কাঁদতে কাঁদতে পরীক্ষা দিলেন শান্তা

ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলায় বাবার মরদেহ বাড়িতে রেখে শান্তা ইসলাম (২০) নামে এক শিক্ষার্থী এইচএসসি পরীক্ষা দিয়েছেন। বাড়ির বাইরে মাইকে জানাজা ও দাফনের সময়ের ঘোষণা দেওয়া হচ্ছে। এ অবস্থায় বাবার মরদেহ বাড়িতে রেখে  পরীক্ষায় অংশ নেন শান্তা ইসলাম। পরীক্ষা শেষে শান্তা বাড়ি ফিরলে বাবার জানাজা ও দাফন সম্পন্ন হয়। 

এলাকাবাসী জানায়, দুই ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে শান্তা সবার ছোট। দীর্ঘদিন ধরে তার বাবা মোহাম্মদ শেখ (৬১) কিডনিজনিত রোগে ভুগে আজ সকাল ৮টার দিকে বাবা মারা যান। বাবার মরদেহ বাড়িতে রেখেই সকাল সাড়ে ৯টার দিকে এক আত্মীয়ের সঙ্গে কেন্দ্রে যায় শান্তা।

শান্তা ইসলাম আলফাডাঙ্গা আদর্শ ডিগ্রি কলেজের মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থী। আজ তার ইংরেজি প্রথম পত্রের পরীক্ষা ছিল। উপজেলার টগরবন্দ ইউনিয়নের পানাইল গ্রামে তার বাড়ি। তার পরীক্ষা কেন্দ্র আলফাডাঙ্গা সরকারি ডিগ্রি কলেজে।

শান্তার পরিবার সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার টগরবন্দ ইউনিয়নের পানাইল এলাকার বাসিন্দা মাহামুদ শেখ মঙ্গলবার সকাল ৮টার দিকে নিজ বাড়িতে কিডনিজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। তার মৃত্যুতে বাড়িজুড়ে কান্নার রোল পড়ে যায়। বাবার মৃত্যুতে ভেঙে পড়লেও পরীক্ষার কেন্দ্রে যান মেয়ে শান্তা। বাবাকে হারিয়ে কাঁদতে কাঁদতে পরীক্ষা দেন তিনি।

আলফাডাঙ্গা আদর্শ ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ এম এম মজিবুর রহমান বলেন, কেন্দ্র সচিবের মাধ্যমে মেয়েটির খোঁজখবর নেওয়া হয়েছে। সদ্য বাবাকে হারানো সন্তানের জন্য খুবই কষ্টের বিষয়। তারপরও শান্তা ইসলাম তার ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে পরীক্ষায় বসেছে এবং ঠিকমতো পরীক্ষা শেষ করেছে।আলফাডাঙ্গা সরকারি ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্রে দায়িত্বরত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রজত বিশ্বাস বলেন, শান্তা ইসলাম সহপাঠীদের সঙ্গে বসে পরীক্ষা দিয়েছে। বাবা হারানোর শোক যে কোনো সন্তানের জন্য কষ্টের। সে সবার সঙ্গে স্বাভাবিকভাবেই পরীক্ষা দিয়েছে। তবে তাকে শোকাহত ও কান্না করতে দেখেছি। সবার সঙ্গে পরীক্ষা দিলে তার ভালো লাগবে ভেবে বিশেষ কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com