ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপসের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগে করা আবেদন শুনানির জন্য কার্যতালিকার ১২১৮ নম্বর থেকে ২০০ ক্রমিকে এগিয়ে এনেছেন আপিল বিভাগ।
আবেদনকারী আইনজীবীদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার (১৪ আগস্ট) প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ এ আদেশ দেন।
আদালতে ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপসের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগে দায়ের করা আবেদনটি দ্রুত শুনানির আবেদন করেন অ্যাডভোকেট মোহসীন রশিদ। এসময় বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে গত ৫ জুন ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপসের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার আবেদনের শুনানির জন্য ১৪ আগস্ট দিন ধার্য করেন চেম্বার আদালত। আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম এ দিন ধার্য করেন।
ওই দিন আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন বিএনপি সমর্থিত অ্যাডহক কমিটির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মহসিন রশিদ। সঙ্গে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী অ্যাডভোকেট এ জে মোহাম্মদ আলী, অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল, মামলার বাদী অ্যাডভোকেট শাহ আহমদ বাদল, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম সজল, অ্যাডভোকেট মামুন মাহবুব প্রমুখ। তাপসের পক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, সুপ্রিম কোর্ট বার সভাপতি অ্যাডভোকেট মোমতাজ উদ্দিন ফকির, সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুন নুর দুলালসহ শতাধিক আইনজীবী।
এর আগে গত ৪ জুন ‘একজন চিফ জাস্টিসকেও নামিয়ে দিয়েছিলাম’ এই বক্তব্যকে আদালত অবমাননা উল্লেখ করে ঢাকা দক্ষিণের মেয়র ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপসের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার আবেদন দায়ের করা হয়। আবেদনে আদালত অবমাননামূলক বক্তব্যের কারণে মেয়র তাপসকে আদালতে তলব করার নির্দেশনা চাওয়া হয়।
আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় অ্যাডভোকেট শাহ আহমদ বাদল এ আবেদন করেন। তিনি সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির বিএনপি সমর্থিত অ্যাডহক কমিটির আহ্বায়ক।
গত ২৪ মে ‘একজন চিফ জাস্টিসকেও নামিয়ে দিয়েছিলাম’– ঢাকা দক্ষিণের মেয়র ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপসের এই বক্তব্য আপিল বিভাগের নজরে আনেন সংবিধানের অন্যতম প্রণেতা ব্যারিস্টার এম আমীর উল ইসলাম। এসময় তার সঙ্গে বিএনপিপন্থি শীর্ষ আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন।
‘একজন চিফ জাস্টিসকেও নামিয়ে দিয়েছিলাম’ শিরোনামে একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদনের একাংশ আপিল বিভাগে পড়ে শোনান ব্যারিস্টার এম আমীর উল ইসলাম। তিনি বলেন, মেয়র তাপস বলেছেন, মনটা চায় আবার ইস্তফা দিয়ে ফিরে আসি। যেখানে মুগুর দেওয়ার সেটাও জানি। একজন চিফ জাস্টিসকেও নামিয়ে দিয়েছিলাম। মশিউজ্জামান (বারের গত নির্বাচনের সাব কমিটির প্রধান)কে আমরা মনে করতাম, ওরে বাবা, কী জানি ফেরেশতা আসছে। সবচেয়ে বড় চোর হলো মশিউজ্জামান। যেসব সুশীল আমাদের বুদ্ধি দিতে যাবেন সেই সুশীলদের আমরা বস্তায় ভরে বুড়িগঙ্গা নদীর কালো পানিতে ছেড়ে দেব। বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস। ব্যারিস্টার আমীর বলেন, তার এই বক্তব্য আনফরচুনেটলি। এ পর্যায়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, আমরা বক্তব্য ভালো করে পড়ে দেখি। তারপর দেখব।
আইনজীবী শাহ আহমদ বাদল বলেন, আপিল বিভাগ থেকে কোনো সিদ্ধান্ত না আসায় আমরা তাপসের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার আবেদন করেছি।