আওয়ামী লীগের আসন্ন ২১তম সম্মেলনে গঠনতন্ত্রের বড় কোনও পরিবর্তন আনা হচ্ছে না। তেমন কোনও সংযোজন-বিয়োজন নয়, শুধু সময়োপযোগী করে এর খসড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে। এরই মধ্যে এ খসড়া আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে জমাও দিয়েছে সম্মেলন উপলক্ষে গঠিত গঠনতন্ত্র পরিবর্তন বিষয়ক উপ-কমিটি। দলীয় গঠনতন্ত্র পরিবর্তনে যুক্ত আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।
আগামী ২১ ও ২২ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের ২১তম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।
সূত্রমতে, এখন কেবল দলীয় সভাপতির মতামতের অপেক্ষা। সেই আলোকে সম্মেলনে খসড়া গঠনতন্ত্র অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে।
গঠনতন্ত্রে কী কী পরিবর্তন আনা হচ্ছে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক এবং সম্মেলন উপলক্ষে গঠিত গঠনতন্ত্র পরিবর্তন বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য সচিব আফজাল হোসেন বলেন, ‘গঠনতন্ত্র শুধু সময়োপযোগী করা হচ্ছে। বড় কোনও পরিবর্তন নেই।’
নিয়মানুযায়ী আওয়ামী লীগের প্রতিটি সম্মেলনেই গঠনতন্ত্র সময়োপযোগী করা হয়। প্রয়োজনীয় পরিবর্তন, পরিবর্ধন ও সংযোজন করা হয়। এবারের সম্মেলন উপলক্ষে গঠিত এ-সংক্রান্ত কমিটি এরই মধ্যে দুটি বৈঠক করে খসড়া চূড়ান্ত করেছে।
এবারের সম্মেলন উপলক্ষে গঠিত গঠনতন্ত্র পরিবর্তন বিষয়ক উপ-কমিটির দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানায়, উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের মধ্যে একটি হলো সহযোগী সংগঠনের নাম পরিবর্তন হচ্ছে। ‘আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ’-এর নাম পাল্টে ‘বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ’ করা হচ্ছে।
সূত্র জানায়, আইন সেক্টরে কাজ করা আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ আগে সহযোগী সংগঠনের মর্যাদা ভোগ করতো। কিন্তু এই সেক্টরের আরেকটি সংগঠন ‘বঙ্গবন্ধু পরিষদ’ও আওয়ামী রাজনীতিতে শক্তিশালী ভূমিকা পালন করেছে। এ দুটি সংগঠনের বিরোধের কারণে আইন সেক্টরে আওয়ামীপন্থীরা বার বার হারছিলেন। পরে দুই পক্ষকে এক করার লক্ষ্যে দুটি সংগঠন মিলে ‘বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ’ করা হয়, যা এবারের সম্মেলনে অনুমোদনের মাধ্যমে গঠনতন্ত্রে অন্তর্ভুক্ত হবে।
সূত্রমতে, এছাড়া কেন্দ্রীয় কমিটির মতো মহানগর-জেলা-উপজেলা কমিটিতে কতজন সদস্য থাকতে পারবেন তা নির্দ্দিষ্ট করে দেওয়ার বিষয়টি গঠনতন্ত্রে সংযোজন করা হবে। আর আগে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের জায়গায় ভাত ও ভোটের অধিকারের যে কথা বলা আছে, সেখানে ভাত ও ভোটের পাশাপাশি খাদ্যে পুষ্টির বিষয়টিও গুরুত্ব দেওয়া হবে। কেননা, এখন মানুষের ভাত ও ভোটের অধিকার নিশ্চিত হয়েছে। তাই সুস্বাস্থ্যের দিকে নজর দিতে হবে। আর ‘নারী ও শিশু’ শব্দ দুটি যেসব স্থানে ব্যবহার করা হয়েছে, সেসব স্থানে নারী ও শিশুর পাশাপাশি ‘তৃতীয় লিঙ্গ’ শব্দটিও ব্যবহার করার প্রস্তাব থাকছে খসড়া গঠনতন্ত্রে। এছাড়া দলের সদস্য ফরমে জাতীয় পরিচয়পত্র ও ফোন নম্বর অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়টি যুক্ত হবে। দলের যে ডাটাবেজ হচ্ছে তা সমৃদ্ধ করার উদ্দেশে এ প্রস্তাব করা হবে।
জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য ও সম্মেলন উপলক্ষে গঠিত গঠনতন্ত্র পরিবর্তন বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য আজমত উল্লাহ বলেন, ‘এ কমিটির সদস্যরা গঠনতন্ত্রের নানা দিক নিয়ে আলোচনা করেছেন। বিভিন্ন প্রস্তাব এসেছে। তবে শব্দগত ও করণীক পরিবর্তন ছাড়া তেমন বড় ধরনের কোনও পরিবর্তন হচ্ছে না।’