রংপুরের হারাগাছ থানার চাঞ্চল্যকর পোশাক শ্রমিক সুমন হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন করেছে মেট্রোপলিটন পুলিশ। ধারের টাকা ফেরত না দেয়ার জেরে বন্ধু লিয়ন তাকে খুন করে।
মূলহোতা ওই ডেকোরেটর ব্যবসায়ী লিয়নকেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ। উদ্ধার করা হয় হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্র ও ছিনতাইকৃত সিমসহ মোবাইল।
রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম) মো. শহিদুল্লাহ কাওছার পিপিএম সোমবার দুপুরে হারাগাছ থানায় প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান, সুমন হত্যাকাণ্ডটি একটি চাঞ্চল্যকর ঘটনা। ব্যাপক তদন্ত চালিয়ে মূল হোতা লিয়নকে আমরা গ্রেফতার করেছি। জিজ্ঞাসাবাদে লিয়ন তার বন্ধু সুমনকে হত্যার কথা স্বীকার করেছে।
সুমন জানিয়েছে, তাদের মধ্যে বন্ধুত্বের সম্পর্ক ছিল। বন্ধুত্বের কারণে সুমনকে বেশ কিছু টাকা ধার দেন লিয়ন। পরবর্তীতে ধারকৃত টাকা ফেরত চাইলে সুমন টাকা পরে দিবেন বলে জানান। এ নিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে সুমন পায়ের স্যান্ডেল খুলে লিয়নের গালে মারেন। এনিয়ে তাদের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল।
এরই মধ্যে সুমনকে মেরে ফেলার পরিকল্পনা করেন তিনি। তার পরিকল্পনা অনুযায়ী ১৭ ডিসেম্বর প্রলোভন দেখিয়ে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে সন্ধ্যার দিকে হারাগাছ পৌরসভার সারাই বায়তুল মসজিদের পিছনে স’ মিলের পাশের পুকুরের কাছে ডেকে নেন। সেখানে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী লিয়ন তার ডেকোরেটরের কাজে ব্যবহৃত বাইশ দিয়ে মাথার পিছনে আঘাত করলে গুরুতর রক্তাক্ত হয়ে মাটিতে পড়ে যান। এরপর বাইশ দিয়ে মাথা এবং মুখে উপর্যুপরি আঘাত করলে সুমন জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন এবং সেখানেই মারা যান। পরে মসজিদের পিছনে সেফটিক ট্যাংকের ভিতরে মরদেহ ফেলে রেখে সুমনের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি নিয়ে পালিয়ে যান।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম), কাজী মুত্তাকী ইবনু মিনান, হারাগাছ থানার ওসি এ,কে,এম নাজমুল কাদের প্রমুখ।
হারাগাছ থানার ওসি এ,কে,এম নাজমুল কাদের জানান, গত ১৭ ডিসেম্বর হারাগাছ থানার সারাই কাজীপাড়া গ্রামের আব্দুর রহিমের ছেলে পোশাক শ্রমিক সুমন নিখোঁজ হন। নিখোঁজের ব্যাপারে হারাগাছ থানায় জিডি দায়ের করেন নিহতের পরিবার। এ নিয়ে হারাগাছ থানা-পুলিশ ব্যাপক অনুসন্ধান চালায়।
নিখোঁজের ১১দিন পর গত শুক্রবার ২৭ ডিসেম্বর একটি সেফটিক ট্যাংকের ভিতর থেকে স্থানীয়দের সংবাদের ভিত্তিতে সুমনের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। গত রোববার দিনাজপুরের পার্বতীপুর থেকে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত মূলহোতা ডেকোরেটর ব্যবসায়ী লিয়নকে গ্রেফতার করে। লিয়ন হারাগাছ থানার সারাই নিউ কসাইটারী গ্রামের মো. মহিরের ছেলে।