ঝালকাঠির রাজাপুরে জ্বীনের ভয় দেখিয়ে ৪ লাখ ২০ হাজার টাকা ও সাড়ে ১১ ভরি সোনা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগের মামলায় ‘জ্বীনের রানী’ আছিয়া খাতুন ও তার পিতা মন্নাফ সিকদার এবং ভাই কাওসার সিকদারকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) বিকেলে গ্রেফতারকৃতদের ঝালকাঠি আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ। রাজাপুর উপজেলার মনোহরপুর গ্রামের সাবেক স্কুল শিক্ষক মৃত মোকসেদ আলীর স্ত্রী আম্বিয়া খাতুন বাদি হয়ে ৫ জনের নামে বৃহস্পতিবার রাতে রাজাপুর থানায় এ মামলা করলে পুলিশ রাতেই ৩ আসামীকে গ্রেফতার করে। অপর আসামী ফরিদ সিকদার ও ইব্রাহিমও জ্বীনের রানী আছিয়া খাতুনের ভাই।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, মামলার ১ নম্বর আসামী আছিয়া খাতুন নিজেকে কোরআনের হাফেজ দাবি করে বাবা মন্নাফের বাড়িতে এলাকার মহিলাদের নিয়ে কয়েক বছর ধরে তালিমের মাধ্যমে কোরআন শিক্ষাসহ বিভিন্ন হাদিসের মাধ্যমে ইসলামের দাওয়াত প্রচার করে এবং মাঝে মধ্যে তাহার কাছে জ্বীন আছে একথা বলে বিশ্বাস স্থাপন করে নানা অযুহাতে টাকা ও সোনার হাতিয়ে নিতে শুরু করে। পরবর্তীতে জ্বীনের ভয় দেখিয়েও টাকা ও সোনা হাতিয়ে নেয়। মামলার বাদি আম্বিয়া খাতুনকে বিভিন্নভাবে জ্বীনের ভয়ভীতি দেখিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে বিভিন্ন সময় জ্বীনের রানী হিসেবে এলাকায় পরিচিত আসিয়া খাতুন ৪ লাখ ২০ হাজার টাকা এবং সাড়ে ১১ ভরি সোনার গহনা হাতিয়ে নেয়।ভুক্তভোগী আম্বিয়া খাতুনের ছেলে অভিযোগ করে বলেন, তার মা আম্বিয়া খাতুন সহজ সরল হওয়ায় বিভিন্নভাবে জ্বীনের ভয়ভীতি দেখিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে আসামী আছিয়া খাতুন ৪ লাখ ২০ হাজার টাকা এবং সাড়ে ১১ ভরি সোনার গহনা হাতিয়ে নেয়। এছাড়া আসামীরা বাদিপক্ষের পরিবারের লোকজনকে জ্বীনের মাধ্যমে পাগল করিয়া রাস্তায় ঘুরাবে বলে এবং খুন জখমের হুমকি দেয়। এভাবে এলাকার বিভিন্ন লোকজনের কাছ থেকে টাকা ও সোনার গহন হাতিয়ে নিয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। কিন্তু জ্বীনের ভয়ে কেউই মুখ খুলছেন না।
তবে জ্বীনের রানী আছিয়া খাতুনের ভাই মামলার ৪ নম্বর আসামী ফরিদ সিকদার দাবি করেন বলেন, প্রতিপক্ষের কাছ থেকে সুদে নেওয়া ২০ হাজার টাকা লাভসহ ফেরত দেয়া হয়েছে, তালিমে কোরআন না পরানোয় ক্ষিপ্ত হয়ে পূর্ব শক্রতা ও পারিবারিক বিরোধের জের ধরে মিথ্যা মামলা দিয়ে তার পরিবারের ৫ সদস্যকে হয়রানি করা হচ্ছে। তাদের নামে জ্বীন হাজিরের নামে মিথ্যা অপবাদ দেওয়া হচ্ছে।
রাজাপুর থানার ওসি জাহিদ হোসেন বলেন, মামলার ৩ আসামীকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে এবং বাকি আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।