রংপুর বিভাগের মানুষ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে বরাবরই একটু বাড়তি প্রত্যাশা করে থাকেন। কারণ তিনি ‘রংপুরের পুত্রবধূ’। এবারও প্রধান প্রধান কিছু সমস্যা-দাবি পূরণে তার দিকে তাকিয়ে আছেন এ অঞ্চলের মানুষ। উত্তরের এ অঞ্চলের মানুষ আশা করছেন, রংপুরের জনসভা থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিভাগের সবগুলো জেলার জন্যই কিছু না কিছু ঘোষণা দেবেন। বুধবার (২ আগস্ট) প্রধানমন্ত্রীর রংপুর সফর নিয়ে তাই আশার সঞ্চার ঘটেছে বিভাগের আট জেলার মানুষের মাঝে।
এবার প্রধানমন্ত্রীর জনসভা এ অঞ্চলের মানুষের কাছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এ অঞ্চলের মানুষ নির্বাচনের আগে তাদের দীর্ঘদিনের তিস্তার সমস্যা সমাধান হবে এমন আশায় বুঁক বেঁধেছেন। রংপুর অঞ্চলের মানুষের প্রাণের দাবি তিস্তা নদী নিয়ে সরকারের তিস্তা পরিকল্পনা। বাংলাদেশ অংশে লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, রংপুর ও নীলফামারী জেলার ওপর দিয়ে তিস্তা নদী বয়ে গেছে। উত্তরাঞ্চলের কৃষি ও মৎস্য উৎপাদন তিস্তার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। বিশেষ করে তিস্তা অববাহিকার পাঁচ হাজার ৪২৭টি গ্রামের মানুষ তাদের জীবিকার জন্য এ নদীর ওপর বহুলাংশে নির্ভরশীল।
সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা এখন ‘সুখবর’ ঘোষণার অপেক্ষায়। এসব নিয়ে বিভাগজুড়ে চলছে নানা জল্পনা। তারা মনে করছেন, শুধুই তিস্তা সমস্যা সমাধানই নয়, ঘোষণায় যোগাযোগ, শিক্ষা, কৃষির মতো ক্ষেত্রেও বিভিন্ন জেলার মানুষের দাবির প্রতি সমর্থন জানাবেন প্রধানমন্ত্রী।
‘প্রাণের দাবি’ তিস্তা
ভারত থেকে আসা আলোচিত নদী তিস্তা রংপুর বিভাগের আট জেলার মধ্যে নীলফামারী, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, রংপুর ও গাইবান্ধা-এই পাঁচ জেলার উপর দিয়েই বয়ে গেছে। বর্ষায় উজানের ঢল এবং নদী ভাঙনে নদীতীরবর্তি এসব এলাকা যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হয় তেমনি শুস্ক মৌসুমে পানির অভাবে নদী থেকে সেচের সুবিধা পাওয়া যায় না। ফলে এ নদী এখন রংপুর অঞ্চলের অভিশাপে পরিণত হয়েছে। যুগ যুগ ধরে পানির ন্যায্য হিস্যার দাবিতে সোচ্চার এসব মানুষের দাবি, নদী খননের মাধ্যমে বর্ষার পানি ধরে রাখা, বাঁধ নির্মাণসহ নানা কাজের মাধ্যমে বিজ্ঞানসম্মতভাবে তিস্তা নিয়ে মহাপরিকল্পনা নেওয়ার।