সবশেষ জাতীয় নির্বাচনে ‘দিনের ভোট রাতে হয়েছে’ বলে দেশে বিদেশে একটা প্রচারণা আছে। এই ‘বিতর্ক’ এড়াতে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যালট পেপার ভোটের দিন সকালেই কেন্দ্রে পাঠানোর চিন্তা-ভাবনা করছে নির্বাচন কমিশন। এ বিষয়ে আজ নির্বাচন কমিশনার আলমগীর সুস্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, এই প্রক্রিয়া ইতোমধ্যে তারা শুরু করেছেন।
রোববার (৬ আগস্ট) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে নির্বাচন প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন ইসি আলমগীর।
এসময় ব্যালটে নাকি ইভিএমে- এ সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে আলমগীর বলেন, এবার নির্বাচন ব্যালটেই হবে। আগে যেভাবে এগুলো হয়েছে, এবারও সেভাবেই হবে। ব্যালটে নির্বাচনের ক্ষেত্রে যাতে ব্যালটের কোনোরকম অপব্যবহার না হতে পারে সেজন্য আমাদের কিছু কৌশল আছে, সেগুলো আমরা প্রয়োগ করার চেষ্টা করব। যেমন তার মধ্যে একটা হলো- আমরা দায়িত্ব নেওয়ার পর নির্বাচনের দিন সকালে ব্যালট পেপার পাঠাই। যদি যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো না হয় বা উন্নত না হয়, সেক্ষেত্রে একটু আগে পাঠাই। যোগাযোগ যেখানে ভালো, ভোট ৮টায় শুরু করলে ভোট শুরু হওয়ার আগেই যেখানে পৌঁছাতে পারবে, সেসব কেন্দ্রে আমরা সকালে ব্যালট পাঠাই।
তিনি বলেন, আমরা যতগুলো নির্বাচন ব্যালটে করেছি, ব্যালট এভাবে সকালেই পাঠানো হয়েছে। আমরা জাতীয় নির্বাচনের ক্ষেত্রেও এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিতে পারি। যেগুলোতে সকালে ব্যালট পেপার পাঠানো সম্ভব সেগুলো চিহ্নিত করা এবং যেখানে পাঠানো সম্ভব নয়, সেখানে আমরা বিশেষ ব্যবস্থায় রাতে ব্যালট পেপার পাঠাব। পথে যেন মিসইউজ বা ছিনতাই না হতে পারে, সেটাও খেয়াল রাখব।
পর্যবেক্ষক ইস্যুতে চাপ নেই
নির্বাচন ইস্যুতে দেশি ও আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকের বিষয় নিয়ে কোনো চাপ আছে কি না জানতে চাইলে ইসি আলমগীর বলেন, এ বিষয়ে কোনো চাপ নেই। আর চাপ থাকবে কেন। আমরা প্রথম থেকেই বলছি, বিদেশি পর্যবেক্ষক যত খুশি আসতে পারে। আমাদের পক্ষ থেকে কোনো লিমিটেশন নেই। বিদেশি পর্যবেক্ষকরা আমাদের কাছে আবেদন করলে সেটা আমরা পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দিই। তারা আবার এটা পর্যালোচনা করে দেখে যে, আবেদনকারীরা আসলেই পর্যবেক্ষক কি না, অতীতে পর্যবেক্ষণে সম্পৃক্ত ছিল কি না। তারা মানবপাচারের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকতে পারে অথবা অন্য অন্যায় কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকতে পারে। তারা এগুলো দেখেন। এরপর ভিসা দেওয়া হলে আমাদের পক্ষ থেকে আপত্তি থাকে না।
সিসি ক্যামেরা থাকবে না
ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা বসানোর পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চাইলে এ নির্বাচন কমিশনার বলেন, বিষয়টি আমাদের মধ্যে আলোচনা হয়নি তেমন। ফরমাল কোনো আলোচনা হয়নি। চিন্তাভাবনা নেই। কারণ আপনারা জানেন যে, ৩০০ আসনে যখন ভোট হয়, প্রায় চার লাখ কেন্দ্র থাকে। সেখানে হয়ত বেশ কিছু ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র থাকবে। এতগুলো কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা লাগিয়ে তা দেখা কঠিন। আমরা সেক্ষেত্রে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে বিশেষ ব্যবস্থা করব। মানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বেশি সদস্য নিয়োগ করব। সবগুলো দল যদি অংশগ্রহণ করে সেখানে এমনিতেই একটা ভারসাম্য থাকে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চেয়ে বরং তারাই শৃঙ্খলা রক্ষায় একটা ভূমিকা নেয়। কারণ তারা জানেন যে, নির্বাচনে যদি পরিস্থিতির অবনতি হয় বা খারাপ পরিস্থিতি তৈরি হয় তারাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে।