বিচারহীনতা ও ক্ষমতাকেন্দ্রিক রাজনৈতিক বলয় অপরাধ প্রবণতাকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। ধর্ষণের মামলায় ৯৭ শতাংশেরই কোনো সাজা হয় না। ফলে অপরাধী আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠে। অর্থ ও ক্ষমতার বলয়ে থাকলে খুন-ধর্ষণ যেকোনো অপরাধ করে পার পেয়ে যায়, এই হচ্ছে বাস্তবতা।
শুক্রবার (২৫ আগস্ট) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস (ইয়াসমিন হত্যা দিবস) উপলক্ষ্যে সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম আয়োজিত নারী সমাবেশ ও মিছিলে বক্তারা এসব কথা বলেন।
নেতারা বলেন, ইয়াসমিনের ওপর সংগঠিত বর্বরোচিত ঘটনার পর কেটে গেছে ২৮ বছর। নারী নির্যাতনের সংখ্যা, ধরন ও তীব্রতা বেড়েছে। কিন্তু নিরাপত্তা নিশ্চিত করার সরকারি উদ্যোগ আরও কমে গেছে। সরকারি-বেসরকারি তথ্য বলছে, পাঁচ বছর আগের তুলনায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে এখন মাসে গড়ে ৩৫০টি মামলা বেড়েছে। বিদ্বেষমূলক মন্তব্য, প্রতারণা, যৌন হয়রানি ও নির্যাতনের আরেকটি বড় মাধ্যম হয়ে উঠেছে অনলাইন প্লাটফর্ম। অন্যদিকে নারী নির্যাতন প্রতিরোধ কার্যক্রমে মন্ত্রণালয়ের বাজেট গত ছয় বছরের মধ্যে এখন সবচেয়ে কম। এসময়ে বাজেট কমেছে ৬৩ শতাংশ।
তারা বলেন, পুঁজিবাদী, ভোগবাদী সমাজে ও মৌলবাদী দৃষ্টিভঙ্গিতে নারী মানুষ হিসেবে অধিকার ও মর্যাদা পান না।
নেতারা বলেন, নারী নির্যাতন সমাজ বিচ্ছিন্ন কোনো বিষয় নয়। যে সমাজে বৈষম্য প্রকট, সে সমাজে নির্যাতন একটি স্বাভাবিক বিষয়ে পরিণত হয়। নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস এই অন্যায়কে গুড়িয়ে দেওয়ার শিক্ষা দিয়ে যায়। নারী শিশু নির্যাতনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ সামাজিক প্রতিরোধ প্রয়োজন।
সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল জাতীয় প্রেস ক্লাব থেকে শুরু করে পল্টন, জিরো পয়েন্ট হয়ে বায়তুল মোকাররমে গিয়ে শেষ হয়।
সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি শম্পা বসুর সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল বাসদ-এর কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ, সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরামের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা রওশন আরা রুশো, সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট দিলরুবা নূরী, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. মনীষা চক্রবর্ত্তী। সমাবেশ পরিচালনা করেন সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সম্পাদক রুখশানা আফরোজ আশা।