সারাদেশের মতো চট্টগ্রাম মহানগর ও উপজেলার প্রতিটি স্কুলে শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দিয়ে বর্ণাঢ্যভাবে পালন করা হয়েছে বই উৎসব। নতুন বছরের প্রথম দিনে হাতে বই পেয়ে উচ্ছ্বসিত শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের এমন আনন্দে অভিভাবকরাও দারুণ খুশি।
বুধবার সকালে প্রাইমারি টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউট (পিটিআই) কলেজে প্রাথমিক পর্যায়ে বই বিতরণের উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার আব্দুল মান্নান। পরে সকাল ১১টায় নগরের ডা. খাস্তগীর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে মাধ্যমিক পর্যায়ে বই উৎসব উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মো. ইলিয়াস হোসেন। চট্টগ্রাম বিভাগের উপ-পরিচালক মো. সুলতান মিয়ার সভাপতিত্বে এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) আবু হাসান সিদ্দিক, জেলা শিক্ষা অফিসার মো. জসিম উদ্দিন, ডা. খাস্তগীর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক শাহেদা আক্তার, পিটিআই সুপার কামরুন্নাহার, প্রাথমিক শিক্ষা চট্টগ্রাম বিভাগের সহকারী পরিচালক রাশেদা বেগম, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ শহীদুল ইসলাম, পিটিআই’র সহকারী সুপার নাসিমা বেগম, সহকারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. জহির উদ্দিন চৌধুরী, বিভাগীয় প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের শিক্ষা অফিসার তাপস কুমার পাল প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সহকারী জেলা শিক্ষা অফিসার হৃষিকেশ শীল।
বিভাগীয় কমিশনার আব্দুল মান্নান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন শিক্ষাবান্ধব সরকার জানুয়ারি মাসের প্রথম দিনেই শিক্ষার্থীদের হাতে বই দিতে সক্ষম হয়েছে। শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় মনোযোগী হওয়ার জন্য মিড-ডে মিল চালু করেছে। এতে ঝরে পড়ার হার কমে স্কুলগামী শিশুদের সংখ্যা বাড়বে। সন্তানদের হাতে বই তুলে দেয়া অসাধারণ মহতি প্রয়াস। বিগত এক দশক ধরে দেশে এমন একটি বিপ্লব ঘটে চলেছে যা সারা বিশ্বে প্রশংসিত হচ্ছে।’
জেলা প্রশাসক মো. ইলিয়াস হোসেন বলেন, বর্ণাঢ্য আয়োজনে চট্টগ্রামেও বই উৎসব পালন করা হয়েছে। নতুন বই পেয়ে শিক্ষার্থীদের আনন্দে উদ্ভাসিত হতে দেখে খুবই ভালো লাগছে। শিক্ষার্থীদের মতো উচ্ছ্বসিত দেখা গেছে অভিভাবকদেরকেও।
বুধবার সকালে নগরের অংকুর সোসাইটি স্কুলে শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন। এসময় মেয়র বলেন, সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্টার কারণেই বছরের প্রথম দিনেই শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেওয়া সম্ভব হয়েছে। শিক্ষার্থীদের হাতে বিনামূল্যে সকল পাঠ্যপুস্তক তুলে দেওয়াটি সরকারের অনেক বড় সাফল্য। বই উৎসবকে এখন ঐতিহ্যে পরিণত করেছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শহীদুল ইসলাম জানান, এবার প্রাথমিক পর্যায়ে মোট ৪৮ লাখ ১৪ হাজার ২০৪টি বই শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেওয়া হবে। জেলার ৪ হাজার ৩৮৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মোট ১০ লাখ ১৮ হাজার ২২০ জন শিক্ষার্থী নতুন বই পাবে।
মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. জসিম উদ্দিন জানান, মাধ্যমিক পর্যায়ে জেলার মোট ১১ লাখ ৮৭ হাজার ৭৪৩ শিক্ষার্থীর হাতে নতুন বই তুলে দেওয়া হবে। মহানগরের ৬টি থানা ও ১৪টি উপজেলাসহ জেলার মোট ২ হাজার ৬৬টি মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ১ কোটি ৫৩ লাখ ৮৭ হাজার ৭১৬টি বই বিতরণ করা হবে। বুধবার সকাল থেকেই নতুন বছরের প্রথম দিনে নগরজুড়েই বই উৎসবের নানা দৃশ্য দেখা গেছে।