গৌরবময় বিজয়ের মাস শুরু

ডিসেম্বর। শুধু নয় একটি মাসের নাম। একাত্তরের এ মাসেই বিশ্বমানচিত্রে ঠাঁই করে নেয় বাঙালির স্বাধীন আবাসভূমি বাংলাদেশ।

দীর্ঘ ৯ মাস যুদ্ধের পর ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়। স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাঙালি জাতি নিজস্ব মানচিত্রের একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশ পায়। ৭১-র এ দিনে সূচিত হয় নতুন মানচিত্রে নতুন এক জাতীয়তার।

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ নিরস্ত্র বাঙালির ওপর বর্বর হামলা চালায় পাকিস্তান সেনাবাহিনী। বঙ্গবন্ধুর কথামতো যার যা আছে তা-ই নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে সর্বস্তরের মানুষ। শুরু হয় জনযুদ্ধ। ৯ মাস রক্তক্ষয়ী লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে জয় ছিনিয়ে আনে বাংলার দামাল সন্তানেরা।

১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস। শৌর্য আর বীরত্বের এক অবিস্মরণীয় দিন। দিনটি জাতিকে স্মরণ করিয়ে দেয় ১৯৭১ সালের সেই দিনকে, যেদিন সব হারানো বাঙালির প্রাণে প্রাণে ছড়িয়ে পড়ে স্বাধীনতার অনাবিল আনন্দ, বিজয়ের উল্লাস।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে অস্থায়ী মুজিবনগর সরকারের নেতৃত্বে ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী এ সশস্ত্র সংগ্রামের পর ৪৫ বছর আগের এই দিনে আসে চূড়ান্ত বিজয়।
যে অস্ত্র দিয়ে বর্বর পাকিস্তানি বাহিনী দীর্ঘ ৯ মাস ত্রিশ লাখ বাঙালিকে হত্যা করে, সম্ভ্রম কেড়ে নেয় দুই লাখ মা-বোনের, সেই অস্ত্র পায়ের কাছে নামিয়ে রেখে একরাশ হতাশা ও অপমানের গ্লানি নিয়ে তারা লড়াকু বাঙালির কাছে আত্মসমর্পণ করে। বিশ্বের মানচিত্রে উদ্ভাসিত হয় নতুন রাষ্ট্র বাংলাদেশ। আত্মপরিচয়ের ঠিকানা খুঁজে পায় বাঙালি। সেই থেকে ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস।

বিজয় দিবসে স্বাধীনতার আনন্দে উদ্বেল কৃতজ্ঞ জাতি সশ্রদ্ধ বেদনায় স্মরণ করবে দেশের পরাধীনতার গ্লানি মোচনে প্রাণ উৎসর্গ করা বীর সন্তানদের। সারাদেশের স্মৃতিসৌধে শহীদদের উদ্দেশে নিবেদন করা হবে পুষ্পাঞ্জলি। রাজধানীসহ সারাদেশের সব প্রান্তের মানুষ অংশ নেবে নানা অনুষ্ঠানে। বঙ্গবন্ধুর বজ্রনিনাদ ৭ মার্চের ভাষণ আর স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের জাগরণী গানে আকাশ-বাতাস হবে মুখরিত।জাতীয় স্মৃতিসৌধে নামবে জনতার ঢল।

মুক্তিযুদ্ধ উত্তরকালে গত কয়েক বছরে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অভূতপূর্বভাবে এগিয়েছে বাংলাদেশ। সমুদ্র বিজয়, ক্রিকেট, প্রযুক্তি, অবকাঠামো সবমিলিয়ে এগিয়ে চলার এই গতি থামার নয়। পাশের দেশগুলোর তুলনায় সামাজিক ও অর্থনৈতিক সূচকেও বাংলাদেশ এগিয়ে গেছে। বিশ্বের অনেক দেশের কাছেই বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল। তথ্যপ্রযুক্তির উন্নয়নে দারুণ গতিতে সামনে ধাবমান রবিঠাকুর-বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা এখন বিশ্বদরবারে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

আজকের দিন-তারিখ
  • বৃহস্পতিবার (বিকাল ৩:০৪)
  • ২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • ১৬ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি
  • ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (গ্রীষ্মকাল)
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com