কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে বিদ্যালয়ের ছাদে পাঁচ ছাত্রীর ধূমপান করছিল। এই দৃশ্য ফোনে ভিডিও ধারণ করেন দুই শিক্ষক।ছাত্রীদের ডেকে অপমান করার পর সেই ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখান তারা। সেই ভয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে জিনিয়া খাতুন নামের এক স্কুলছাত্রী আত্মহত্যা করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সোমবার (৭ আগস্ট) বিকেলে কুমারখালী উপজেলার কয়া ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাড়াদি গ্রামে এই ঘটনা ঘটেছে।
মৃত জিনিয়া কুমারখালী উপজেলার কয়া ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাড়াদি গ্রামের হঠাৎ পাড়ার জিল্লুর শেখের মেয়ে। সে সুলতানপুর মাহাতাবিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণিতে পড়ত।
জিনিয়ার মামা জাহিদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, শিক্ষকরা বকাবকি ও অপমান করায় জিনিয়া গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। শুনেছি ওর ৫ জন বান্ধবী সিগারেট খাচ্ছিল। সেটার ভিডিও ধারণ করে লাল্টু নামে এক শিক্ষক। পরে লাল্টু ও শিউলিসহ কয়েকজন শিক্ষক জিনিয়াসহ কয়েকজন ছাত্রীকে অপমান করে এবং অনলাইনে ভিডিও ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। স্কুল থেকে এসে সে বিকেল ৪টার দিকে নিজ ঘরে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। লাল্টু মাস্টারের চরিত্র ভালো না। সে আমার বোনের মেয়ের সঙ্গে খুবই খারাপ আচরণ করেছে। লাল্টু মাস্টারসহ অভিযুক্ত সবার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
নিহতের স্বজন ও স্থানীয়রা বলেন, জিনিয়ার বান্ধবীদের সিগারেট খাওয়ার ভিডিও মোবাইলে ধারণ করে লাল্টু মাস্টার। এরপর জিনিয়াসহ তার বান্ধবীদের অপমান করে লাল্টু মাস্টারসহ কয়েকজন শিক্ষক। অপমান সইতে না পেরে জিনিয়া আত্মহত্যা করেছে। এ ঘটনায় আরও কয়েকজন ছাত্রী আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে। পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে।
এ বিষয়ে জানাতে অভিযুক্ত শিক্ষকদের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলেও তারা রিসিভ করেননি।
সুলতানপুর মাহাতাবিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রশিদ বলেন, কয়েকজন ছাত্রী স্কুলের ভেতরে সিগারেট খেয়েছিল। এজন্য শিক্ষকরা তাদের বকাবকি করেছে। এরপর ওই ছাত্রী আত্মহত্যা করেছে। বিষয়টা আমরা তদন্ত করে দেখব। কুমারখালী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকিবুল ইসলাম আকিব বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ছাত্রীর মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে রয়েছে।