করোনাভাইরাসের লক্ষণ ও প্রতিরোধে করণীয়

চীনে উৎপত্তি হওয়া করোনাভাইরাস সম্পর্কে এখনও বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি। তবে বিজ্ঞানীদের মতে, কোনো পশু থেকে রোগটি মানুষের শরীরে ছড়িয়েছে। এরপর এ সংক্রমণ ছড়িয়েছে মানুষ থেকে মানুষে। আবার অনেকে ধারণা করছেন, কিছু সামুদ্রিক প্রাণী, যেমন বেলুগা জাতীয় তিমি করোনাভাইরাসের বাহক হতে পারে।

করোনাভাইসের কীভাবে বুঝবেন, এর লক্ষণ কী তা নিয়ে সবাই জানতে চান। তাই এসব বিষয় বিবেচনা করে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলে এ রোগের লক্ষণ, প্রতিকার ও প্রতিরোধে সতর্কতামূলক যেসব ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায় তা তুলে ধরা হলো-

করোনাভাইরাসের লক্ষণ: জ্বর দিয়ে এ রোগের লক্ষণ শুরু হয়। জ্বরের সঙ্গে সর্দি, শুকনো কাশি, মাথাব্যথা, গলাব্যথা ও শরীরে ব্যথা থাকতে পারে। এক সপ্তাহের মধ্যে শ্বাসকষ্ট দেখা দিতে পারে। সাধারণ ফ্লুর মতোই হাঁচি-কাশির মাধ্যমে এই ভাইরাস ছড়াতে পারে। করোনাভাইরাস মূলত শ্বাসতন্ত্রে সংক্রমণ ঘটায়। লক্ষণগুলো হয় অনেকটা নিউমোনিয়ার মতো। কারও ক্ষেত্রে ডায়রিয়াও হতে পারে।

মানুষের দেহে ভাইরাসটি সংক্রমণের পর ১ থেকে ১৪ দিনের মধ্যে লক্ষণ দেখা দিতে পারে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভালো হলে এ রোগ কিছুদিনের মধ্যে এমনতিইে সেরে যায়। কিন্তু কিডনি, ডায়াবেটিস, হৃদযন্ত্র কিংবা ফুসফুসের রোগীদের ক্ষেত্রে মারাত্মক জটিলতা দেখা দিতে পারে। একই সঙ্গে এটি নিউমোনিয়া, রেসপিরেটরি ফেইলিওর অথবা কিডনি অকার্যকারিতার দিকে মোড় নিতে পারে। এতে করে আক্রান্ত ব্যক্তির মৃত্যু হতে পারে।

যেভাবে নিরাপদ থাকবেন: করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে জনসাধারণকে সতর্ক থাকতে স্বাস্থ্য বিভাগ বেশকিছু পরামর্শ  দিয়েছে। এগুলো হলো- ঘরের বাইরে মাস্ক ব্যবহার, গণপরিবহন এড়িয়ে চলার চেষ্টা, প্রচুর ফলের রস এবং পর্যাপ্ত পানি পান, ঘরে ফিরে সাবান দিয়ে হাত ধোয়া, কিছু খাওয়া কিংবা রান্নার আগে ভালো করে ধুয়ে নেওয়া, ডিম কিংবা মাংস রান্নার আগে ভালোভাবে সিদ্ধ করা, ময়লা কাপড় দ্রুত ধুয়ে ফেলা, নিয়মিত ঘর ও কাজের জায়গা পরিস্কার রাখা এবং অপ্রয়োজনে ঘরের দরজা-জানাল খুলে না রাখা।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন অনুষদের সাবেক ডিন অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ বলেন, নতুন ছড়িয়ে পড়া এই ভাইরাসটি প্রতিরোধে কোনো টিকা কিংবা ভ্যাকসিন এখনও আবিস্কার হয়নি। ফলে এমন কোনো চিকিৎসা এখনও চিকিৎসকদের জানা নেই, যা এই রোগ প্রতিরোধ করতে পারে। এই ভাইরাস থেকে রক্ষা পাওয়ার একমাত্র উপায় হলো, ইতোমধ্যে যারা আক্রান্ত হয়েছেন তাদের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলা।

উল্লেখ্য, করোনাভাইরাসের উৎপত্তিস্থল চীনের হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহানের একটি বাজারে। ওই বাজারে সামুদ্রিক খাবারসহ মুরগি, বাদুড়, খরগোশ, সাপ পাওয়া যেত। এসব প্রাণীর মাধ্যমে করোনাভাইরাস মানুষের দেহে সংক্রমিত হতে পারে। একটি গবেষণায় বলা হয়েছে, সাপ থেকে মানুষের দেহে সংক্রমিত হয়েছে এ ভাইরাস।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

আজকের দিন-তারিখ
  • শুক্রবার (রাত ৮:৪৮)
  • ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • ১৭ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি
  • ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (গ্রীষ্মকাল)
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com