বৃত্তি প্রক্রিয়ায় বেশিরভাগ শিক্ষার্থী মনোবল হারায় : শিক্ষামন্ত্রী

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দিপু মনি বলেছেন, প্রাথমিকে বৃত্তি থাকবে কী থাকবে না সে বিষয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নেবে। এ বৃত্তি দীর্ঘকাল ধরে ছিল। মাঝখানে বন্ধ ছিল গত বছর আবার চালু হয়। আমি মনে করি বৃত্তি সিস্টেমটি মেধাবী অমেধাবী শিক্ষার্থীদের একটি বিভাজন তৈরি করে। মেধা বৃত্তি নতুন শিক্ষাক্রমের আদর্শের সঙ্গে পুরোপুরি সাংঘর্ষিক। এ বৃত্তির ফলে কিছু শিক্ষার্থী অনুপ্রাণিত হয় কিন্তু বেশিরভাগ শিক্ষার্থীই মনোবল হারায়।

মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে এইচএসসি পরীক্ষার আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভা শেষে ব্রিফিংয় এসব কথা বলেন তিনি।শিক্ষামন্ত্রী বলেন, মাত্র ২০ শতাংশ শিক্ষার্থী মেধা বৃত্তি পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ পায়। তাই, স্কুল, শিক্ষক ও অভিভাবকরা তাদের ওপর মনোযোগ দেন। যা নতুন শিক্ষাক্রমের আদর্শের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। অন্যরা বঞ্চিত হয়।  সে কারণে এ বৃত্তিটা থাকছে না। কিন্তু যারা ভালো করবে, কোন বিষয়ে দক্ষতা দেখাবে মেধার স্বাক্ষর রাখবে তাদের মূল্যায়ন করার নানা উপায় হয়ত প্রাথমিকের আছে। নানাভাবে তাদের পুরস্কৃত করা হবে।মঙ্গলবার প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভা কক্ষে অনুষ্ঠিত এক সভায় প্রাথমিক বৃত্তি না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

এ তথ্য নিশ্চিত করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র জনসংযোগ কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান তুহিন বলেন, বৃত্তি পরীক্ষা না থাকলেও ভিন্ন আঙ্গিকে মূল্যায়ন করে শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দেওয়া হবে। তবে বৃত্তি প্রদানে কী কী মানদণ্ড থাকবে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। এখন পর্যন্ত এটুকুই জানানো হয়েছে।

জানা গেছে, শিক্ষার্থীদের নোট-গাইড আর কোচিং নির্ভর পড়াশুনা বন্ধ করে, যুগোপযোগী শিক্ষা এবং প্রতিনিয়ত ক্লাসেই মূল্যায়নের ব্যবস্থা করতে জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা অনুসারে আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকেই প্রথম, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে চালু হচ্ছে নতুন শিক্ষাক্রম। যা পর্যায়ক্রমে অন্যান্য শ্রেণিতেও বাস্তবায়ন করা হবে। এক্ষেত্রে প্রথাগত পরীক্ষাকে কম গুরুত্ব দিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই ধারাবাহিক মূল্যায়নের ওপর গুরুত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

গত তিন বছর ধরে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা নেওয়া হয়নি। আগামী দিনেও আর এ পরীক্ষা হচ্ছে না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়।

এদিকে জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষাও না নেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়। পিইসি পরীক্ষা বন্ধ হয়ে যাওয়ায়, দীর্ঘ ১৩ বছর পর ২০২২ সালে পরীক্ষামূলকভাবে বৃত্তি পরীক্ষা চালু করা হয়েছিল।

এমন পরিস্থিতিতে, প্রতিযোগিতা বেড়ে যাওয়ায় শিক্ষার্থীরা কোচিংমুখী হয়ে পড়ে। তাদের কোচিং-নির্ভরতা কমানোর লক্ষ্যে শেষ পর্যন্ত প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষাও বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

প্রসঙ্গত, সর্বশেষ বৃত্তি পরীক্ষা নেওয়া হয় ২০০৮ সালে। এরপর ২০০৯ সালে পিইসি পরীক্ষা চালু হয়। এই পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে সর্বোচ্চ নম্বর পাওয়া শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দেওয়া হতো। এরপর পিইসি পরীক্ষা বন্ধ ঘোষণার ১৩ বছর পর গত বছর আবার প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হয়েছিল।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com