তিস্তার পানি বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপরে, আতঙ্কে নদীপাড়ের মানুষ

উজানের পাহাড়ি ঢল ও কয়েক দিনের টানা বর্ষণে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে রংপুর, নীলফামারী ও লালমনিরহাটের তিস্তা তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের অনেক বসতবাড়িতে পানি উঠেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বন্যা ও ভাঙন আতঙ্কে দিন পার করছেন নদীপাড়ের বাসিন্দারা।

আজ (সোমবার) সকাল ৬টায় তিস্তা ব্যারেজের ডালিয়া পয়েন্টে পানিপ্রবাহের উচ্চতা রেকর্ড করা হয়েছে ৫২ মিটার ৩৫ সেন্টিমিটার। অর্থাৎ বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার (বিপৎসীমা ৫২ মিটার ১৫ সেন্টিমিটার) ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি পরিমাপক নূরুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, কয়েকদিন থেকে তিস্তার পানি বাড়া-কমার মধ্যে রয়েছে। রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও আজ সকাল ৬টা থেকে পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি আরও বাড়ার সম্ভবনা রয়েছে।  খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রংপুর গংগাচড়া উপজেলার লক্ষ্মীটারী, নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার কালিগঞ্জ, ঝাড়সিংহেশ্বর, খগারচর, জুয়ার চর, বাংলাপাড়া, উত্তর খড়িবাড়ী, বাইশপুকুর ও জলঢাকা উপজেলার ফরেস্টের চর, ভাবনচুর, ডাউয়াবাড়ী, লালমনিরহাটের পাটগ্রামের দহগ্রাম, হাতীবান্ধার গড্ডিমারী, দোয়ানী, ফকিরপাড়া, সানিয়াজান ইউনিয়নের নিজ শেখ সুন্দর, বাঘের চর, সিঙ্গামারি ইউনিয়নের ধুবনী, সিন্দুর্না, পাটিকাপাড়া, ডাউয়াবাড়ি, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, শৈইলমারী, নোহালী, চর বৈরাতি, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, পলাশী ও সদর উপজেলার ফলিমারীর চর খুনিয়াগাছ, রাজপুর এবং গোকুণ্ডা ইউনিয়নের তিস্তা নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করতে শুরু করেছে।

ডিমলা উপজেলার ছোটখাতা গ্রামের আফজাল হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, নদীর পানি বৃদ্ধি ফলে বাড়ি ঘরে পানি প্রবেশ করেছে। গরু- ছাগল, হাঁস-মুরগী ও ছোট বাচ্চাদের নিয়ে বিপদে আছি।

খালিশ চাপানী ইউনিয়নের মুন্সিপাড়া গ্রামের শফিকুল ইসলাম বলেন, নদীর পানি বেড়েছে অনেক। ঘরে পানি ঢুকে থাকার মতো অবস্থা নাই। রাতে ঘুমাতে পারিনি।

একই এলাকার সামছুল হক ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমাদের রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে, আমন বীজতলা ও ধান ক্ষেত পানিতে ডুবে আছে।ডিমলা উপজেলার খালিশা চাপানি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শহীদুজ্জামান সরকার বলেন, চরাঞ্চলের মানুষকে নিরাপদে সরে যেতে বলেছি। রাতে পানি বেড়ে ভয়াবহ বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। পানিবন্দিদের নিরাপদ আশ্রয়ে নিতে কাজ করছি আমরা।

ডিমলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বেলায়েত হোসেন বলেন, পানি বন্দি মানুষদের নৌকায় নিরাপদ আশ্রয়ে নিতে কাজ করছেন সংশ্লিষ্ট চরাঞ্চলের ইউপি চেয়ারম্যান, মেম্বার ও গ্রাম পুলিশ।

ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আসফাউদ্দৌলা ঢাকা পোস্টকে বলেন, ব্যারেজের ৪৪টি গেট খুলে দিয়ে পানি নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। কোথাও কোনো সমস্যা হলে পানি উন্নয়ন বোর্ড সেখানে কাজ করছে।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com