কী তাড়া ছিল যে এমন সিদ্ধান্ত নিলি : বোনকে হারিয়ে ভাইয়ের আহাজারি

চিকিৎসক হয়ে মানুষের সেবা করতে চেয়েছিলেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী জয়া কুন্ড। কিন্তু তার সেই স্বপ্নে বাধা হয়ে দাঁড়ায় হতাশা। আর সেখান থেকেই আত্মহত্যার পথ বেছে নেয় এ শিক্ষার্থী।

বুধবার (১৬ আগস্ট) সকাল পৌনে ১১টার দিকে ডা. আলিম চৌধুরী ছাত্রী নিবাসের তৃতীয় তলার ৪৫ নম্বর রুমে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় জয়ার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। সে এমবিবিএস পঞ্চম বর্ষের কে-৭৬ ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন।

জয়া কুন্ডর বড় ভাই পার্থ কুন্ড বলেন, আমার বোন বেশ কিছুদিন যাবত ডিপ্রেশনে (হতাশা) ভুগছিলেন। তাকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে কাউন্সিলিংও করানো হয়েছিল। আমার বোন অনেক মেধাবী ছিল। আমি বাংলাদেশ প্রকৌশলী বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র। সকালে খবর পেলাম আমার বোন গলায় ফাঁস দিয়ে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে আছে। পরে হাসপাতালে নিয়ে এলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

আরও পড়ুন- বাড্ডায় প্রেমিকার সঙ্গে ঝগড়ার পর যুবকের আত্মহত্যা

অনেকটা আক্ষেপের সুর নিয়ে তিনি বলেন, পড়ালেখা শেষ করে চিকিৎসক হয়ে জনগণের সেবা করতে চেয়েছিল আমার বোন। কিন্তু তার সেই স্বপ্ন আর পূরণ হলো না।

কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘কী তাড়া ছিল, যে কারণে এমন একটি সিদ্ধান্ত নিলি। কি এমন ঘটনা ঘটলো যে তাকে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করতে হলো? আমার বোন অনেক মেধাবী ছিল। সে বুয়েট ও ঢাকা ইউনিভার্সিটিতেও ভর্তির সুযোগ পেয়েছিল। কিন্তু তার স্বপ্ন ছিল চিকিৎসক হবে তাই সে ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তি হয়।’

মৃত জয়া কুন্ডু খুলনা ল্যাবরেটরী হাই স্কুল থেকে এসএসসি ও খুলনা বিএল কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। তার বাড়ি খুলনা জেলার খান জাহান আলী থানার ফুলবাড়ি কুয়েত রোড এলাকায়।

জয়ার রুমমেট পৃথুলা রায় বলেন, আমি লাবনী ও জয়া কুন্ড ডা. আলিম চৌধুরী হলের তৃতীয় তলার ৪৫ নম্বর রুমে থাকতাম। আমরা ঢাকা মেডিকেল কলেজের ২০১৮-২০১৯ বর্ষের শিক্ষার্থী।

তিনি জানান, সকালে লাবণী হল থেকে বের হয়ে যান। এরপর সকাল ১০টার দিকে জয়াকে রুমে রেখে আমিও বের হয়ে যাই। পরে জানতে পারি- জয়া রুমে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে ফাঁস দিয়েছেন। জয়া অনেক দিন থেকে ডিপ্রেশনে ভুগছিলেন কিন্তু কি কারণে ডিপ্রেশন, সে বিষয়টি আমরা জানতে পারিনি।

আরও পড়ুন- স্ত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যার পর নিজেকে শেষ করলেন স্বামী

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বলেন, সকাল সাড়ে দশটার দিকে রুমমেট লাবনী রায় লাবুকে ”আই লাভ ইউ লাবু” লিখে একটি মেসেজ দেয়। একই সময় তার মাকেও একটি মেসেজ দেয় জয়া। পরে তার রুমমেটের সন্দেহ হলে দ্রুত রুমে গিয়ে দেখে- ফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলে আছে জয়া।

এ বিষয়ে শাহবাগ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) এস এম এলিস মাহমুদ বলেন, আমরা খবর পেয়ে ঢাকা মেডিকেলে এসেছি। আমরা তার সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করছি। কোনো অভিযোগ না থাকায় মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, প্রাথমিকভাবে আমরা তার মৃত্যুর কোনো কারণ জানতে পারিনি। তবে সে বেশ কিছুদিন যাবত হতাশায় ভুগছিলেন বলে জানিয়েছে পরিবার। তদন্ত চলছে বিস্তারিত পরে জানানো হবে।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

আজকের দিন-তারিখ
  • শনিবার (রাত ৯:৪৭)
  • ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • ২১শে মহর্‌রম, ১৪৪৬ হিজরি
  • ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (বর্ষাকাল)
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com