চিলির বিক্ষোভের এক মাস পূর্ণ হওয়ায় হাজার হাজার বিক্ষোভকারী দেশটির প্রধান প্রধান শহরগুলোতে পদযাত্রা করে।
মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম এ তথ্য জানায়।
খবরে বলা হয়, সোমবার (১৮ নভেম্বর) চিলিতে অর্থনৈতিক বৈষম্য ও অন্যায়ের প্রতিবাদে বিক্ষোভের এক মাস পূর্ণ হয়। এ উপলক্ষে দেশটির প্রধান প্রধান শহরগুলোতে পদযাত্রা করে হাজার হাজার বিক্ষোভকারী।
সরকারের পক্ষ থেকে বেশ কিছু ইতিবাচক উদ্যোগ নেওয়া হলেও সামাজিক ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থা উন্নয়নে বিক্ষোভকারীদের সুনির্দিষ্ট দাবিগুলো আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা বিক্ষোভ থামাবেন না বলে জানিয়েছেন।
গত ১৮ অক্টোবর মেট্রোরেলের ভাড়া বাড়ানোর প্রতিবাদে বিক্ষোভ শুরু করে দক্ষিণ আমেরিকার দেশ চিলির সাধারণ মানুষ। তীব্র বিক্ষোভের মুখে ১৯ অক্টোবর ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত স্থগিত করে দেশটির সরকার।
ততক্ষণে রাজধানী সান্তিয়াগো থেকে শুরু হওয়া বিক্ষোভটি সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। বর্তমানে অর্থনৈতিক বৈষম্য ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করছেন আন্দোলনকারীরা। তাদের প্রধান দাবিগুলো হচ্ছে- সংসদে পরিবর্তন, বেতন-ভাতা বাড়ানো এবং শিক্ষা ও চিকিৎসাসেবার খরচ কমানো।
২১ বছর বয়সী আইন শিক্ষার্থী আকেমি মাতসুবারা বলেন, চিলিকে দক্ষিণ আমেরিকার মরুদ্যান মনে করা হলেও বাস্তবে তা কখনোই ছিল না। স্বৈরতন্ত্র থেকে এখনো আমরা পুরোপুরি বের হতে পারিনি।
রাজধানীর উত্তরে অবস্থিত আন্তফাগাস্তা শহরে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করার সময় তিনি এ কথা বলেন।
গত এক মাসে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সংঘর্ষে অন্তত ২৪ বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন। আটক হয়েছেন ছয় হাজার বিক্ষোভকারী।
জাতীয় মানবাধিকার সংস্থা যৌন সহিংসতার অভিযোগে কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত ৫৮টি মামলা দায়ের করেছে। বেশিরভাগ মামলাই পুলিশের বিরুদ্ধে। এছাড়া, নির্যাতন ও অন্য সহিংসতার অভিযোগে ২৪৬টি মামলা দায়ের করেছে তারা। চোখে আঘাত পেয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার ২১৭টি কেসের প্রমাণ পেয়েছে সংস্থাটি। এর মধ্যে ৭৫ শতাংশই প্রজেক্টাইল হামলায় চোখে আঘাত পেয়েছেন।
গত সপ্তাহে সরকার নতুন সংবিধান প্রণয়নের প্রস্তাব দিলে দেখা যায় ৮০ শতাংশ চিলিয়ান স্বৈরতান্ত্রিক সময়ের সংবিধান বদলে নতুন সংবিধান প্রণয়নে সমর্থন দিয়েছেন।
রোববার (১৭ নভেম্বর) এক বিবৃতিতে চিলির প্রধানমন্ত্রী সেবাস্তিয়ান পিনেরা বলেন, সরকার লাখ লাখ চিলিয়ানের ন্যায়সঙ্গত দাবি শুনেছে। নতুন সংবিধানে তাদের সব দাবি বিবেচনা করা হবে। পেনশন ২০ শতাংশ বাড়ানোর কথা ভাবছে সরকার।
আমরা জানি, যে পদক্ষেপগুলো আমরা নিয়েছি বা নিচ্ছি, তা এখনই সব সমস্যার সমাধান করবে না। গত চার সপ্তাহের পরিণতি এখনই বোঝা যাবে না।