নেতিবাচক অনেক অভিজ্ঞতার ভিড়ে পুলিশের সাহসিকতা আর মানবিকতার গল্পগুলো খুব কমই সামনে আসে। মানবিক গল্পে যে পুলিশ নায়ক চরিত্রে অবতীর্ণ হতে পারেন, তেমন অনেক উদাহরণই চাপা পড়ে যায় হাজারো ঘটনার ভিড়ে। যারা সাধারণ মানুষকে সহযোগিতার মতো মানবিক কাজগুলোও নৈতিক দায়িত্ব বলে মনে করেন।
গত সোমবার ঢাকা বিমানবন্দর চত্বরের পাশে একজন বিবস্ত্র মানসিক ভারসাম্যহীন নারীকে দেখা যায়। হাজারো মানুষের চোখের ভিড়ে এক পুলিশ কর্মকতার চোখের পলক পড়ে তার ওপর। তিনি বিলম্ব না করে নিজের গাড়ি থেকে নেমে নিজের ট্রাউজার এবং জার্সি পরিয়ে দেন বিবস্ত্র ওই নারীকে। মানবিক দায়বদ্ধতা থেকেই তিনি এ কাজটি করেছেন।
এমন হাজারো মানবিক কাজ করে পুলিশ বাহিনীর নেতিবাচক দিকগুলো ইতিবাচক করার মানবিক লড়াইয়ে নেমেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক উত্তরের বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার প্রবীর কুমার রায়। নিজের দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা দিয়ে সেবা করে যাচ্ছেন সাধারণ মানুষকে।
প্রবীর কুমার রায় সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে, শুধুমাত্র বাসস্টপেজে যাত্রী উঠানামা করানো, বাসস্টপেজ ছাড়া গাড়ির দরজা না খোলা এবং মোটরযান আইন সম্পর্কে চালক ও হেলপারদের সচেতন করার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছেন। ট্রাফিক আইন সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের সচেতন করতে স্কুল-কলেজের শিক্ষকদের সঙ্গেও কাজ করে যাচ্ছেন।
এয়ারপোর্ট ক্রসিং ট্রাফিক উত্তর বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ এবং ব্যস্ততম ক্রসিং। এ ক্রসিংয়ে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় সমস্যাসহ যানজটের সৃষ্টি হয়। তাই হজযাত্রীদের গমনাগমন নিরাপদ করা এবং সুশৃঙ্খল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় আলোচনায় এসেছেন তিনি।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক উত্তর বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার প্রবীর কুমার রায় জানান, দুনিয়ার আর অন্য কোন পেশায় থেকে মানুষের এতোটা কাছে গিয়ে সেবা দেওয়া যায় না- যা পুলিশের দ্বারা সম্ভব। সবার আগে আমি একজন মানুষ- তারপরে আমার পেশা-জাত-ধম-বর্ণ সব, কোন কিছুই মানুষের আগে নয়। আর মানবসেবায় টাকা-পয়সা বেশি লাগে না। সবচেয়ে জরুরি হলো মানবিক মানসিকতা। আপনার ইচ্ছাতেই সম্ভব একটা ভালো কাজ করা। পুলিশের প্রতি মানুষের ভালোবাসা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। কারণ পুলিশের অনেক সদস্যরা ভালো কাজ করতেন, কিন্তু তা জনসম্মুখে আসত না। এখন দুনিয়া হাতের মুঠোয়, তাই কোন মিডিয়াতে এইসব খবর প্রচার না হলেও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভালো-খারাপ দুইটাই জানতে পারছে। এখনও যে সব ভালো হয়ে গেছে- তা বলছি না। কারণ দুনিয়ার সব পেশাতেই ভালো-খারাপ দুইটাই আছে বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।