বিভাগীয় শহর রাজশাহীতে রোববার (১৫ মার্চ) পর্যন্ত কোনো করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়নি। তবে রাজশাহী বিভাগের আট জেলায় রোববার পর্যন্ত ৯৫ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। যদিও তাদের কারো শরীরেই করোনা ভাইরাসের উপসর্গ মেলেনি। এরপরও স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা বাড়তি সতর্কতার অংশ হিসেবে তাদের হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার নির্দেশনা দিচ্ছেন।বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্যানুযায়ী রোববার পর্যন্ত রাজশাহী জেলায় ৪ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। এছাড়া নাটোরে ১১, চাঁপাইনবাবগঞ্জে ১৭, নওগাঁয় ২৮, বগুড়ায় ২০, পাবনায় ১০, জয়পুরহাটে ৪ এবং সিরাজগঞ্জে ১ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। ১৪ দিন তারা স্বাস্থ্য বিভাগের পর্যবেক্ষণে থাকবেন।
রাজশাহী বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. গোপেন্দ্রনাথ আচার্য্য বলেন, হোম কোয়ারেন্টাইনে যাদের পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে তারা সবাই বিদেশ থেকে এসেছেন। বিভিন্ন মাধ্যমে তথ্য পেয়ে তাদের হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। তারা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছেন। তবে এ পর্যন্ত কারও মাঝে করোনার উপসর্গ দেখা যায়নি।
তবে কারও শরীরে করোনার উপসর্গ পাওয়া গেলে তাকে আর বাড়িতে রাখা হবে না জানিয়ে ডা. গোপেন্দ্রনাথ আচার্য্য বলেন, যারা কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন তাদের উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। উদ্বিগ্ন না হয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে বলা হয়েছে। আর এরইমধ্যে করোনা পরিস্থিতি ব্যবস্থাপনায় তিনটি মেডিক্যাল টিম গঠন করা হয়েছে।
এছাড়া করোনা ভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য একটি সম্পূর্ণ হাসপাতালসহ (সংক্রামণব্যাধি হাসপাতাল) আরও ৭টি সেবাকেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। রামেক হাসপাতালে ইতোমধ্যেই পাঁচ বেডের একটি করোনা ওয়ার্ড খোলা হয়েছে। আগাম প্রস্তুতি হিসেবে হাসপাতালে আইসোলেশনের ব্যবস্থাও করা হয়েছে।
আশ-পাশের জেলার মানুষের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে প্রস্তুত রাখা হয়েছে বিভিন্ন হাসপাতাল ও প্রতিষ্ঠান। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে নেওয়া হয়েছে নানা উদ্যোগ।
এদিকে, রাজশাহী জেলা প্রশাসক মো. হামিদুল হককে সভাপতি ও রাজশাহী জেলা সিভিল সার্জন ডা. এনামুল হককে সদস্য সচিব করে ১১ সদস্যের একটি কমিটি গঠন হয়েছে। উপজেলা পর্যায়ে ইউএনওদের সমন্বয়ে পৃথক কমিটি করা হয়েছে।
পুরো রাজশাহী বিভাগে করোনা আক্রান্তদের জন্য অন্তত ৩৫০ শয্যার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ স্থলবন্দরে হ্যান্ড থার্মাল ব্যবহার করা হচ্ছে। রাজশাহীতে করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় সংক্রমণব্যাধি (আইডি) হাসপাতালে ৩০ শয্যার একটি ওয়ার্ড প্রস্তুত করা হয়েছে।
রামেক হাসপাতালের আউটডোরে বিশেষ ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বয়ে আরও দুইটি পৃথক টিম গঠন করা হয়েছে। সরাসরি চিকিৎসায় সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক-নার্সদের জন্যও নেওয়া হয়েছে বাড়তি সতর্কতা।
আর রাজশাহীর তিন স্টেডিয়ামকে কোয়ারেন্টাইন সেন্টার ঘোষণা করা হয়েছে। কোয়ারেন্টাইন করার স্টেডিয়াম তিনটি-মহানগরীর সপুরায় থাকা জেলা মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি স্টেডিয়াম, তেরোখাদিয়ায় অবস্থিত শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামান বিভাগীয় স্টেডিয়াম এবং তার পাশেই থাকা মহিলা ক্রীড়া কমপ্লেক্স স্টেডিয়াম।