সিদ্ধ চাল রপ্তানিতে বিধিনিষেধ আরোপ করছে ভারত?

বিশ্ববাজারে ভারতের সিদ্ধ চাল রপ্তানির ওপর বিধি-নিষেধ আরোপের গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গ এক প্রতিবেদনে ভারত সিদ্ধ চাল রপ্তানিতে বিধিনিষেধ আরোপের চিন্তাভাবনা করছে বলে জানানো পর এই গুঞ্জন জোরাল হয়েছে। তবে মঙ্গলবার দেশটির খাদ্যসচিব সঞ্জীব চোপড়া বলেছেন, এই মুহূর্তে অ-বাসমতি সিদ্ধ চাল রপ্তানির ওপর কোনও বিধিনিষেধ আরোপের কথা ভাবছে না ভারত।

গত মাসে বিশ্বজুড়ে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত অ-বাসমতি সাদা চালের রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে ভারত। দেশটির এই সিদ্ধান্ত অনেকটা আকস্মিকভাবে আসায় অনেক ক্রেতা অবাক হয়ে যায়। এর আগে, গত বছরও ভাঙা চালের রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল বিশ্বের অন্যতম চাল উৎপাদনকারী এই দেশ।

ভারত সিদ্ধ চালের রপ্তানির সর্বনিম্ন দর চালু অথবা রপ্তানি কর আরোপ করার কথা ভাবছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে দেশটির খাদ্যসচিব সঞ্জীব চোপড়া বলেছেন, এখন পর্যন্ত সিদ্ধ চালের রপ্তানি সীমিত করার কোনও প্রস্তাব নেই।

ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, বিশ্ববাজারে ভারতের মোট চাল রপ্তানির প্রায় এক তৃতীয়াংশই সিদ্ধ চাল। বর্তমানে দেশটির সিদ্ধ চাল রপ্তানির ওপর কোনও বিধিনিষেধ নেই। আগস্টের শুরুতে ভারতের চালের মজুত লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় প্রায় তিনগুণ বেশি।

দেশটির চাল রপ্তানিকারক কোম্পানিগুলোর সংগঠন ইন্ডিয়ান রাইস এক্সপোর্টারস ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট প্রেম গর্গ বলেছেন, সরকারের কাছে চালের উদ্বৃত্ত মজুত রয়েছে। খোলা বাজারেও উদ্বৃত্ত মজুত আছে এবং নতুন ফসল দুই মাসের মধ্যে আসতে শুরু করবে।

ভারতীয় কৃষকরা সাধারণত জুন এবং জুলাইয়ে বর্ষা মৌসুমে ধানের চারা রোপণ শুরু করেন। এই কৃষকরা আগামী অক্টোবর থেকে নতুন মৌসুমের ফসল কাটা শুরু করবেন। তারা বলছেন, বর্তমানে চালের সরবরাহ স্বাভাবিকের চেয়েও বেশি আছে।

আগামী ১ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া বিপণন বছরে দেশটির সরকার কৃষকদের কাছ থেকে ৫ কোটি ২১ লাখ টন নতুন মৌসুমের চাল কেনার পরিকল্পনা করেছে; যা এক বছর আগের ৪ কোটি ৯৫ লাখ টনের তুলনায় বেশি বলে জানিয়েছেন চোপড়া।

তিনি আরও বলেন, কূটনৈতিক চুক্তির মাধ্যমে রাশিয়া থেকে গম আমদানির কোনও প্রস্তাবও এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। গত সপ্তাহে ভারতের সরকারি সূত্র রয়টার্সকে বলেছিল, বিশ্বজুড়ে মূল্য বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে মূল্যছাড়ে রাশিয়ার কাছ থেকে গম আমদানির আলোচনা করছে ভারত।

আগামী বছর রাজ্য ও জাতীয় নির্বাচনের আগে গমের সরবরাহ বৃদ্ধি এবং খাদ্য মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বিরল এই পদক্ষেপের বিষয়ে ভারত আলোচনা করছে বলে জানা যায়।

সরবরাহ সীমিত হয়ে পড়ায় ভারতে পাইকারি বাজারে গমের দাম গত দুই মাসের মধ্যে প্রায় ১০ শতাংশ বেড়ে সাত মাসের সর্বোচ্চে পৌঁছেছে। গত ১ আগস্টে দেশটির সরকারি গুদামে গমের মজুতের পরিমাণ ছিল ২ কোটি ৮৩ লাখ টন; যা ১০ বছরের গড়ের তুলনায় ২০ শতাংশ কম।

এছাড়াও চোপড়া বলেছেন, ভারতের সরকার কারখানাগুলোকে আগস্টে অতিরিক্ত ২ লাখ টন চিনি বিক্রি করার অনুমতি দেবে। এর আগে চলতি মাসে মিলগুলোকে ২৩ লাখ ৩০ টন চিনি খোলা বাজারে বিক্রি করার অনুমতি দিয়েছে দেশটির সরকার।

প্রতি মাসে উৎপাদনকারী কারখানাগুলো কী পরিমাণ চিনি খোলা বাজারে বিক্রি করতে পারবে, তা নির্ধারণ করে দেয় দেশটির সরকার।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com