তামিম ইকবাল ওয়ানডের নেতৃত্ব ছাড়ার পর থেকেই জোর গুঞ্জন, আসন্ন এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপকে সামনে রেখে গুরুদায়িত্ব পেতে যাচ্ছেন সাকিব আল হাসান। পারফরম্যান্স ও অভিজ্ঞতার বিচারে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডেরও (বিসিবি) অটো চয়েজ সাকিব। সম্প্রতি বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনও বলেছেন সাকিবকে অধিনায়ক হিসেবে বেছে নেওয়াটা সহজ বিষয়। এছাড়া অধিনায়কত্ব ইস্যুতে বিসিবির জরুরি সভাতেও পরিচালকদের প্রায় সবাই সাকিবকে অধিনায়ক করার পক্ষে মত দিয়েছেন বলে নিশ্চিত হয়েছে ঢাকা পোস্ট।
তারপরও কেন অধিনায়কের নাম ঘোষণায় দেরি হচ্ছে? আভাস পাওয়া যাচ্ছে, নেতৃত্বভার নিতে কিছু শর্ত জুড়ে দিয়েছেন সাকিব। যা নিয়ে ভাবনা-চিন্তা করছে বোর্ড। আর পুরো বিষয়টা দেখভাল করছেন খোদ বোর্ড প্রধান নাজমুল হাসান পাপন।
ওয়ানডে অধিনায়ক হিসেবে সাকিবের নাম ঘোষণার সিদ্ধান্ত খুব সহজ বিষয় নয়। মূলত ওয়ানডের জন্য অন্য কোনো ফরম্যাটে সাকিব নেতৃত্ব ছাড়তে রাজি কি না সে বিষয়ে তার সঙ্গে কথা বলতে চান বিসিবি সভাপতি। বোর্ড সদস্যরা চান সাকিবকে টেস্টের নেতৃত্ব ছাড়ুক, লিটনকে দায়িত্ব দেওয়া হোক। সাকিবের সঙ্গে কথা বলার আগে বোর্ড সভাপতি কোচ হাথুরুসিংহের সঙ্গে বসবে। এ বিষয়ে হাথুরুর মতামতও গুরুত্বপূর্ণ মনে করা হচ্ছে।
বোর্ড পরিচালকদের জরুরি সভা শেষে ক্রিকেট অপারেশন্স চেয়ারম্যান জালাল ইউনুসও জানিয়েছিলেন,‘এই মুহূর্তে সাকিবই সেরা অপশন। যে কারণে সাকিবের সুযোগই বেশি। তবুও যদি-কিন্তু রয়েছে। কেননা কত সময়ের জন্য তাকে দিচ্ছে এবং আরও কিছু বিষয়। তবে অধিকাংশই সাকিবকে চাচ্ছেন। তালিকায় যে তিনজন রয়েছেন তাদের মধ্যে সাকিবের পাল্লাই ভারী। এখন সবকিছু আলাপ-আলোচনার মধ্যে দিয়েই হবে।’অধিনায়ক হিসেবে প্রস্তাবনায় লিটন দাস ও মেহেদী হাসান মিরাজের নামও এসেছিল। কিন্তু বিশ্বকাপের মতো এমন হাই-প্রোফাইল টুর্নামেন্টে তাদের দায়িত্ব দেওয়াটা হিতে-বিপরীত হতে পারে। এ কারণে বোর্ড সদস্যরা চায় সাকিবের ছায়ায় থেকেই তারা পূর্ণ নেতৃত্ব গ্রহণের জন্য পরিণত হয়ে উঠুক।
তারপরও ওয়ানডে অধিনায়ক হিসেবে সাকিব আল হাসানের নাম ঘোষণার বিষয়টি ঝুলে আছে ‘যদি কিন্তুর’ মধ্যে। কয়েক বছর আগে সাকিব নিজেই ফরম্যাট অনুযায়ী আলাদা অধিনায়ক করার পরামর্শ দিয়েছিলেন বোর্ডকে। তার মতে আধুনিক ক্রিকেটে একজনের পক্ষে এক সঙ্গে সাদা ও লাল বলের ক্রিকেটে নেতৃত্ব দেওয়া কঠিন।
বর্তমানে টি-টোয়েন্টি এবং টেস্ট দলের নেতৃত্বে আছেন সাকিব। তাই তাকে সব ফরম্যাটের ক্রিকেটের দায়িত্ব দেওয়া উচিত হবে কি না সেটিই বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। সাকিবকে অধিনায়ক করার প্রশ্নে বোর্ড পরিচালকদের ভোটাভুটিতেও এই প্রশ্নটি তুলেছেন কেউ কেউ। এ জন্য বিষয়টি নিয়ে সাকিবের সঙ্গে দীর্ঘ সময় নিয়ে আলোচনার ওপর জোর দিয়েছেন পরিচালকরা। বিষয়টির সমাধানের জন্য সাকিবের সঙ্গে কথা বলার জন্য বোর্ড প্রধানকে অনুরোধ করেছে পরিচালকরা।
জালাল ইউনুস বলেছেন, ১২ আগস্টের মধ্যেই এশিয়া কাপের দল ঘোষণা করতে হবে বোর্ডকে। যে কারণে দীর্ঘ মেয়াদি অধিনায়ক নিয়োগের ইচ্ছা থাকলেও এর পরিবর্তে শুধু এশিয়া কাপের জন্য অধিনায়ক ঘোষণা করবে বোর্ড।ক্রিকেটের বাইরেও তুমুল ব্যস্ততা রয়েছে সাকিবের। বিজ্ঞাপন, নিজের ব্যবসা ছাড়াও আরো বেশ কিছু বিষয়ে তাকে ব্যস্ত থাকতে হয়। অন্যদিকে, তার পরিবার যুক্তরাস্ট্রে বসবাস করে। সুতরাং তাদের সময় দিতে নিয়মিত সেখানে উড়াল দিতে হয় সাকিবকে। ব্যস্ততার কারণে বিগত কয়েক বছরে সাকিব বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ খেলতে পারেননি।