তিন দিন ধরে বিদ্যুৎ নেই হাসপাতালে

তিন দিন ধরে বিদ্যুৎ না থাকায় ২৫০ শয্যার পাবনা জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যবস্থা স্থবির হয়ে পড়েছে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন হাসপতালের চার শতাধিক রোগী ও তাদের স্বজনরা।

মঙ্গলবার সকালে জরুরি কাজ চালানোর জন্য বিকল্প ব্যবস্থায় আংশিক সংযোগ চালু করা হলেও তা বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি।

পাবনা মেডিকেল কলেজের নিজস্ব হাসপাতাল না থাকায় ২৫০ শয্যার পাবনা জেনারেল হাসপাতালকে অস্থায়ী হাসপাতাল হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এজন্য এখানে রোগীর চাপও সব সময় বেশি থাকে। মঙ্গলবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত এই হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা ছিল ৪১২ জন। এর মধ্যে শিশু বিভাগের মাত্র ৩৮টি শয্যার বিপরীতে রোগী রয়েছে ২ শতাধিক। এ ছাড়া বহির্বিভাগে মঙ্গলবার চিকিৎসাপত্র দেয়া হয় ৭১০ জন রোগীকে। কিন্তু এত রোগী ভর্তি থাকলেও বিদুতের অভাবে হাসপাতালে এক্স-রে, অপারেশনসহ জরুরি সব চিকিৎসা বন্ধ।

বিদ্যুৎ না থাকার কারণে পানিও নেই। ভ্যাপসা গরমে এবং অন্ধকারে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন রোগীরা। ব্রেইনস্ট্রোকে আক্রান্ত রোগী, প্রসূতি, নবজাতকসহ মেডিসিন ও গাইনি বিভাগের এসব রোগীদের নাভিশ্বাস উঠেছে।

বিদ্যুৎ না থাকায় হাসপাতালে রাতের চিত্র আরো ভয়াবহ। রাতে সেখানে সৃষ্টি হয় এক ভুতুড়ে পরিবেশ। শিশু ও বৃদ্ধরা বেশি ভোগান্তি পোহাচ্ছেন।  এ ছাড়া পায়খানা প্রস্রাবসহ প্রাকৃতিক কাজ সম্পাদনে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে রোগী এবং তাদের স্বজনদের।

পাবনা জেনোরেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. রঞ্জন কুমার দত্ত জানান, রোববার রাতে হঠাৎ করেই হাসপাতালের বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ হয়ে যায়। মঙ্গলবার বিকল্প ব্যবস্থার মাধ্যমে চালু করার চেষ্টা করা হলেও তা সফল হওয়া যায়নি।

বিদ্যুৎ বিভাগ পাবনা অঞ্চলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী জিয়াউল ইসলাম জানান, পাবনা জেনারেল হাসপাতালে রয়েছে ১১ কেভি লাইনের নিজস্ব ট্রান্সফরমার। এই ট্রান্সফরমার থেকে মাটির নিচ দিয়ে যাওয়া লাইনে ত্রুটি দেখা দেয়ায় এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

পাবনা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার(আরএমও) ডা. আকসাদ আল মাসুর আনন বলেন, লাইন মেরামতের জন্য পাবনা বিদ্যুৎ ও গণপূর্ত বিভাগের কর্মীরা আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। আশা করি মঙ্গলবারের মধ্যেই সংযোগ চালু করা যাবে।

গণপুর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুজ্জামান খন্দকার বলেন, সমস্যা শনাক্ত করা গেছে। দ্রুত সংযোগ চালু সম্ভব হবে বলে আশা করছি।

এদিকে হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকরা জানান, বিদ্যুৎ না থাকায় রাতে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে তারা নিরাপত্তার অভাবসহ নানা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন।

ইন্টার্ন চিকিৎসক জয়দেব সুত্রধর ও জাহিদুল ইসলাম বলেন, বিদ্যুতের অভাবে তারা শিশুদের নেবুলাইজেশন দেয়াসহ জরুরি চিকিৎসা সেবা দিতে পারছেন না। রাতে রোগীর অবস্থা খারাপ হলে এসব সেবা দিতে না পারায় তারা মানসিকভাবেও কষ্ট পান।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

আজকের দিন-তারিখ
  • বৃহস্পতিবার (দুপুর ১:০৯)
  • ২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • ১৬ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি
  • ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (গ্রীষ্মকাল)
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com