নিজ কার্যালয়ে ঘুষের ১০ লাখ টাকাসহ গ্রেপ্তার রাজশাহীর উপ-কর কমিশনার মহিবুল ইসলাম ভূঁইয়াকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিনের বিরুদ্ধে দুদকের আবেদনের শুনানি দুই মাস স্ট্যান্ডওভার (মুলতবি) রেখেছেন আপিল বিভাগ। ফলে তার জামিন আরও দুই মাস স্থগিত থাকছে।
সোমবার (১৪ আগস্ট) প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বে আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। মহিবুল ইসলামের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ছিলেন মুনসুরুল হক চৌধুরী।
পরে খুরশীদ আলম খান জানান, গত জুলাই মাসে মহিবুল ইসলামকে হাইকোর্ট জামিন দেন। তার বিরুদ্ধে দুদক চেম্বার আদালতে আবেদন জানালে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিত করেন। এখন আবেদনটি সিপি হিসেবে নিয়মিত বেঞ্চে এলে আজ শুনানি হয়। শুনানি শেষে সিপিটি দুই মাসের জন্য স্ট্যান্ডওভার রেখেছেন আপিল বিভাগ। অর্থাৎ এই দুই মাস তার জামিন স্থগিত থাকছে।
এর আগে গত ১৮ এপ্রিল রাজশাহী মুখ্য মহানগর দায়রা জজ আদালতে (সিএমএম) তাকে হাজির করা হয়। ওই দিন আসামিপক্ষের আইনজীবী জামিনের আবেদন জানান। তবে উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালতের বিচারক আল আসাদ আশিকুজ্জামান জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন এবং মহিবুলকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
গত ৪ এপ্রিল দুপুরে রাজশাহী কর ভবনে অভিযান চালিয়ে ঘুষের ১০ লাখ টাকাসহ রাজশাহী কর অঞ্চলের (সার্কেল-১৩) উপ-কর কমিশনার মহিবুল ইসলাম ভূঁইয়াকে গ্রেপ্তার করে দুদকের একটি অভিযানিক দল। এ ঘটনায় দুদক রাজশাহী কার্যালয়ের উপ-পরিচালক (ডিডি) আমিনুল ইসলাম বাদী ১৬১ ধারাসহ দুর্নীতি বিরোধী আইনে মহিবুলের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
রাজশাহীর উপ-কর কমিশনার মহিবুল ইসলাম ভূঁইয়াকে এরই মধ্যে সাময়িক বরখাস্ত করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। গত ৬ এপ্রিল মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের কর-১ শাখার সিনিয়র সহকারী সচিব নুসরাত জাহান নিসু স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। ওই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, সরকারি চাকরি বিধি ২০১৮ এর ৩৯ (২) ধারা অনুযায়ী ৪ এপ্রিল নিজ কার্যালয় থেকে দুর্নীতি দমন কমিশন কর্তৃক গ্রেপ্তারের তারিখ থেকে মুহিবুল ইসলাম ভূঁইয়াকে রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।
এর আগে গত ৪ এপ্রিল মঙ্গলবার দুপুরে অভিযান চালিয়ে রাজশাহী কর অঞ্চলের সার্কেল-১৩ (বৈতনিক) এর উপ-কর কমিশনার মুহিবুল ইসলাম ভূইয়াকে গ্রেপ্তার করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।রাজশাহী নগরীর মাদারল্যান্ড ইনফার্টিলিটি সেন্টার ও হাসপাতালের মালিক ডা. ফাতেমা সিদ্দিকার পাঁচ বছরের ব্যাংকে লেনদেনের বিষয়ে কর কর্মকর্তা মুহিবুল ইসলাম ভূঁইয়া আপত্তি তোলেন। বিষয়টি নিষ্পত্তি করতে গেলে তিনি ডা. ফাতেমার কাছে ৬০ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন। পরে তা ৫০ লাখ টাকায় রফা হয়। বিষয়টি জানিয়ে ফাতেমা সিদ্দিকা গত ২৯ মার্চ দুদকের প্রধান কার্যালয়ে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। এই অভিযোগ নিয়ে দুদকের রাজশাহী জেলা ও বিভাগীয় কার্যালয়ে যৌথভাবে কাজ করছিল। তারা উপ-কর কমিশনার মহিবুল ইসলাম ভূঁইয়ার ওপর নজরদারি করছিলেন।