দীর্ঘ চার মাস আগে বৃষ্টির ফোটা পড়েছিল ইন্দোনেশিয়ার কারানগানার গ্রাম ও এর আশপাশের অঞ্চলে। এরপর আর বৃষ্টির দেখা নেই। বৃষ্টি না হওয়ায় অঞ্চলটিতে দেখা দিয়েছে ভয়াবহ খরা। আর সেই গ্রামের তামাক চাষীরা নিজেদের শস্যের জন্য হন্য হয়ে খুঁজছেন পানি। তবে পানির উৎস নদীও গেছে শুকিয়ে। উপায়ন্তর না দেখে এখন নদীগর্ভে গর্ত করে পানির সন্ধান করছেন তারা।
ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স বুধবার (৯ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে এ তথ্য।
নদীর বুক চিড়ে খোড়া গর্ত— এক বা দুই ঘণ্টায়— নোনা ও কর্দমাক্ত পানিতে পূর্ণ হয়।
কেন্দ্রীয় জাভা প্রদেশের কারানগানার গ্রামের অসংখ্য বাসিন্দা পরে গর্তের এ পানি নিয়ে যান বাড়িতে। সেগুলো খাওয়া, ধোয়া এবং তাদের শুকিয়ে যাওয়া শস্যের সেচ দেওয়ার জন্য ব্যবহার করেন।
সেই গ্রামের একজন হলেন সুনার্দি। যিনি পানির জন্য এমন কষ্ট করছেন সেই এপ্রিল থেকে। রয়টার্সকে তিনি বলেছেন, ‘এই গ্রামের মানুষ খরার প্রভাব টের পাচ্ছে এপ্রিল থেকে। এরপর থেকে এখানে আর কোনো বৃষ্টি হয়নি। এই গ্রামের কূপগুলো সব শুকিয়ে গেছে। তাই গ্রামবাসী এখন শুধুমাত্র নদীগর্ভ থেকে পানি আনতে পারেন।’
তিনি আরও বলেছেন, ‘এখানকার সব শস্য, যেমন ভুট্টা, সব শুকিয়ে গেছে। তামাক গাছ বেঁচে থাকতে পারে। কিন্তু এগুলো নিজে নিজে বেড়ে ওঠে না। তাই তামাক গাছে আমাদের নদীগর্ভের পানি দিতে হয়।’
সুনার্দির গ্রামের মানুষ জুন মাস থেকে নদীগর্ভ থেকে পানি আনছেন। ওই মাসেই তাদের গ্রামের কূপ শুকিয়ে যায়।
ইন্দোনেশিয়ার আবহাওয়া দপ্তর (বিএমকেজি) জানিয়েছে, এল নিনো আবহাওয়া প্যাটার্নের কারণে এমন ভয়াবহ খরার মুখে পড়েছে দেশ। এল নিনোর কারণে অন্য সাধারণ সময়ের তুলনায় বেশি শুষ্কতা ও বেশি তাপমাত্রা দেখা যায়। আবহাওয়ার এমন ভিন্নতার কারণে পুরো দেশের দুই-তৃতীয়াংশ মানুষ খরার মুখে পড়েছেন।
ইন্দোনেশিয়ার মোট জিডিপির ১৪ শতাংশ আসে কৃষিখাত থেকে। আর দেশের মোট শ্রমিকের চারভাগের তিনভাগই কৃষির সঙ্গে জড়িত।
আবহাওয়া দপ্তরের কর্মকর্তা ত্রিস আদি সুকোকো বলেছেন, এই অঞ্চলে বৃষ্টিপাত অস্বাভাবিক হারে কমে গেছে। তাই গ্রামবাসীর শস্য উৎপাদনের পরিবর্তন আনা উচিত। তবে কৃষকরা বলছেন এখন অনেক দেরি হয়ে গেছে। ফলে এখন যদি নদীও শুকিয়ে যায়— তাহলে যেখানে পানি আছে সেখান থেকে গিয়ে পানি আনতে হবে তাদের।