কয়েকমাস ধরে পুড়ছে অস্ট্রেলিয়া। এরই মধ্যে দেশটিতে গেল কিছুদিনের দাবানলের তীব্রতায় ২১ জনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে। এখনো নিখোঁজ রয়েছেন আরো কয়েকজন। এবারের দাবানলে দেশটির দক্ষিণের অঙ্গরাজ্য নিউ সাউথ ওয়েলসেই প্রায় ৫০ কোটি বণ্য জীবজন্তু প্রাণ হারিয়েছে বলে জানিয়েছে সিডনির পরিবেশবিজ্ঞানীরা। ভয়াবহ এই বিপর্যয়ের মধ্যে বৃষ্টির দেখা মিলেছে। গতকাল থেকে হওয়া বৃষ্টিতে তাপমাত্রাও কিছুটা কমেছে। তবে দেশটির আবহাওয়াবিদরা সতর্ক করে বলেছেন, আগামীকাল মঙ্গলবার থেকে তাপমাত্রা বাড়তে পারে।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, নিউ সাউথ ওয়েলসের পূর্বাঞ্চলের সিডনি থেকে মেলবোর্ন পর্যন্ত হালকা বৃষ্টিপাত হয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটি স্থানে মুষলধারে বৃষ্টি হয়েছে।
যেসব স্থানে আগুন জ্বলছে সেগুলো কিছু কিছু অংশে ২৪ ঘণ্টায় ১৫ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
এদিকে কিছুটা স্বস্তির বৃষ্টিতে দক্ষিণ উপকূলীয় শহরগুলো থেকে ঘর ছেড়ে যাওয়া বাসিন্দারা ফিরতে শুরু করেছেন। সিডনি মর্নিং পত্রিকার খবরে বলা হয়েছে, বেগা, বারমাগুই, তাতরা, মেরিমবুলা, পামবুলা এবং ইডেন শহর থেকে দাবানলের ফলে ঘর ছেড়ে যাওয়া মানুষরা ফিরে আসছেন। নিউ সাউথ ওয়েলস ফায়ার সার্ভিসের মুখপাত্র মার্টি ওয়েববার বলেছেন, বৃষ্টির ফলে তাপমাত্রা কিছুটা কমেছে। তাই ওই এলাকার বাসিন্দাদের ঘরে ফিরতে দেওয়া হয়েছে।
তবে তিনি সতর্ক করে বলেছেন, ‘আমরা এখনো শঙ্কামুক্ত নই; কিন্তু বিভিন্ন স্থানে লাগা আগুনগুলো কিছু প্রশমিত হয়েছে। এটা আমাদের অগ্নি নির্বাপনের কাজকে সহজ করেছে।’
ছয়টি অঙ্গ রাজ্য নিয়ে গঠিত বিশ্বের ৬ষ্ঠ বৃহত্তম দেশ অস্ট্রেলিয়া; অঙ্গরাজ্যগুলো হলো নিউ সাউথ ওয়েলস, কুইন্সল্যান্ড, দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়া, তাসমানিয়া, ভিক্টোরিয়া, ও পশ্চিম অস্ট্রেলিয়া। এর রাজধানী ক্যানবেরা এবং বৃহত্তম শহর দুটোই দক্ষিণের অঙ্গরাজ্য নিউ সাউথ ওয়েলস। ২০০৯ সালে এক ভয়াবহ দাবানলে নিউ সাউথ ওয়েলসের পার্শ্ববর্তী ভিক্টোরিয়া জুড়ে ভয়াবহ আগুন ছড়িয়ে পড়েছিল। যেটা অস্ট্রেলিয়ার ইতিহাসে ব্ল্যাক সেটারডে বুশফায়ার নামে পরিচিত। সেই আগুনের তীব্রতা ছড়িয়ে পড়েছিল পাশ্ববর্তী আরো দুটি অঙ্গ রাজ্যে। এ ঘট্নার ঠিক এক দশক যেতে না যেতেই ফের ভয়াবহ এই অগ্নিকাণ্ডের শিকার হলো দ্বীপ মহাদেশের বৃহত্তম রাষ্ট্রটি।
কয়েক মাস ধরে চলা দাবানলে সম্প্রতি ইতিহাসের সবচেয়ে বেশী তাপমাত্রার রেকর্ড করা হয়েছে অস্ট্রেলিয়ায়। আগুনের বন্যপ্রাণি ও মানুষের প্রাণহানির পাশাপাশি মানুষের বিপুল সংখ্যক ঘরবাড়িও পুড়ে গেছে।