বিশ্বের সেরা ফুটবল দ্বৈরথগুলোর অন্যতম এল ক্ল্যাসিকো। দুই এল ক্ল্যাসিকো প্রতিদ্বন্দ্বী বার্সেলোনা ও রিয়াল মাদ্রিদ বছরে যা আয় করে, তা বিশ্বের ১৪ দেশের মোট আয়ের চেয়ে বেশি! গত অর্থবছরে বার্সা-রিয়ালের যৌথ আয় ছিল ১ হাজার ৫৯৬ মিলিয়ন ইউরো।
ইউরোপিয়ান ফুটবলে সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ছুটছে অর্থের পাগলা ঘোড়া। রাজস্ব আয়ে এক ক্লাব আরেক ক্লাবকে প্রতি বছরই টেক্কা দিচ্ছে। ক্লাব ফুটবলে অর্থ খরচের এ প্রতিযোগিতা জন্ম দিচ্ছে মজার সব রেকর্ড। হিসাবরক্ষণের বৈশ্বিক প্রতিষ্ঠান ডেলোয়েট অবলম্বনে সেসব তথ্য নিয়েই সাজানো হয়েছে এ প্রতিবেদন।
প্রশান্ত মহাসাগরের বুকে ছোট দ্বীপ দেশ টুভালু, যার আয়তন মাত্র ২৬ বর্গকিলোমিটার; জনসংখ্যা প্রায় ১১ হাজার। গেল অর্থবছরের হিসাব বলছে ছোট দ্বীপ দেশটির সামষ্টিক অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের (জিডিপি) চেয়ে বেশি আয় করেন সময়ের অন্যতম সেরা ফুটবলার লিওনেল মেসি!
বার্সেলোনার আর্জেন্টাইন সুপারস্টার সপ্তাহে ৫ লাখ ইউরো বেতন পান। বোনাস ও অন্যান্য আয় মিলিয়ে তা বিশাল অংকে দাঁড়ায়। এক হিসাবে দেখা গেছে, ২০১৯ সালে মেসির বার্ষিক আয় ছিল ১২৭ মিলিয়ন ইউরো; যা টুভালুর বার্ষিক জিডিপির প্রায় তিন গুণ! গেল বছর প্রশান্ত মহাসাগরীয় মাইক্রোনেশিয়া অঞ্চলের নাউরু প্রজাতন্ত্রের সমান আয় করেছেন ছয়বারের বিশ্বসেরা এ ফুটবলার।
বিশ্বের সেরা ফুটবল দ্বৈরথগুলোর অন্যতম এল ক্ল্যাসিকো। দুই এল ক্ল্যাসিকো প্রতিদ্বন্দ্বী বার্সেলোনা ও রিয়াল মাদ্রিদ বছরে যা আয় করে, তা বিশ্বের ১৪ দেশের মোট আয়ের চেয়ে বেশি! গেল অর্থবছরে বার্সা-রিয়ালের যৌথ আয় ছিল ১ হাজার ৫৯৬ মিলিয়ন ইউরো, যা সলোমন দ্বীপপুঞ্জ, সেন্ট ভিনসেন্ট, কমোরোস দ্বীপপুঞ্জ, সামোয়া, ভানুয়াতু, ডমিনিকা, সাঁউ তুম প্রিন্সিপে, টোঙ্গা, মাইক্রোনেশিয়া, পালাউ, কিরিবাতি, মার্শাল দ্বীপপুঞ্জ, নাউরু ও টুভালুর জিডিপির চেয়ে অনেক বেশি।
গেল অর্থবছরের মানি লিগে রিয়ালকে টপকে শীর্ষে ছিল বার্সা। কাতালান জায়ান্টদের আয় ছিল ৮৪০ দশমিক ৮ মিলিয়ন ইউরো। মাদ্রিদ
পরাশক্তিরা আয় করেছে ৭৫৭ দশমিক ৫ মিলিয়ন ইউরো। গত অর্থবছরের চেয়ে এবার রিয়াল ৬৫ মিলিয়ন ইউরো বেশি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। অন্যদিকে বার্সেলোনার লক্ষ্য ৫৭ মিলিয়ন বেশি আয় করা।
বিশ্বজুড়ে দুই স্প্যানিশ জায়ান্টের ৬৫০ মিলিয়ন সমর্থক রয়েছে। এ সমর্থকরাই ক্লাব দুটির আয়ের অন্যতম উৎস। এমন বিভিন্ন উৎস থেকে বার্সা-রিয়াল খেলোয়াড়রা দলকে যে অর্থ এনে দেন, তা কামাই করতে পারেন না সলোমন দ্বীপপুঞ্জের ৬ লাখ ৪২ হাজার নাগরিকও। ২৮ হাজার ৪০০ বর্গকিলোমিটারের ওশেনিয়া অঞ্চলের দেশটির গেল অর্থবছরের আয় ছিল ১ হাজার ৩৬০ মিলিয়ন ইউরো, যা বার্সা-রিয়ালের সম্মিলিত আয়ের চেয়ে ২৩৮ মিলিয়ন ইউরো কম।
নতুন অর্থবছরে স্প্যানিশ দুই জায়ান্ট আয়ের যে লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছে, তা অর্জিত হলে সৃষ্টি হবে নতুন মাইলফলক। কারণ বার্সার গত অর্থবছরের আয় ছিল ক্লাবের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি। লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হলে আয়ের দিক থেকে হয়তো আরো কিছু দেশকে ছাড়িয়ে যাবে ক্লাব দুটি।
নানা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বার্সা ও রিয়ালের সম্মিলিত ফলোয়ার ৪৭৮ দশমিক ৫ মিলিয়ন। টেলিভিশনে ক্লাব দুটির ফুটবল দ্বৈরথ দেখার রেকর্ডও দিন দিন বড় হচ্ছে। সর্বশেষ এল ক্ল্যাসিকো দেখেছে বিশ্বের ৬৫০ মিলিয়ন দর্শক। টেলিভিশনের পাশাপাশি স্প্যানিশ লিগের ম্যাচগুলো বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলের দর্শকরা ফেসবুকে সরাসরি দেখতে পারছে।
ম্যাচের দিন ছাড়াও নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ ব্যয় করে বার্সার মাঠ ন্যু ক্যাম্প ও রিয়ালের মাঠ সান্তিয়াগো বার্নাব্যু দেখার সুযোগ রয়েছে দর্শকদের। বার্সার হোম ভেনু দেখতে ২৬ ইউরো ও রিয়ালের গ্রাউন্ড দেখতে ২৫ ইউরো গুনতে হবে। গড়ে প্রতি বছর দুই ক্লাবের ভেনু পরিদর্শনে যায় ২ দশমিক ৩ মিলিয়ন দর্শনার্থী, যা স্লোভাকিয়া (২.২ মিলিয়ন), নাইজেরিয়া (১.৯ মিলিয়ন), লেবানন (১.৮ মিলিয়ন) ও একুয়েডর (১.৭ মিলিয়ন) ভ্রমণ করা পর্যটকদের চেয়ে বেশি! ডেলোয়েট