ভিক্ষা ছেড়ে নতুন জীবন পেলেন তারা

শারীরিক প্রতিবন্ধী হওয়ায় ভিক্ষাকেই জীবিকা হিসেবে নিতে হয়েছিল বগুড়ার শাজাহানপুরের ঈমান আলীকে। তবে মাঝ বয়সে এসে যেন নতুনভাবে বাঁচার অবলম্বন পেলেন। জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে তাকে পণ্যসহ দোকানঘর দেওয়া হয়েছে। 

জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষ্যে মঙ্গলবার (১৫ আগস্ট) দুপুর ১২টার দিকে বগুড়া জিলা স্কুল প্রাঙ্গণে ১০ জনকে দোকানঘর বুঝিয়ে দেওয়া হয়। এ সময় প্রধান অতিথি হিসেবে দোকানঘরগুলো হস্তান্তর করেন বগুড়া-৬ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য রাগেবুল আহসান রিপু।

অন্য উপকারভোগীরা হলেন- সদরের মালগ্রাম দক্ষিণপাড়ার ফজর আলী, পূর্ব গোদারপাড়ার মমিন হোসেন, জয়পুরপাড়ার আরিফুল ইসলাম, নামুজা আদর্শপাড়ার বাবুল মোল্লা, গাবতলী উপজেলার লাংলুহাটের জাহিদুল ইসলাম, জয়ভোগা গ্রামের আছমা, শাজাহানপুর উপজেলার কামারপাড়ার আব্দুল জলিল, সদরের আকাশতারা এলাকার হারুনুর রশিদ ও সদরের শের-ই-বাংলা এলাকার মোছা. নাজমা বেগম।

শাজাহানপুরের রানীরহাট এলাকার মো. ঈমান আলী জানান, ভিক্ষাবৃত্তি করে স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে তার সংসার চলতো। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে দোকানঘর উপহার পাওয়ায় তিনি অনেক খুশি। এছাড়াও পুরোনো পেশা ভিক্ষাবৃত্তিতে ফিরে যাবেন না বলেও প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।

শুধু ঈমান আলীকে নয়, ভিক্ষুকদের বিকল্প কর্মসংস্থান ও পুনর্বাসন করার লক্ষ্যে বগুড়ায় আরও সাত ভিক্ষুককে দোকানঘর উপহার দেওয়া হয়েছে।

সদরের শের-ই-বাংলা এলাকার মোছা. নাজমা বেগম বলেন, আগে পথে পথে ভিক্ষা করে সংসার চলতো। প্রধানমন্ত্রীর থেকে দোকানঘর পেয়েছি। এখন স্বামী-সন্তান নিয়ে ভালোমতো চলতে পারবো।

সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে দুই বছর ধরে ঘরে পড়েছিলেন সদরের আকাশতারা এলাকার হারুনুর রশিদ। তার আগে ফতেহ আলী বাজার এলাকায় ফেরি করে চা-সিগারেট বিক্রি করতেন। কিন্তু দুর্ঘটনার জন্য মানুষের কাছে সাহায্য নিয়ে দিন পাড় করতে হয়েছে তাকে। দোকানঘর পেয়ে তিনি খুব আনন্দিত।

হারুনুর রশিদ বলেন, এলাকার লোকজন আমার দুরাবস্থা দেখে সমাজসেবা দপ্তরে পাঠিয়েছিল। তারপর সবার দোয়ায় দোকানঘর পেলাম। এখন আবার নতুন করে জীবন শুরু করতে পারবো।

এই কর্মসূচিতে অন্য উপকারভোগীরা হলেন- সদরের মালগ্রাম দক্ষিণপাড়ার মো. ফজর আলী, পূর্ব গোদারপাড়ার মো. মমিন হোসেন, জয়পুরপাড়ার মো. আরিফুল ইসলাম, নামুজা আদর্শপাড়ার মো. বাবুল মোল্লা, গাবতলী উপজেলার লাংলুহাটের মো. জাহিদুল ইসলাম, জয়ভোগা গ্রামের মো. আছমা, শাজাহানপুর উপজেলার কামারপাড়ার মো. আব্দুল জলিল।

জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ভিক্ষুকদের আমাদের সমাজের মূল স্রোতধারায় নিয়ে আসার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সমাজসেবা অধিদপ্তরের মাধ্যমে এ কর্মসংস্থান ও পুনর্বাসন কর্মসূচি গ্রহণ করেছেন। এ লক্ষ্যে চলতি বছর ২৭ জন ভিক্ষুককে পুনর্বাসনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ১০ জনকে দোকানঘরের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়।

দপ্তরটির উপপরিচালক আবু সাইদ মো. কাওছার রহমান বলেন, প্রতি ভিক্ষুককে পুনর্বাসনের জন্য ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ ছিল। ওই টাকার মধ্যে দোকানঘর সাজিয়ে প্রত্যেকের বাড়ি পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।

ভিক্ষুক পুনর্বাসন কর্মসূচি অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বগুড়ার জেলা প্রশাসক মো. সাইফুল ইসলাম। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন বগুড়ার পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবুর রহমান মজনু, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও জেলার সাবেক কমান্ডার মো. রুহুল আমিন বাবলু।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

আজকের দিন-তারিখ
  • শনিবার (রাত ৯:০৩)
  • ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • ২১শে মহর্‌রম, ১৪৪৬ হিজরি
  • ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (বর্ষাকাল)
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com