তদন্তের নির্দেশপ্রাপ্ত হয়েও প্রতিবেদন দাখিল না করায় অসদাচারণের অভিযোগ গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ কামাল হোসেনকে এনে তিরস্কার দণ্ড দেওয়া হয়েছে৷ এর আগে ঠাকুরগাঁওয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন পুলিশের এই কর্মকর্তা৷
বুধবার (২৩ আগস্ট) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করা হয়৷ এর আগে গত ২১ আগস্ট প্রজ্ঞাপনে সই করেন মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. মোস্তাফিজুর রহমান৷
প্রজ্ঞাপনে বল হয়েছে, মুহাম্মদ কামাল হোসেন বর্তমানে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশে উপ-পুলিশ কমিশনার হিসেবে কর্মরত রয়েছে। এর আগে তিনি ঠাকুরগাঁওয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। সেসময় ঠাকুরগাঁও জেলার নারী কনস্টবল দিলরুবা আক্তারের বিরুদ্ধে চাকরিতে যোগদানকালে বিবাহের তথ্য গোপন করা এবং বিবাহ বহির্ভূত অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ে চাকরি শৃঙ্খলা পরিপন্থি কাজ করার অভিযোগ ওঠে। অভিযোগটি অনুসন্ধান করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য কামাল হোসেনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।
তিনি নির্দেশনাপ্রাপ্ত হয়েও বিষয়টি যথাযথ গুরুত্বারোপ করে অনুসন্ধান করেননি। এছাড়া তাগিদপত্র পাওয়ার পরেও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নিকট প্রতিবেদন দাখিল করেননি। পদোন্নতিসূত্রে ২০২১ সালের ১৮ মে ঢাকায় পুলিশ অধিদপ্তরে যোগদান করলেও অভিযোগটি কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করেননি। বরং নিজ খেয়ালখুশি মোতাবেক ওই বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রতিবেদনটি নিজ হেফাজতে রাখেন। এ অভিযোগে গত বছরের ১৭ জুলাই তাকে কারণ দর্শানো হয়। তিনি গত বছরের ২৫ আগস্টে কারণ দর্শানোর জবাব দাখিল করে ব্যক্তিগত শুনানির জন্য আবেদন করেন।
তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২২ সালের ৭ নভেম্বর ব্যক্তিগত শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। শুনানিকালে আনীত অভিযোগ, উভয় পক্ষের বক্তব্য, অভিযুক্ত কর্মকর্তার জবাব এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ দালিলিক প্রমাণাদি পর্যালোচনায় তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলোর গুরুত্ব ও প্রকৃতি বিবেচনায় এবং অভিযোগগুলো প্রমাণিত হলে গুরুদণ্ড হতে পারে প্রতীয়মান হওয়ায়, সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা ২০১৮ এর ৭(২)(ঘ) বিধি মোতাবেক রংপুর রেঞ্জ অফিসের অতিরিক্ত ডিআইজি এস এম রশিদুল হককে বিভাগীয় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়।
তদন্ত কর্মকর্তা এস এম রশিদুল হক সরেজমিনে তদন্ত শেষে চলতি বছরের ১৯ জুলাই তদন্ত প্রতিবেদন (ফাইন্ডিংস) দাখিল করেন। সেই তদন্ত প্রতিবেদনে তদন্তকারী কর্মকর্তা অভিযুক্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ওঠা অসদাচরণের অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে মর্মে মতামত দেন।
এমতাবস্থায়, উপ-পুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ কামাল হোসেনকে অপরাধের প্রকৃতি ও মাত্রা বিবেচনায় সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর ৩(খ) বিধি অনুযায়ী অসদাচরণের অভিযোগে একই বিধিমালার ৪(২) উপ-বিধি (১)(ক) উপবিধি অনুযায়ী তাকে তিরস্কার দণ্ড দেওয়া হলো।