গাজায় প্রতিদিন ২ ট্রাক জ্বালানি ঢুকতে দিতে রাজি ইসরায়েল

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় জ্বালানি ঢুকতে দিতে রাজি হয়েছে ইসরায়েল। দেশটি জানিয়েছে, ফিলিস্তিন ভূখণ্ডে প্রতিদিন দুই ট্রাক জ্বালানি তেল ঢুকতে পারবে।

মূলত যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক মহলের চাপের মুখে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসরায়েল। এর ফলে চরম জ্বালানিসংকটে ধুঁকতে থাকা গাজাবাসীর কষ্ট কিছুটা হলেও লাঘব হবে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, প্রতি দুই দিনে গাজায় প্রায় ১ লাখ ৪০ হাজার লিটার জ্বালানি তেল প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে।

এই জ্বালানি তেলের বেশির ভাগই মানবিক সহায়তা দেওয়ার ট্রাক চলাচল, যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় পানি ও স্যানিটেশনের সুবিধা দেওয়ার জন্য জাতিসংঘকে দেওয়া হবে। বাকিটা ব্যবহার করা হবে মুঠোফোন ও ইন্টারনেট পরিষেবা নির্বিঘ্ন রাখার জন্য।

যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, গাজায় জ্বালানি সরবরাহের এ সিদ্ধান্ত সপ্তাহখানেক আগেই নেওয়া হয়েছিল, কিন্তু ঘোষণা করতে বিলম্ব হওয়ার পেছনে দুটি কারণ ছিল।

প্রথমত, গাজার দক্ষিণাঞ্চলে জ্বালানি ফুরিয়ে যায়নি, যুক্তরাষ্ট্রকে এমনটাই জানিয়েছিলেন ইসরায়েলি কর্মকর্তারা। দ্বিতীয়ত, এই সুবিধা দেওয়ার বিনিময়ে হামাসের হাতে আটক কিছু বন্দীর মুক্তি নিশ্চিত করতে চেয়েছিল ইসরায়েল।
তবে গত বৃহস্পতিবার ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য জাতিসংঘের ত্রাণ ও কর্মবিষয়ক সংস্থা (ইউএনআরডব্লিউএ) এই বলে সতর্ক করে যে চরম জ্বালানিসংকটের কারণে গাজায় তাদের সব কার্যক্রম বন্ধ হতে বসেছে। এর পরপরই গাজায় জ্বালানি সরবরাহের অনুমতি দেওয়ার কথা জানাল ইসরায়েল।

ইউএনআরডব্লিউএর সংস্থাটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, গাজায় ন্যূনতম মানবিক সহায়তা কার্যক্রম চালিয়ে যেতে প্রতিদিন ১ লাখ ৬০ হাজার লিটার জ্বালানি প্রয়োজন। ইসরায়েল যে পরিমাণ জ্বালানি সরবরাহের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, তা এর অর্ধেক।
বিশ্বের জনবহুল এলাকাগুলোর একটি গাজা। ১৪০ বর্গমাইলের এ ভূখণ্ডে বসবাস করেন প্রায় ২৩ লাখ মানুষ। তাঁদের অর্ধেকই চরম খাদ্যসংকটে ভোগেন। দারিদ্র্যসীমার নিচে জীবন কাটাতে হয় তাঁদের। এ তথ্য জানিয়েছে ইউএনআরডব্লিউএ।
জ্বালানি, সুপেয় পানি ও কিছু ক্ষেত্রে খাবারের জন্য ইসরায়েলের ওপর নির্ভর করতে হয় গাজাবাসীকে। ইসরায়েলের বেঁধে দেওয়া সময়ে, নির্ধারিত করিডর হয়ে গাজায় খাবার-পানি ঢোকে।

গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে চালানো হামাসের হামলার জবাবে লাগাতার হামলা চালানোর পাশাপাশি গাজার ওপর কড়া অবরোধ আরোপ করেছে ইসরায়েল। ভূমি, সাগর ও আকাশপথে গাজায় পণ্য প্রবেশ করা দুরূহ। শুধু মিসরের সঙ্গে রাফাহ ক্রসিং উন্মুক্ত রাখা হয়েছে। এ পথে মানবিক সহায়তার ট্রাক ঢুকলেও জ্বালানি নিতে দেওয়া হয় না।
ইসরায়েলের গত এক মাসের বেশি সময় ধরে চালানো হামলায় গাজায় ১১ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনির প্রাণ গেছে। এর বেশির ভাগই নারী ও শিশু।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com