দেশে স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে ডেঙ্গু। মশাবাহিত এ জ্বরে আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত প্রাণহানির সংখ্যা পাঁচশ পেরিয়েছে। ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ায় এ জ্বরে আক্রান্ত রোগীতে কানায় কানায় পূর্ণ হাসপাতালগুলো। আর এই সুযোগকে পুঁজি করে হাসপাতালের গেট ও ফুটপাতে রমরমা ব্যবসায় মেতেছেন ফল বিক্রেতারা। ডাব ও মাল্টা থেকে শুরু করে প্রতিটি ফলের দামেই যেন আগুন লেগেছে। ডেঙ্গু রোগীদের জন্য এক প্রকার বাধ্য হয়ে চড়া দামেই ফল কিনতে হচ্ছে স্বজনদের।
যদিও বিক্রেতাদের দাবি, দেশে ডেঙ্গু পরিস্থিতির অবনতির কারণে রোগীদের অন্যতম ‘প্রাকৃতিক পথ্য’ হিসেবে সুপরিচিত ডাবের চাহিদা বেড়েছে। আর এতে ডাবের বাজারে সংকট তৈরি হয়েছে; ফলে দামও বেড়েছে।
জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট এবং শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সংলগ্ন ফুটপাতে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে ডাব, কমলা ও মাল্টাসহ নানারকম ফলমূল। সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিটি ডাবের দামও রাখা হচ্ছে বাজারের তুলনায় দ্বিগুণ পর্যন্ত। সাধারণত যে ডাবগুলো বিক্রি হতো ৮০ থেকে ১০০ টাকায়, বর্তমানে সেই ডাব কিনতে গুনতে হচ্ছে ১৪০ টাকা থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত।
আরও পড়ুন>>ডেন-২ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ৭৫ ভাগ রোগী
শুধু ডাব নয়, প্রতিটি ফলের দামেই যেন আগুন। আপেল বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকায়, যা সাধারণত বিক্রি হয় ১৮০ থেকে ২০০ টাকায়। এছাড়া মালটা বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২৫০ টাকায়, যা সাধারণত বিক্রি হয় ১৫০ থেকে ১৮০ টাকায়।
এদিকে ভয়াবহ ডেঙ্গু পরিস্থিতির সুযোগ যেন হাতছাড়া করতে চাইছেন না স্যালাইন ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোও। নির্ধারিত দামের চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি দামে স্যালাইন বিক্রি করছে হাসপাতালের আশপাশের ফার্মেসিগুলো। এতে করে বিপাকে পড়েছেন দারিদ্র্য রোগী ও তাদের স্বজনরা।
জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট এবং শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সংলগ্ন একাধিক ফার্মেসিতে গিয়ে দেখা যায়, ডেঙ্গু সংক্রমণ বৃদ্ধির কারণে স্যালাইনের সংকট রয়েছে। এছাড়া কিছু ফার্মেসিতে ৯০ টাকার স্যালাইন বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকায়।
স্যালাইন নিয়ে গোলকধাঁধায় ওষুধ বিক্রয়কর্মীরা
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন নিশাত মেডিসিনের বিক্রয়কর্মী বলেন, আমরা তো স্যালাইন পাচ্ছিই না। কোম্পানিগুলোকে বারবার চাহিদা দিয়েও পাচ্ছি না। অনেক সময় এক কার্টনের অর্ডার দিলে ১০ পিস স্যালাইন দিয়ে যায়। রোগীরা এলে তাদের চাহিদা মতো দিতে পারছি না। কেউ কেউ এই সুযোগে দাম বাড়িয়ে বেশি দামে বিক্রি করছে।
আরও পড়ুন>>ডেঙ্গু না কমার পেছনে মশা নিধনে ব্যর্থতা দায়ী : স্বাস্থ্যমন্ত্রী
তিনি বলেন, আমি নিজে একটি দোকানে গেলাম একটা ডিএন স্যালাইনের জন্য, যার স্বাভাবিক মূল্য ১০০ টাকা। কিন্তু আমাকে সেটি কিনে আনতে হয়েছে ১২০ টাকা দিয়ে। আমি নিজেই একজন বিক্রেতা, অথচ আমাকে বলে যে নিলে নেন, না নিয়ে বাদ দেন। যে স্যালাইনের দাম ৮০ টাকা, সেটি আমাকে কিনে আনতে হচ্ছে ১৫০ টাকা দিয়ে। কিছু তো করার নেই।
সংকটের কারণ জানতে চাইলে ওই বিক্রয়কর্মী বলেন, মূল সমস্যাটা আসলে কী তা বুঝতে পারছি না। তবে কোম্পানিগুলোর কাছে কারণ জানতে চাইলে তারা বলে সাপ্লাই নেই। এর বাইরে আমাদেরও কিছু বলার নেই। তারা যা বলে আমাদেরও তাই বিশ্বাস করতে হবে।
ইত্যাদি মেডিসিনের বিক্রয়কর্মী মো. রবিন বলেন, অন্যান্য ওষুধের সংকট না থাকলেও স্যালাইনের সংকট বেশি হচ্ছে। ঠিকমতো সরবরাহ করা হচ্ছে না। গত ৪/৫ দিন যাবৎ আমি স্যালাইনের অর্ডার দিচ্ছি, কিন্তু পাচ্ছি না। নরমাল স্যালাইন, ডিএনএ স্যালাইন, ডিএ স্যালাইন কোনোটাই ঠিকমতো পাওয়া যাচ্ছে না। কিছু পেলেও কোম্পানিগুলোই আমাদের থেকে বেশি দাম রাখছে। সুতরাং বাধ্য হয়েই আমাদের বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।
আরও পড়ুন>>ডেঙ্গু থেকে সুরক্ষায় খেতে পারেন যে খাবারগুলো
তিনি বলেন, আসলে কী কারণে সংকট হচ্ছে তা বুঝতে পারছি না। দেশে তো আর ওষুধ কোম্পানি একটি-দুইটি না। সব কোম্পানির স্যালাইন সরবরাহ একসঙ্গে বন্ধ হয়ে গেছে, এটা বিস্ময়কর। হতে পারে এর পেছনে বড় সিন্ডিকেট জড়িত আছে। একটি কোম্পানি না হয় স্যালাইন সরবরাহ করে পেরে উঠছে না, কিন্তু অন্য কোম্পানিগুলো কী করছে? আমরা তো কোনো কোম্পানিরই স্যালাইন পাচ্ছি না।
ডেঙ্গুকে পুঁজি করে সক্রিয় ডাব সিন্ডিকেট
ডেঙ্গুর প্রকোপকে পুঁজি করে নগরী ও আশপাশের এলাকায় সক্রিয় হয়ে উঠেছে ডাব সিন্ডিকেট। বিশেষ করে হাসপাতাল সংশ্লিষ্ট এলাকায় বেশি বেপরোয়া হয়েছে উঠেছে সিন্ডিকেটটি।
সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছেন ডেঙ্গু আক্রান্ত স্বামী। ডাব খেলে দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবেন— এমন বিশ্বাসে হাসপাতাল গেট থেকে ডাব কিনতে এসেছেন রুবিনা আক্তার। ঢাকা পোস্টকে তিনি বলেন, ১৪০ টাকা দিয়ে একটা ছোট ডাব কিনেছি, যার দাম সর্বোচ্চ হলেও ১০০ টাকা হওয়া উচিত। হাসপাতালের পাশে হওয়ায় দামটা তারা বেশিই নিচ্ছে।
রুবিনা বলেন, দেশে ডেঙ্গু সংক্রমণ বাড়ছে। ফলে রোগীদের জন্য বেশি বেশি পরিমাণে ডাব কিনতে হচ্ছে। আমার স্বামী ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ায় ডাব কিনতে এসেছি। দাম যতই হোক, ডাব তো কিনতেই হবে, আর এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে দাম বাড়িয়েছে বিক্রেতারা।
আরও পড়ুন>>মশা নিধনে ব্যবহৃত কীটনাশক ‘প্রতিরোধী’ হয়ে উঠছে
চড়া দামে ডাব কিনেছেন আরেক রোগীর স্বজন জাহাঙ্গীর আলম। ক্ষোভ জানিয়ে তিনি বলেন, আমার এক আত্মীয় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। তাকে দেখতে এসেছি, তাই ভাবলাম তার জন্য দুটি ডাব নিয়ে যাই। হাসপাতালের গেট থেকে দুটি ডাব কিনেছি, প্রতিটির দাম পড়েছে ২০০ টাকা করে। জীবনের প্রথম এত দামে ডাব কিনলাম।
তিনি বলেন, এত চড়া দামে সাধারণ মানুষের পক্ষে ডাব কিনে খাওয়া সম্ভব নয়। বাধ্য হয়ে যাদের ডাব কিনতে হচ্ছে, মূলত তাদের কাছ থেকে বেশি দাম নিচ্ছে বিক্রেতারা।
যে অজুহাত দিলেন ডাব বিক্রেতারা
সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের সামনে ভ্যানে ডাব বিক্রি করেন মো. রমজান আলী। সবচেয়ে ছোট সাইজের একটি ডাব ১০০ থেকে ১২০ টাকা দামে বিক্রি করছেন তিনি। মাঝারি সাইজের ডাব বিক্রি করছেন ১৫০ থেকে ১৮০ টাকায় এবং বড় সাইজের ডাব বিক্রি করছেন ২০০ থেকে ২৫০ টাকায়।
তিনি বলেন, কিছুদিন যাবৎ ডাবের দাম একটু বেশিই। তবে কেন বেশি সেটি আমরা বলতে পারব না। প্রতিটি ডাবে আমরা সর্বোচ্চ ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত লাভ করি। যে জায়গায় দাঁড়িয়ে বিক্রি করি, সেই জায়গার ভাড়া দিতে হয়। তাই এই কয় টাকা লাভ করতে না পারলে তো চলতে পারব না।
রমজান আলী দাবি করেন, এই সময়টাতে এমনিতেই খুব বেশি ডাব পাওয়া যায় না। তার ওপরে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ায় ডাবের চাহিদা বেশি। মোটামুটি মাঝারি সাইজের একটি ডাব কিনে পরিবহণ খরচ দিয়ে জায়গামতো আনতেই ১৩০ থেকে ১৫০ টাকা খরচ পড়ে। এজন্য বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।
হৃদরোগ হাসপাতালের ভেতরে ডাবসহ নানারকম ফলের পসরা সাজিয়ে বসেছেন ফল বিক্রেতারা। তাদের মধ্যে একজন রাসেল মিয়া। ডেঙ্গুর ভয়াবহতা বাড়ায় ডাবের রমরমা ব্যবসার কথা অকপটেই স্বীকার করলেন তিনি। বলেন, দেশে ডেঙ্গু সংক্রমণ যখন থেকে বেড়েছে, তখন থেকেই ডাবের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে পাইকারি বিক্রেতারা। আমরা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, দিনে সর্বোচ্চ ৫০ থেকে ৬০টি ডাব বিক্রি করি। সবমিলিয়ে লাভ থাকে ৮০০ থেকে ১০০০ হাজার টাকা পর্যন্ত।
আরও পড়ুন>>ডেঙ্গু কোথায় গিয়ে থামবে বলা যাচ্ছে না : স্বাস্থ্য অধিদপ্তর
তিনি বলেন, একটি বড় সাইজের ডাব আমাদেরই ১৫০ থেকে ১৮০ টাকা দিয়ে কিনতে হয়। এখান থেকে আর কত টাকা লাভ করা যায়? আবার দাম বেশি হলে মানুষ কিনতে চায় না। আমরা যদি কম দামে কিনতে পারি, তাহলে তো কম দামে বিক্রি করতেও কোন সমস্যা নেই।
তিনি বলেন, একটি বড় সাইজের ডাব আমাদেরই ১৫০ থেকে ১৮০ টাকা দিয়ে কিনতে হয়। এখান থেকে আর কত টাকা লাভ করা যায়? আবার দাম বেশি হলে মানুষ কিনতে চায় না। আমরা যদি কম দামে কিনতে পারি, তাহলে তো কম দামে বিক্রি করতেও কোন সমস্যা নেই।
ডেঙ্গুর প্রকোপকে পুঁজি করে অন্যান্য ফলমূলের দামেও আগুন
ডেঙ্গু সংক্রমণের এই মৌসুমে শুধু কি ডাবের দামই বেড়েছে? না, প্রতিটি ফলমূলেই যেন ডাবের ছোঁয়া লেগেছে! ফলে দামেও লেগেছে আগুন।
হৃদরোগ হাসপাতালের প্রধান গেটের সামনেই ফল বিক্রি করেন রফিক মিয়া। ফলের দাম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ২৬০ টাকা কেজিতে মাল্টা বিক্রি করছি। কমলা বিক্রি করছি ২৫০ টাকায়। এছাড়াও আপেল ২৮০ টাকা, আঙুর ৪০০ টাকা এবং বেদেনা ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা কেজিতে বিক্রি করছি।
দাম বেড়েছে না কি স্বাভাবিক আছে? জানতে চাইলে তিনি বলেন, মাল্টার দাম বেশ কিছুদিন আগে থেকেই বেড়েছে। আপেলের দাম কিছুদিন আগে একটু কম ছিল, এখন আবার বেড়ে গেছে। আর দীর্ঘদিন যাবৎ আঙুর ও বেদেনা এই দামেই বিক্রি করছি।
ডেঙ্গু সংক্রমণ বৃদ্ধির সুযোগে দাম বাড়ানো হয়েছে কি না জানতে চাইলে এই বিক্রেতা বলেন, ডেঙ্গুর জন্য বেড়েছে কি না তা বলতে পারব না। আমরা ছোট ব্যবসায়ী, এত খবর আমরা নেই না। যে দামে আমরা কিনে আনি, তার থেকে একটু বেশিতে বিক্রি করি। খুব বেশি দাম রাখার সুযোগ নেই। যেখান থেকে কিনে আনি, সেখানেই দাম বেড়েছে। আগে এক কার্টন মাল্টা কিনতাম ২৮০০ টাকায় আনতাম, এখন সেগুলো কিনতে হচ্ছে ৪২০০ টাকায়।
হাসপাতালের বাইরে খুচরা বাজারে ডাবসহ ফলমূলের দাম
ডাব এবং ফলমূলের দাম যাচাই করতে সরেজমিনে রাজধানীর কাওরানবাজারে গিয়ে দেখা গেছে, হাসপাতাল সংলগ্ন দোকানগুলোর তুলনায় ডাবসহ ফলমূলের দাম অনেকটাই কম। ডেঙ্গুর কারণে কিছুটা বাড়তি দাম থাকলেও হাসপাতালগুলোর পাশের দোকানগুলোতে রোগীদের কেন্দ্র করে ‘ডাকাতি করা হচ্ছে’ বলে মন্তব্য করেছেন ব্যবসায়ীরা।
আরও পড়ুন>>মশার ওষুধে জালিয়াতি : সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানে তথ্য চেয়েছে ডিএনসিসি
মো. আসলাম হোসেন নামক একজন ডাব ব্যবসায়ী বলেন, যে ডাব আমি ৫০-৬০ টাকায় বিক্রি করি, হাসপাতালের পাশে এই ডাব বিক্রি হয় ১০০ থেকে ১২০ টাকায়। তার মানে তারা আমাদের থেকে দ্বিগুণ বেশি দামে বিক্রি করে। অথচ আমরা যে আড়ত থেকে কিনে আনি, তারাও সেখান থেকেই কিনে থাকে। আসলে তাদের আলাদা সিন্ডিকেট আছে। তারা সবাই মিলে রোগীদের থেকে ফায়দা লুটে। হাসপাতালের জায়গায় দাঁড়িয়ে তারা রোগীদের পকেট কাটে, সে হিসেবে তাদের ওইখানে ব্যবসা করার সুযোগ দেওয়াই ঠিক নয়।
কাওরানবাজারের ফল বিক্রেতা আবুল হোসেন বলেন, আপেল বিক্রি করছি ২২০ টাকায়, মাল্টা বিক্রি করছি ২৩০ থেকে ২৪০ টাকায়। এছাড়া আঙুরের দাম রাখছি ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা। বেদেনা বিক্রি করছি ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকায়।
তিনি বলেন, গত কিছুদিন যাবৎ ফলমূলের বাজার একটু চড়া। আমরা যে দামে কিনে আনি, ১০ থেকে ২০ টাকা লাভে বিক্রি করে দেই। এর থেকে বেশি দাম রাখার কোনো সুযোগ নেই।
ডাব-মাল্টা ডেঙ্গু রোগীর জন্য মেন্ডাটরি নয় : ডা. এবিএম আবদুল্লাহ
দেশের প্রখ্যাত মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ও প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এবিএম আবদুল্লাহ বলেন, ডেঙ্গুতে ডাব বা নির্দিষ্ট কিছু ফলমূল বলতে কিছুই মেন্ডাটরি নয়। উদ্দেশ্য হলো, তরল খাবার খাওয়ানো। ডেঙ্গু হলে যে ডাবই খেতে হবে, বিষয়টি এমন নয়। এর কোনো সাইন্টিফিক রুলও নেই। তরল জাতীয় যেকোনো খাবার খেলেই হলো। এক্ষেত্রে পানিও খাওয়া যেতে পারে।
তিনি বলেন, যদি কারও পাতলা পায়খানা হয়, বমি হয়, তাহলে সে ডাব খেতে পারে। ডাবে থাকা পটাশিয়াম কাজে লাগতে পারে। এছাড়া অন্যান্য রোগীদের ডাবের কোনো কার্যকারিতা নেই। চিকিৎসকরা হয়ত রোগীদের তরল খাবারের কথা বলে থাকেন, এক্ষেত্রে কোন একটা পক্ষ থেকে ডাবের নাম উঠে আসায় দাম হয়ে গেছে দ্বিগুণ। এটি ব্যবসায়ীদের কারসাজি।
ডেঙ্গুকে ঘিরে রমরমা ব্যবসা হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ডেঙ্গুকে ঘিরে প্রচুর ব্যবসা হচ্ছে। স্যালাইনের দাম বেড়েছে, কিছু প্রয়োজনীয় ওষুধ এবং ডাবসহ ফলমূলের দাম বেড়েছে। আমি বলব যে এগুলো অপ্রয়োজনীয়, সুতরাং অতিরিক্ত টাকা খরচ করে ডাব বা এ জাতীয় ফলমূল খাওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। তরল জাতীয় খাবারের জায়গায় পানি, কোমল পানীয়-জুস, এমনকি বাসায় তৈরি করে স্যালাইনও খেতে পারেন।