সরকারি চাকরির আবেদনে দিতে হবে ভ্যাট

সরকারের মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তর, পরিদপ্তর, দপ্তর এবং স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে চাকরির আবেদন ফি বাড়ানো হয়েছে। এবার পরীক্ষার ফি সার্ভিস চার্জের (টেলিটক বাংলাদেশের কমিশন) ওপর ভ্যাট যোগ করে পরীক্ষার ফি নির্ধারণ করেছে সরকার। 

সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ থেকে এ বিষয়ে পরিপত্র জারি করা হয়েছে। এতে সই করেছেন উপসচিব মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান। অবিলম্বে এ আদেশ কার্যকর হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

পরিপত্র অনুযায়ী, টেলিকম বাংলাদেশ লিমিটেডের মাধ্যমে অনলাইনে আবেদন ও পরীক্ষার ফি নেওয়া হবে। পরীক্ষার ফি বাবদ সংগ্রহ করা অর্থের সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ কমিশন হিসেবে টেলিকম বাংলাদেশকে দিতে হবে। এছাড়া কমিশন হিসেবে পাওয়া অর্থের ১৫ শতাংশ ভ্যাট হিসেবে আদায় করা হবে।

এখন থেকে নবম গ্রেডে চাকরিপ্রত্যাশীদের আবেদন ফি হবে ৬০০ টাকা। এর সঙ্গে টেলিকম বাংলাদেশের সার্ভিস চার্জ ১০ শতাংশ বা ৬০ টাকা দিতে হবে। ৬০ টাকার ওপর ১৫ শতাংশ বা ৯ টাকা ভ্যাট দিতে হবে। অর্থাৎ নবম গ্রেডে চাকরিপ্রত্যাশীদের আবেদন করতে মোট ৬৬৯ টাকা খরচ করতে হবে।

একইভাবে দশম গ্রেডে চাকরিপ্রত্যাশীদের আবেদন ফি ৫০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর সঙ্গে ৫০ টাকা সার্ভিস চার্জ এবং ৭ টাকা ৫০ পয়সা ভ্যাট দিতে হবে। অর্থাৎ দশম গ্রেডে চাকরিপ্রত্যাশীদের আবেদন করতে মোট ৫৫৭ টাকা ৫০ পয়সা দিতে হবে।

১১ ও ১২তম গ্রেডে চাকরিপ্রত্যাশীদের আবেদন ফি ধরা হয়েছে ৩০০ টাকা। এর সঙ্গে ৩০ টাকা সার্ভিস চার্জ ও ৪ টাকা ৫০ পয়সা ভ্যাট দিয়ে আবেদনকারীকে মোট ৩৩৪ টাকা ৫০ পয়সা গুনতে হবে। ১৩ থেকে ১৬তম গ্রেডে চাকরিপ্রত্যাশীদের আবেদন ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ২০০ টাকা। এর সঙ্গে সার্ভিস চার্জ ২০ টাকা এবং ভ্যাট ৩ টাকা যোগ করে আবেদনকারীকে মোট ২২৩ টাকা খরচ করতে হবে।

আর ১৭ থেকে ২০তম গ্রেডে চাকরিপ্রত্যাশীদের আবেদন ফি ১০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর সঙ্গে ১০ টাকা সার্ভিস চার্জ এবং ১ টাকা ৫০ পয়সা ভ্যাট যোগ করে আবেদনকারীকে ১১১ টাকা ৫০ পয়সা দিতে হবে।

পরিপত্রে কয়েকটি শর্তের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে:

>> টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেডের মাধ্যমে অনলাইনে আবেদন ও পরীক্ষা ফি দেওয়া যাবে। পরীক্ষা ফি বাবদ সংগৃহীত অর্থের সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ কমিশন হিসেবে টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেডকে দেওয়া হবে। কমিশন হিসেবে পাওয়া অর্থের ১৫ শতাংশ ভ্যাট হিসাবে আদায় করা যাবে।

>> টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেড পরীক্ষা ফি বাবদ অর্থ নেওয়ার পরবর্তী তিন কার্যদিবসের মধ্যে ব্যাংক চেকের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে জমা দেওয়ার পর ওই প্রতিষ্ঠান অবিলম্বে চালানের মাধ্যমে সরকারি কোষাগারে জমা করবে। তবে স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে ওই অর্থ নিজস্ব ব্যাংক হিসাবে জমা করতে পারবে।

>> অনলাইন আবেদন না নিলে পরীক্ষার মাশুল বাবদ অর্থ চালানের মাধ্যমে দিতে হবে। তবে স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলো প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে ব্যাংক ড্রাফট/পে অর্ডারে এ অর্থ নিতে পারবে।

>> পরীক্ষা ফি বাবদ আদায় করা অর্থ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ১৩ ডিজিট প্রাতিষ্ঠানিক কোড এবং ৭ ডিজিট নতুন অর্থনৈতিক কোড ১৪২২৩২৬ এ অটোমেটেড চালানে সরকারি কোষাগারে জমা করতে হবে।

>> কোন প্রতিষ্ঠান ম্যানুয়াল চালানে (টিআর ফরম) পরীক্ষা ফি জমা করতে চাইলে ১- প্রাতিষ্ঠানিক কোড (চার অঙ্কবিশিষ্ট) পরিচালনা কোড (চার অঙ্কবিশিষ্ট)- অর্থনৈতিক কোড (২০৩১) এ জমা করতে হবে।

এ পরিপত্রের মাধ্যমে ২০২২ সালের ২২ সেপ্টেম্বর এ বিষয়ে জারি করা আরেকটি পরিপত্র বাতিল করা হয়েছে। গত বছরের ২২ সেপ্টেম্বর জারি করা পরিপত্রে নবম গ্রেডে চাকরিপ্রত্যাশীদের আবেদন ফি ৬০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। যা আগে ছিল ৫০০ টাকা।

দশম গ্রেডে চাকরিপ্রত্যাশীদের আবেদন ফি আগের মতো ৫০০ টাকা রাখা হয়। তবে, ১১ ও ১২তম গ্রেডে চাকরিপ্রত্যাশীদের আবেদন ফি ধরা হয় ৩০০ টাকা। আগে গ্রেড দুটির চাকরির আবেদন ফি নির্ধারণ করা ছিল না।

এছাড়া ১৩ থেকে ১৬তম গ্রেডে চাকরিপ্রত্যাশীদের আবেদন ফি বাড়িয়ে দ্বিগুণ করা হয়। ১৩ থেকে ১৬ তম গ্রেডে চাকরিপ্রত্যাশীদের আবেদন ফি ১০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়।

আর ১৭ থেকে ২০তম গ্রেডের চাকরিপ্রত্যাশীদের আবেদন ফি ৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১০০ টাকা করা হয়। সে সময় আবেদন ফির সঙ্গে টেলিটক বাংলাদেশের কমিশন বাবদ ১০ শতাংশ সার্ভিস চার্জ রাখা হয়। তবে এ কমিশনের ওপর কোনো ভ্যাট নির্ধারণ ছিল না। এখন নতুন করে কমিশনের ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট যোগ করা হলো।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com