বাঁচানো গেল না ‘মৃত’ ঘোষণার পর নড়ে ওঠা সেই নবজাতককে

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত ঘোষণার পর বাড়ি নেওয়ার পথে নড়ে ওঠা সেই নবজাতকটি অবশেষে মারা গেছে। এনআইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) রাত ১২টা ১৫ মিনিটের দিকে নবজাতককে মৃত ঘোষণা করা হয়। 

এর ১৩ ঘণ্টা আগে তাকে প্রথমবার মৃত ঘোষণা করেছিলেন চিকিৎসক। পরে বাড়ি নেওয়ার পথে নড়ে ওঠে শিশুটি। বিষয়টি টের পেয়ে তাকে আবারও হাসপাতালে এনে ভর্তি করান স্বজনরা। এ ঘটনায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।

জেলার ত্রিশাল উপজেলার কানিহারী ইউনিয়নের বাড়মা গ্রামের মাদরাসা শিক্ষক সাইফুল ইসলামের স্ত্রী হালিমা খাতুন গত রোববার (৬ আগস্ট) ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্বাভাবিক প্রসবে (নরমাল ডেলিভারি) কন্যা সন্তানের জন্ম দেন। কিন্তু নবজাতকের ওজন ছিল মাত্র ৯০০ গ্রাম। ২৬ সপ্তাহে জন্ম নেওয়া নবজাতককে এনআইসিইউতে (নবজাতক পরিচর্যা কেন্দ্রে) ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার বেলা ১১টায় মৃত ঘোষণা করে মৃত্যু সনদ দেন নিওনেটোলজি বিভাগের সহকারী রেজিস্ট্রার। মৃত্যু সনদে উল্লেখ করা হয়, অত্যন্ত কম ওজন ও সময়ের পূর্বে জন্ম নেওয়ায় মৃত্যু হয়েছে।

>>> নবজাতক সন্তানের মরদেহ নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে অবাক বাবা!

নবজাতকের মৃত্যুর খবর পেয়ে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে নবজাতকের মরদেহ গ্রহণ করে নিয়ে যান বাবা সাইফুল। সিএনজিচালিত অটোরিকশা দিয়ে যাওয়ার পথে সদরের চুরখাই এলাকায় যেতেই নবজাতক নড়াচড়া করে উঠে এবং নিঃশ্বাস নিতে শুরু করে। ওই অবস্থায় সিএনজিচালিত অটোরিকশা ঘুরিয়ে ফের দুপুর ২টার দিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয় তাকে। সেখানে নেওয়া হলে নবজাতককে হাইফো অক্সিজেনসহ প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিয়ে এনআইসিইউতে স্থানান্তর করে জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. মাহবুব হোসাইন। এরপর এনআইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার রাত ১২টা ১৫ মিনিটের দিকে নবজাতককে মৃত ঘোষণা করা হয়।

শিশুটির বাবা সাইফুল ইসলাম বলেন, দ্বিতীয়বার ভর্তির পর চিকিৎসকরা খুব গুরুত্বসহকারে চিকিৎসা করেছেন। অনেকটা সময় অক্সিজেনের বাইরে ছিল বাচ্চা। আমি যা হারাবার হারিয়েছি। কারো বিচার চাই না। তবে আর কারও সঙ্গে যেন এমনটি না হয়।

এদিকে এ ঘটনায় বিষয়টি তদন্তের জন্য তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. জাকিউল ইসলাম।

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিওনেটোলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, এক হাজার গ্রামের নিচে ওজনের বাচ্চা বাঁচার রেকর্ড আমাদের এখানে নেই। রাত ১২টার পর নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে। কারো গাফিলতি ছিল কি না তা জানা জন্য তদন্ত কমিটি গঠন করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

আজকের দিন-তারিখ
  • রবিবার (রাত ৮:৪৩)
  • ৫ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • ২৬শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি
  • ২২শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (গ্রীষ্মকাল)
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com