিচয়ে ও স্বকীয়তায় সারাবিশ্বে পরিচিত লাভ করেছে। চিংড়ির উৎপাদন বৃদ্ধি ও আন্তর্জাতিক বাজার বিবেচনায় দেশে চলতি বছর থেকে চাষি পর্যায়ে ভেনামি চিংড়ি চাষের অনুমতি দেয়া হয়েছে।

মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে,নিরাপদ ও স্বাস্থ্য সম্মত মাছ উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য সরকার নানা পদক্ষেপ নিয়েছেন। একই সঙ্গে মাছের ওজন বাড়াতে চিংড়িতে বিষাক্ত জেলি পুশ ঠেকাতে কোস্টগার্ডের অভিযানে বহু চিংড়ির চালান জব্দ করা হয়েছে। বিষাক্ত ও¦ই সব চিংড়ি মাটিতে পুতে ফেলা হয়েছে। কোস্টগার্ডের অভিযান অব্যাহত আছে।

আবার সরকারের পক্ষ থেকে মৎস্য রপ্তানী ধরে রাখতে এবং নিরাপদ মৎস্য নিশ্চিত করতে নানা উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। আর নতুন নতুন জাতের মাছ উৎপাদনে মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট কাজ করে যাচ্ছেন।

জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উপলক্ষ্যে রাজধানীকে কেন্দ্রীয় কর্মসূচি এবং দেশের সব জেলা ও উপজেলায় স্থানীয় ভাবে কর্মর্সূচি পালন করা হবে। কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে সপ্তাহের প্রথম দিন আগামী ২৪ জুলাই সকাল ৮টার দিকে রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে বর্ণাঢ্য র্র‌্যালি অনুষ্ঠিত হবে। এ বছর মৎস্য খাতে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরুপ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে পদক দেয়া হবে বলে জানা গেছে।

সপ্তাহ ব্যাপী আলোচনা অনুষ্ঠান প্রচার,স্কুল-কলেজ ও জনবহুল স্থানে আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন, মৎস্য খাতের সাফল্য তুলে ধরা হবে। মৎস্যচাষিদের জন্য বিশেষ পরামর্শ সেবা,প্রশিক্ষণের আয়োজন,দরিদ্র জেলেদের বিকল্প কর্মসংস্থানের উপকরণ বিতরণ,মাছের পোনা অবমুক্তকরণ,স্থানীয় পর্যায়ে মাছ চাষে সফল চাষি ও উদ্যোক্তাদের পুরুস্কার করাসহ নানা কর্মসূচি পালন করার প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com