যশোরে চার লাখ টাকায় নবজাতক বিক্রির অভিযোগ

যশোরের শার্শার বাগআঁচড়া আল মদিনা ক্লিনিকে সিজারের পর খোদেজা নামে এক প্রসূতি মারা যাওয়ার পর তার নবজাতককে চার লাখ টাকায় বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে। নবজাতকটি কোথায় কীভাবে বিক্রি হয়েছে, না পাচার হয়েছে- তা নিয়েও চলছে নানা আলোচনা।

সূত্র মতে, গত ২২ নভেম্বর আল মদিনা ক্লিনিকে বাগআঁচড়ার শংকরপুর গ্রামের খোকা খার মেয়ে খোদেজা সিজার করতে যান। তিনি এই ক্লিনিকে সিজার করার জন্য পূর্ব থেকে চিকিৎসা নিয়ে আসছিলেন। শনিবার সকাল ৯টার সময় তার সিজার অপারেশনকারী ডাক্তার মারুফ হোসেন অতিরিক্ত রক্তক্ষণের পর তাকে যশোর সদর হাসপাতালে চিকিৎসা করতে পাঠায় বলে সূত্রটি জানায়। কিন্তু প্রসূতি নাভারন পর্যন্ত পৌঁছালে মারা যায়। ডাক্তার মারুফ নাভারন সরকারি হাসপাতালের ডাক্তার।

নিহত খোদেজার বড় বোন সফুরা বেগম জানান, খোদেজাকে সিজার করার জন্য আলমদিনা হাসপাতালে ২২ নভেম্বর বাগআঁচড়া আল-মদিনা হাসপাতালে নেয়া হয়। ওই দিন ডাক্তার মারুফ এবং হাসপাতালের মালিক কামরুজ্জামান তার রক্ত শূন্যতা আছে বলে জানান। সফুরা বলেন, রাত্রে তাদের কামরুজ্জামান জানান সাতক্ষীরা রক্ত পাওয়া গেছে সকালে তাকে রক্ত দিয়ে অপারেশন করা হবে। সকালে রক্ত আসার আগে প্রসূতির কোমরে ব্যথা হয়। ব্যথা উঠার পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানালে তারা একটি ইনজেকশন দেয়। ইনজেকশনের পর তার ব্যথা প্রচণ্ড ওঠে। এরপর স্বাভাবিকভাবে কিছু সময় পর একটি কন্যা সন্তান প্রসব করেন। তবে সে সময় প্রসূতি খোদেজার অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয়। এ রক্তক্ষরণে আল-মদিনা ক্লিনিকের মালিক এবং ডাক্তার হিসেবে পরিচিত কামরুজ্জামান ও নাভারণ হাসপাতালের ডাক্তার মারুফ ওষুধ দিয়ে সুস্থ করে তোলার চেষ্টা করেন। এক পর্যায়ে বেলা ১২টার সময় যশোর নিয়ে যেতে বলেন। যশোর নিয়ে যাওয়ার পথে নাভারন পৌঁছালে প্রসূতি মারা যান।

নবজাতক কোথায় জানতে চাইলে সফুরা জানান, হাসপাতলের ডাক্তার কামরুজ্জামান ঢাকার একজন উকিলের সাথে যোগাযোগ করে দিয়ে দিয়েছে। কেন দিয়েছে আপনারা বিক্রি করেছেন কিনা জানতে চাইলে তারা বলেন, খোদেজার স্বামী ইন্ডিয়ায় থাকে। তাকে আমরা জানিয়েছি খোদেজা মারা গেছে এবং বাচ্চা একজন নিয়ে গেছে লালন পালনের জন্য। এতে সে কোন আপত্তি করেনি।

স্থানীয় সূত্র জানায়, খোদেজার স্বামী সেলিমকে সফুরা ও তার মা ফোনে জানিয়েছে খোদেজা ও তার বাচ্চা পেটে মারা গেছে। তারা এই বাচ্চাটিকে আল মদিনা ক্লিনিকের মালিক কামরুজ্জামানের সাথে যোগাযোগ করে চার লাখ টাকায় বিক্রি করে দিয়েছে।

আল মদিনা ক্লিনিকের মালিক কামরুজ্জামান বলেন, শিশুটিকে ঢাকার একজন ব্যবসায়ী নিয়ে গেছে। খোদেজা মারা যাওয়ার পর শিশুটি লালন-পালন করার মত তেমন কেউ ছিল না ওই পরিবারের। শিশুটি চার লাখ টাকায় বিক্রি হয়েছে এবং আপনি কমিশন পেয়েছেন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন এটা সত্য নয়।

এ ব্যাপারে শার্শা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আতাউর রহমান জানান, এ ঘটনায় এখনো পর্যন্ত কোন মামলা হয়নি। মামলা হলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

আজকের দিন-তারিখ
  • মঙ্গলবার (বিকাল ৫:১১)
  • ২৩শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • ১৪ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি
  • ১০ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (গ্রীষ্মকাল)
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com