২৭ জন নিহতের পর লিবিয়ার রাজধানীতে থামল লড়াই

উত্তর আফ্রিকার দেশ লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপোলিতে ভয়াবহ সংঘর্ষে ২৭ জন নিহত হয়েছেন। দেশটির একটি সশস্ত্র উপদলের প্রভাবশালী কমান্ডার প্রতিদ্বন্দ্বী বাহিনীর হাতে আটক হওয়ার পর এই সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়েছিল।

অবশ্য সেই কমান্ডারকে মুক্তি দেওয়ার পর উত্তর আফ্রিকার এই দেশটির রাজধানী শান্ত হয়। তবে দু’টি শক্তিশালী সশস্ত্র দলের এই সংঘাত ছিল চলতি বছর এই দেশটিতে সবচেয়ে খারাপ সহিংসতার ঘটনা। বুধবার (১৬ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সশস্ত্র উপদলের প্রভাবশালী এক কমান্ডারকে আটকের জেরে মঙ্গলবার লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপোলিতে দু’টি শক্তিশালী সশস্ত্র দলের মধ্যে লড়াই বেঁধে যায় এবং এতে ২৭ জন নিহত হন। তবে এক পক্ষ আটককৃত ওই কমান্ডারকে মুক্তি দেওয়ার পরে সংঘাত বন্ধ হয়।

ত্রিপোলির একটি স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, সহিংসতায় ২৭ জন নিহত এবং ১০০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। তবে হতাহতের এই সংখ্যায় যোদ্ধা এবং বেসামরিক নাগরিক; উভয়ই অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন কিনা তা উল্লেখ করা হয়নি।

প্রতিদ্বন্দ্বী বাহিনীর হাতে আটক হওয়া ওই সেনা কমান্ডারের নাম মাহমুদ হামজা। তিনি ৪৪৪ ব্রিগেডের প্রধান এবং এই ব্রিগেডটি ত্রিপোলির বেশিরভাগ নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। স্থানীয় মিডিয়া এবং ৪৪৪ ব্রিগেডের একটি সূত্রের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছিল, মাহমুদ হামজাকে সোমবার মিটিগা বিমানবন্দরে আটক করে স্পেশাল ডিটারেন্স ফোর্স নামে একটি বাহিনী।

রয়টার্স বলছে, স্পেশাল ডিটারেন্স ফোর্স এবং ৪৪৪ ব্রিগেড হচ্ছে ত্রিপোলির সবচেয়ে শক্তিশালী দু’টি সামরিক বাহিনী এবং মাহমুদ হামজাকে আটকের পর সোমবার শেষরাত থেকে এই দু’টি বাহিনীর মধ্যে ব্যাপক লড়াই বেঁধে যায়।

স্পেশাল ডিটারেন্স ফোর্স বছরের পর বছর ধরে ত্রিপোলির অন্যতম প্রধান সশস্ত্র দল হিসেবে নিজেদের অবস্থান ধরে রেখেছে। এছাড়া মিটিগা বিমানবন্দর এবং আশপাশের উপকূলীয় এলাকা এই দলটি নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।

অন্যদিকে ৪৪৪ ব্রিগেড রাজধানী শহরসহ এবং ত্রিপোলির দক্ষিণে বিশাল এলাকা নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। হামজা মাহমুদ বর্তমানে ৪৪৪ ব্রিগেডের কমান্ডার হলেও অতীতে তিনি স্পেশাল ডিটারেন্স ফোর্সের অফিসার ছিলেন। এর আগে অন্যান্য সশস্ত্র উপদলের মধ্যে উত্তেজনা অবসানের মধ্যস্থতায় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্বও ছিলেন তিনি।

রয়টার্সের একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেছেন, ত্রিপোলির আরেকটি উল্লেখযোগ্য সশস্ত্র দল স্টেবিলাইজেশন সাপোর্ট অ্যাপারাস মঙ্গলবারের এই রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়িত হয়নি।

উল্লেখ্য, ২০১১ সালে মার্কিন নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটোর সমর্থনপুষ্ট এক গণঅভ্যূত্থানে লিবিয়ার দীর্ঘদিনের শাসক মুয়াম্মার গাদ্দাফি উৎখাত হন এবং তাকে হত্যা করা হয়। মূলত গাদ্দাফির পতনের পর থেকেই উত্তর আফ্রিকার দেশটি চরম রাজনৈতিক সংকটের মুখে পড়ে।

আর সেই সংকট এখনও অব্যাহত রয়েছে।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com