বর্তমানে কয়েকজন পরিচালক নিয়ে আলোচনায় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। লোকমান হোসেন ভূঁইয়া, মাহাবুব আনাম ও ইসমাইল হায়দার মল্লিককে নিয়ে কিছুটা বিব্রতও। একজন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে, একজন রয়েছেন বিদেশে, আরেকজনকে দেয়া হয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশনের চিঠি। ইতোমধ্যে শোনা যাচ্ছে বিসিবির বেতন নিয়েও ঝামেলা হচ্ছে। গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা এই তিনজন পরিচালকের অনুপস্থিতিতে নিয়মিত কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে না বলেই মনে করেন বিসিবি পরিচালক ও মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস। গতকাল পল্টন ময়দানে শেখ রাসেল ক্রিকেট টুর্নামেন্ট উদ্বোধনের পর তিনি বলেন, ‘কারো জন্য কোনো কাজ থেমে থাকে না। বিসিবিতে কোনো ঝামেলা নেই। উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনো কারণও নেই।’
এর আগে ট্রাইব্যুনালে বিচার শেষ হওয়ার আগেই, ফিক্সিংয়ের অভিযোগ ওঠার সাথে সাথে মোহাম্মাদ আশরাফুলকে নিষিদ্ধ করেছিল বোর্ড। শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে সাকিব আল হাসানকেও আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে নিষিদ্ধ এবং সাব্বিরকে জরিমানা করা হয়েছিল। লোকমান হোসেন ভূঁইয়ার ক্যাসিনো কাণ্ডে কিছুটা বিব্রত বিসিবি। তার ব্যাপারে পরবর্তী বোর্ড সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হবে, এমনটাই জানিয়েছেন বিসিবি পরিচালক জালাল ইউনুস। লোকমান হোসেনের অনুপস্থিতিতে বিসিবির কার্যক্রমে কোনো প্রভাব পড়বে না বলেও জানান তিনি।
লোকমান হোসেন ভূঁইয়া বিসিবির গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ ফ্যাসিলিটি কমিটির চেয়ারম্যান। তার অনুপস্থিতি কোনো প্রভাব ফেলবে না বোর্ডের কার্যক্রমে। উনার ব্যাপারটা কীভাবে হ্যান্ডেল করছেন। জালাল ইউনুসের কথায়, ‘ব্যাপারটা সভাপতি ক্লিয়ার করে দিয়েছেন। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে তদন্তে আছেন। সম্পূর্ণ আইনের আওতায় আছেন। অপেক্ষা করছি কী হয়। তার ব্যাপারে বোর্ডের সিন্ধান্ত দরকার। সেজন্য একটা সভা হওয়াও জরুরি।’
মাহাবুব আনামের ব্যাপারে জালাল ইউনুস বলেন, ‘মাহাবুব আনাম তার ব্যাপারটা ক্লিয়ার করে দিয়েছেন। দুদক তাকে আগে নোটিশ দিয়েছেন। উনি বিদেশে আছেন। এসে মোকাবেলা করবেন। এলেই বলা যাবে কী হয়।’
ইসমাইল হায়দার মল্লিক অনেক দিন থেকেই বিসিবিতে আসছেন না। কাজে কর্মে কী কোনো ব্যাঘাত ঘটছে। বেতনাদি পরিশোধ নিয়েও নাকি ঝামেলা হচ্ছে। বিষয়টি এড়িয়ে গেলেন মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান, ‘এটি আমি শুনিনি। যদি কেউ বিদেশে থাকে মনে হয় না কোনো ব্যক্তির জন্য বিসিবিতে কাজ পড়ে থাকবে না। আরো যারা আছেন তারা দায়িত্ব নেয়ে কাজগুলো সম্পন্ন করবেন। ক্রিকেট বোর্ডে সিইও আছেন। প্রতিদিনের কার্যক্রম ব্যাহত হবে না।’
এবার আর ফ্র্যাঞ্চাইজি বিপিএল হবে না। তার বদলে বিপিএলের আয়োজন-ব্যবস্থাপনার পাশাপাশি দল গঠন ও দল পরিচালনাও করবে বিসিবি। বোর্ডের ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত হবে প্রতিযোগী দলগুলো। তারপর বলা হয়েছিল, দল গঠন ও পরিচালনায় স্পন্সর পার্টনার নেয়া হবে এবং আগ্রহী করপোরেট হাউজগুলো চাইলে সব কয়টা দলের স্পন্সর পার্টনারও হতে পারবে। স্পন্সর গত মাসেই ঠিক হয়ে যাওয়ার কথা কিন্তু সঠিক কোনো তথ্য নেই। নেই কোনো তোড়জোড়। জালাল ইউনুস জানালেন, ‘বিপিএল হবে। কর্মকাণ্ডে হয়তো সাময়িক দেরি হচ্ছে। যথাসময়ে অর্থাৎ ৬ ডিসেম্বর বিপিএল হওয়া নিয়ে কিছুটা সংশয় রয়েছে। তবে চেষ্টার কমতি হচ্ছে না।’
গতবার ছিল ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট। এবার হবে স্পন্সরদের নিয়ে টুর্নামেন্ট। বঙ্গবন্ধু প্রিমিয়ার লিগ নামেই থাকছে বিপিএল। দেরির ব্যাপারে জালাল ইউনুস বলেন, ‘অনেক কিছু পরিবর্তন করতে হবে। বাইলজ, ফরম্যাট ইত্যাদি। যারা নতুন স্পন্সর আসছেন তাদের নিয়েও বসতে হবে। তারা বিসিবিকে কী দিবে আমরা কিভাবে সহযোগিতা করব। এর মাঝে অনেক কিছুই আছে। তাদের সাথে বসার আগে আমাদেরও অনেক কাজ আছে। বাইলজটা কিভাবে বানাবো সেটি ঠিক করতে হবে। সব কাজ শেষ না হলে তো সময়ও ঠিক করতে পারছি না। সময় বেশি নেই। এই মাসের মাঝামাঝি একটা ড্রাফট হওয়ার কথা ছিল। তার আগে ফরম্যাটটা জরুরি। সভাপতি বলেছেন শিগগিরই বসবেন। যখন সবাই মিলে বসে ফরম্যাটটা ঠিক করতে পারব তখন ড্রাফটের জন্য একটা ঘোষণা দিব। শুরু করার ডেট নিয়ে কিছুটা সংশয় থেকেই যায়। সামনে কতটুকু দেরি হতে পারে সেটি বলা মুশকিল। বঙ্গবন্ধু নামটিই থাকছে। এটিই ফাইনাল। বিপিএলের কমিটি পুনর্গঠন হবে কী না সেটি বোর্ডের সিদ্ধান্ত।’