রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বেতন কাঠামো করার নির্দেশনা জারি করেছে বেসিক ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। এর ফলে কমে যাবে ব্যাংকটির সর্বস্তরের কর্মীদের বেতন। এ কারণে বেসিক ব্যাংকে কর্মী অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।
সোমবার দুপুর থেকে সেনা কল্যাণ ভবনে বেসিক ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে কর্মীরা বিক্ষোভ করেছেন। এসময় তারা এমডি কার্যালয়ের সামনে অবস্থান করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেসিক ব্যাংকের এক কর্মকর্তা জানান, ব্যাংকের সার্কুলার অনুযায়ী বেতন কাঠামো দেখে আমরা নিজ যোগ্যতায় চাকরি নিয়েছি। এখন বেতন কমানো অযৌক্তিক, এটা লেবার ল’ অনুযায়ী বেআইনি।
তিনি জানান, আমরা যখন চাকরি নিয়েছি তখন আমাদের বয়স কম ছিল, সরকারি অন্যান্য চাকরিতে যাওয়ার একটি অবস্থা ছিল। আমাদের অনেক চাকরির অফার ছিল কিন্তু আমরা যাইনি। এখন আমাদের সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা অতিক্রম করেছে। এই অবস্থায় বেতন কমানোর মাধ্যমে আমাদের ওপর অন্যায় করা হচ্ছে। এটি আমরা মানি না। আমরা এমডি’র কাছে জানিয়েছি। এমডি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন।
পর্ষদের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করে অপর এক কর্মী বলেন, বোর্ডের অদক্ষতা অযোগ্যতা আর অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে আমরা কর্মীরা কেন দায়ভার নেব? আমরা কোনো অন্যায় করিনি, আমরা আমাদের যোগ্যতা দিয়ে কাজ করছি। আমাদের বেতন কমানো অযৌক্তিক, অন্যায় ও অমানবিক। এটা আমরা কেন মানব?
জানা গেছে, রাষ্ট্রায়ত্ত অন্যান্য ব্যাংকগুলোর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে রোববার (২২ ডিসেম্বর) বিকেলে সার্কুলার জারি করে কর্তৃপক্ষ। যা ওইদিন থেকেই কার্যকর করার নির্দেশনা দেওয়া হয়।
সার্কুলারে বলা হয়েছে, বেসিক ব্যাংকে গত ৭ বছর ক্রমাগত লোকসান হওয়ায় বিদ্যমান অতিরিক্ত বেতন-ভাতা ব্যাংকের পক্ষে বহন করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। বিধায় ব্যাংকের বিদ্যমান বেতন কাঠামো ও অন্যান্য সুবিধাদি বাতিল করা হলো।
নতুন নির্দেশনার বিষয়টি জানাজানি হলে সোমবার সকালে ক্ষোভ প্রকাশ করেন কর্মীরা। তারা অবিলম্বে নির্দেশনা বাতিলের দাবি করেন।
উল্লেখ্য, গত আগস্ট মাসে বেসিক ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের প্রতিষ্ঠানটিতে কর্মরতদের বেতন কমানোর নির্দেশনা দেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। ওইদিন বেসিক ব্যাংক কর্মকর্তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারা ৩৫৪ কোটি টাকা লোকসান করেছেন। মাত্র ৭২টা ব্রাঞ্চের জন্য এখানে প্রায় ২১০০ জনবল আছে। এত লোকের এখানে কী কাজ?’
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা একদিকে অন্যান্য ব্যাংকের তুলনায় বেতন বেশি নেন। অন্যদিকে ব্যাংক লোকসানে। এটা কোনোভাবেই সম্ভব হতে পারে না। বেতন কমানো হবে। আপনারা কর্মকর্তারা সবাই বসে সিদ্ধান্ত নেন। কীভাবে কত কমাবেন। সিদ্ধান্ত আমাকে জানান। এরপর আমি আমার সিদ্ধান্ত জানাব।’