সন্ত্রাসে পাক মদত দিয়ে প্রচার শুরু নয়াদিল্লির

২৪ নভেম্বর: নাগরোটা কাণ্ডকে সামনে নিয়ে এসে বিশ্বের কাছে সন্ত্রাসে পাকিস্তানি মদতের বিষয়টিকে তুলে ধরতে সক্রিয় হল সাউথ ব্লক। বিদেশসচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা জম্মুর নাগরোটায় সাম্প্রতিক  হামলার বিষয়টি নিয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচ স্থায়ী সদস্য দেশ-সহ বেশ কিছু রাষ্ট্রের দূতের (নয়াদিল্লিতে নিযুক্ত) কাছে সরব হয়েছেন।

ভারতের নিরাপত্তা পরিস্থিতি এবং কূটনৈতিক সম্পর্কে ওই ঘটনার প্রতিফলন নিয়ে তিনি কথা বলেছেন ফ্রান্স, আমেরিকা, ব্রিটেন, চিন-সহ বিভিন্ন দেশের দূতের সঙ্গে। এখানেই না থেমে সাউথ ব্লকের বিভাগীয় সচিবেরা দ্বিতীয় দফায় আবার পাকিস্তানের আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাস নিয়ে কথা বলবেন দূতাবাসের কর্তাদের সঙ্গে।

শ্রিংলা গত কাল রাষ্ট্রদূতদের কাছে বিশদে জঙ্গিদের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া অস্ত্রশস্ত্র, আনুষঙ্গিক জিনিষপত্রের ব্যাপারে জানিয়েছেন। তারা যে পাকিস্তানের সম্পূর্ণ সহযোগিতাতেই অনুপ্রবেশ করেছে সে ব্যাপারে তথ্যও দেওয়া হয়েছে। তাদের কাছ থেকে পাওয়া একে ৪৭ রাইফেল এবং অন্য যন্ত্রে পাকিস্তানি সংস্থার চিহ্ন রয়েছে। জইশ ই মহম্মদ গোষ্ঠীর সঙ্গে এই জঙ্গিদের সংযোগের প্রমাণও রাষ্ট্রগুলিকে দেওয়া হয়েছে।

বিদেশ মন্ত্রক সূত্রে বলা হয়েছে, সাম্বা সেক্টরে একটি ভূগর্ভস্থ সূড়ঙ্গের হদিশ মিলেছে, যার থেকে তাদের ভারতে ঢোকার পথ স্পষ্ট হয়েছে। ১৯ নভেম্বরে নাগরোটার ঘটনা যে বিচ্ছিন্ন বিষয় নয় সে কথা বলে বিদেশসচিব জানিয়েছেন, শুধুমাত্র চলতি বছরেই পাকিস্তানের মদতপ্রাপ্ত ২০০টি জঙ্গি হিংসার ঘটনা ঘটেছে সীমান্তে। ১৯৯ জন সন্ত্রাসবাদীকে হত্যা করা গিয়েছে। জইশের আগের হামলার ঘটনাগুলির কথাও তুলেছেন শ্রিংলা।

কূটনৈতিক শিবিরের মতে, নাগরোটার ঘটনাটি নিয়ে আন্তর্জাতিক স্তরে একটি পাক-বিরোধী প্রচার আগে থেকেই শুরু করতে চায় মোদী সরকার। প্রথমত, সাউথ ব্লকের আশঙ্কা আগামী দিনে নিয়ন্ত্রণরেখায় আরও হামলার সম্ভাবনা রয়েছে। আগে থেকেই এই নিয়ে আন্তর্জাতিক চাপ তৈরি করে পাকিস্তানকে বিরত রাখার এটি একটি কৌশল। পাকিস্তানের ভারত-বিরোধী সন্ত্রাসকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাস বিরোধিতার নিশানায় নিয়ে আসাটা উদ্দেশ্য। পাশাপাশি বাইডেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হিসেবে কাজ শুরু করার আগেই পাকিস্তানের জঙ্গি ভূমিকা নিয়ে আগাম আবহ তৈরি করা রাখাটাও নয়াদিল্লির লক্ষ্য।

কারণ ইমরান সরকার ডেমোক্র্যাটদের কাছে, কাশ্মীর থেকে ৩৭০ প্রত্যাহার, সেখানে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ এবং সিএএ নিয়ে ধারাবাহিক ভাবে অনুযোগের বন্যা বইয়ে দেবে বলে মনে করছে দিল্লি। তাই আগে থেকেই বিভিন্ন রাষ্ট্রের কাছে এই পাক-বিরোধী কূটনৈতিক প্রচারের রাস্তায় হাঁটার কথা ভাবা হচ্ছে।

 

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published.

চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন