মাদারীপুরে স্ত্রী ও তার স্বজনদেরকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসাতে গিয়ে অভিযোগকারী স্বামী নিজেই এখন জেল হাজতে। সোমবার (২১ আগস্ট) সকালে মাদারীপুর চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্ত আমির হোসেন (৪০) মাদারীপুর নতুন এলাকার মৃত আনোয়ার হোসেনের ছেলে।
আদালতের তথ্য মতে জানা যায়, মাদারীপুর নতুন শহরের বাসিন্দা আমির হোসেন তার নিজ স্ত্রী আঁখি বেগম, তার মা, বোন, দুলাভাই এবং দুই ভাগিনাকে মিথ্যা মামলা দিয়ে ফাঁসানোর জন্য নিজের মাথায় ব্যান্ডেজ বেঁধে জেলা দায়রা আদালতের বিচারকের সামনে দাঁড়ান। বিচারক মামুনুর রসিদ অভিযোগকারীর বক্তব্য শোনেন। অভিযোগকারী জানান, তার স্ত্রী আখি বেগম, তার মা, বোন, দুলাভাই এবং দুই ভাগিনারা মিলে তার মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে। এতে তার মাথায় ছয়টি সেলাই দেওয়া হয়েছে। পরে বিষয়টি বিচারকের কাছে সন্দেহজনক মনে হলে বিচারক অভিযোগকারীর মাথার ব্যান্ডেজ খুলতে বললে অভিযোগকারী বলেন ডাক্তার ব্যান্ডেজ খুলতে নিষেধ করেছে। তারপর বিচারক নির্দেশে তার অফিসের প্রসেস সার্ভার সোনা মিয়া মজুমদার অভিযোগকারী ব্যক্তির মাথার ব্যান্ডেজ খুলে দেখেন তাহার মাথায় কোনো কোপের বা কাটার চিহ্ন নেই।
পরবর্তীতে আদালতের বেঞ্চ সহকারী ওয়াহিদুজ্জামান বাদী হয়ে আমির হোসেনকে আসামি করে দণ্ডবিধি আইনের ২১১ ধারায় মামলা দায়ের করেন। চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মামুনুর রসিদ এটি আমলে নিয়ে আসামি আমির হোসেনকে জেল হাজতে পাঠানোর আদেশ প্রদান করেন।
ভুক্তভোগী অভিযোগকারীর স্ত্রী আখি বেগম বলেন, আমার স্বামীকে কেউ মারেনি। সে নিজেই ডাক্তারের কাছে গিয়ে মাথায় ব্যান্ডেজ করে আদালতে হাজির হয়েছে আমাদের নামে মামলা দেওয়ার জন্য। সে ঘর থেকে বের হয়ে বলে তোদেরকে আজকে জেলের ভাত খাওয়ামু। আজকে আমরা বিচারক স্যারের জন্য রক্ষা পেলাম। আল্লাহ যেন বিচারক স্যারকে ভালো রাখেন।এ ব্যাপারে মাদারীপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম কিবরিয়া হাওলাদার বলেন, আজকে একটি পরিবার মিথ্যা মামলায় থাকে বেঁচে গেল। অভিযোগকারী আমির হোসেনের মাথায় ব্যান্ডেজ দেখেই জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক স্যারের সন্দেহ হলো। একপর্যায়ে সন্দেহ থেকেই সত্য উদঘাটন হলো। তিনি প্রতারণা করতে এসে নিজেই ফেঁসে গেছেন।