চীনের ৭১টি নদীর পানি বিপত্সীমা অতিক্রম করায় এবারের মৌসুমেও দেশটি ব্যাপক বন্যার মুখে পড়তে যাচ্ছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা সিনহুয়া গত মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এমন আশঙ্কার কথা জানিয়েছে। দেশটির আবহাওয়া বিভাগ সতর্ক করে জানিয়েছে, বাড়তে থাকা বৈশ্বিক উষ্ণতার কারণে সামনের দিনগুলোতে চীনকে আরো চরম ও প্রতিকূল পরিস্থিতি দেখতে হতে পারে। খবর রয়টার্সের।
চীনের মধ্য ও দক্ষিণাঞ্চলের কিছু অংশে সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে রেকর্ড বৃষ্টিপাত হয়েছে। তার পরও দেশটিতে এবার এখন পর্যন্ত হওয়া বর্ষণের পরিমাণ গত বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ১০ শতাংশ কম বলে জানিয়েছে চীনের পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়।
আগামী সপ্তাহের মধ্যে ইয়াংসি ও এর শাখা নদীগুলোতে পানির পরিমাণ আরো বাড়বে, এমন আভাস দিয়ে মন্ত্রণালয়টি জুন থেকে আগস্টের মধ্যে চীন জুড়ে বড় ধরনের বন্যা হতে পারে বলে আগাম সতর্ক করেছে। নদীর পানি নিয়ে চীনের অনেক পর্যবেক্ষণ স্টেশনে সতর্কবার্তা জারি হয়েছে। উজানে ভারী বৃষ্টির কারণে ইয়াংসি নদীর পানি উহান শহরের অংশে স্বাভাবিকের চেয়ে দুই মিটারেরও বেশি উঁচু দিয়ে বয়ে যাচ্ছে।
গত গ্রীষ্মে দেশটিতে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ১৯৬১ সালের পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মাত্রায় পৌঁছেছিল; যার কারণে তখন বড় বড় সব নদী ও হ্রদতীরবর্তী অঞ্চলগুলোতে বন্যা সতর্কতা জারি করতে হয়, বিশাল থ্রি গর্জেস বাঁধে পানির স্তর ধারণক্ষমতার সর্বোচ্চ পর্যায়ের কাছাকাছি পৌঁছে যায়। গত বছর চীন জুড়ে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ প্রায় ৭০০ মিলিমিটারের কাছাকাছি ছিল, যা গড়ের চেয়ে ১০ দশমিক ৩ শতাংশ এবং আগের বছরের তুলনায় ৭ দশমিক ৬ শতাংশ বেশি। গত বছর চীনের মধ্য ও উত্তর-পূর্বের কিছু কিছু এলাকায় স্বাভাবিকের তুলনায় দ্বিগুণ বৃষ্টিপাতও দেখা গেছে।
চীনের জাতীয় আবহাওয়া কেন্দ্রের উপপরিচালক জিয়া ঝিয়াওলং চলতি বছরের এপ্রিলের শেষ দিকে বলেছিলেন, বৈশ্বিক উষ্ণতা চীনকে অতিরিক্ত ঠান্ডা, তাপপ্রবাহ ও বন্যার মতো প্রতিকূল আবহাওয়ার ঝুঁকির মধ্যে ঠেলে দিয়েছে। রবিবার দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় গানসু প্রদেশে একটি আলট্রাম্যারাথন প্রতিযোগিতা চলাকালে পার্বত্য অঞ্চলে ঝড়বৃষ্টির মধ্যে প্রচণ্ড ঠান্ডা আবহাওয়ায় ২১ দৌড়বিদের মৃত্যু হয়। চলতি মাসে চীনের উহান ও পূর্বাঞ্চলের উপকূলীয় জিয়াংসু প্রদেশে দুটি টর্নেডো ১২ জনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে, আহত হয়েছে কয়েক শ মানুষ।