ধৈর্য দুর্দিনের সান্ত্বনা

জীবনের প্রতিটি মুহৃর্ত এক রকম থাকে না। কখনো সুখ কখনো দূঃখ, কখনো হাসি, কখনো কান্না এ নিয়েই জীবন। সুখের সময়গুলোতে যেমন শুকরিয়া আদায় করতে হয়, তেমনি দুঃখের সময়গুলোতেও ধৈর্য ধারণ করতে হয়। যারা সর্বাবস্থায় মহান আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা রেখে ধৈর্য ধারণ করতে পারে, মহান আল্লাহ তাদের সফল করেন। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘হে ঈমানদাররা, তোমরা ধৈর্য ধারণ করো, ধৈর্যে প্রতিযোগিতা করো এবং সর্বদা আল্লাহর পথে প্রস্তুত থাকো, আল্লাহকে ভয় করো, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পারো।’ (সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ২০০)

তাই মুমিন ভালো থাকুক কিংবা খারাপ থাকুক, সুখে থাকুক কিংবা দুঃখে থাকুক, সর্বাবস্থায় তার জন্য আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের সুযোগ আছে। সুখের দিনে শুকরিয়া যেমন আল্লাহর সন্তুষ্টি ও সফলতা অর্জনের মাধ্যম হয়, তেমনি দুঃখের দিনে ধৈর্য মানুষকে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করতে সহযোগিতা করে এবং সফলতার দ্বার খুলে দেয়।

মানুষের জীবনে প্রতিকূল পরিস্থিতি আসা স্বাভাবিক বিষয়। যারা তখন আল্লাহর ওপর আস্থা রেখে ধৈর্য ধারণ করবে, আল্লাহ তাদের অগণিত পুরস্কারে পুরস্কৃত করার ঘোষণা দিয়েছেন। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘বলো হে আমার মুমিন বান্দারা, যারা ঈমান এনেছ, তোমরা তোমাদের রবকে ভয় করো। যারা এ দুনিয়ায় ভালো কাজ করে তাদের জন্য রয়েছে কল্যাণ। আর আল্লাহর জমিন প্রশস্ত, শুধু ধৈর্যশীলদেরই তাদের প্রতিদান পূর্ণরূপে দেওয়া হবে কোনো হিসাব ছাড়াই।’ (সুরা : জুমার, আয়াত : ১০)

অন্য আয়াতে মহান আল্লাহ ধৈর্যশীলদের জান্নাত উপহার দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘যারা তাদের রবের সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে ধৈর্য ধারণ করে, নামাজ কায়েম করে এবং আমি তাদের যে রিজিক প্রদান করেছি, তা থেকে গোপনে ও প্রকাশ্যে ব্যয় করে এবং ভালো কাজের মাধ্যমে মন্দকে দূর করে, তাদের জন্যই রয়েছে আখিরাতের শুভ পরিণাম। স্থায়ী জান্নাতগুলো, যাতে তারা এবং তাদের পিতৃপুরুষরা, তাদের স্ত্রীরা ও তাদের সন্তানদের মধ্যে যারা সৎ ছিল তারা প্রবেশ করবে। আর ফেরেশতারা প্রতিটি দরজা দিয়ে তাদের কাছে প্রবেশ করবে। (আর বলবে) শান্তি তোমাদের ওপর। কারণ তোমরা ধৈর্য ধারণ করেছ, আর আখিরাতের এ পরিণাম কতই না উত্তম।’ (সুরা : রাদ, আয়াত : ২২-২৪)

দুনিয়ায় মানুষের বিপদাপদ আসা স্বাভাবিক। কিন্তু পরম করুণাময় এর বিনিময়েও মুমিন বান্দাদের গুনাহ মাফ করে দেন। আবু সাঈদ খুদরি (রা.) ও আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেছেন, ‘মুসলিম ব্যক্তির ওপর যে কষ্ট-ক্লেশ, রোগব্যাধি, উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা, দুশ্চিন্তা, কষ্ট ও পেরেশানি আসে, এমনকি যে কাঁটা তার দেহে ফোটে, এসবের মাধ্যমে আল্লাহ তার গুনাহগুলো ক্ষমা করে দেন।’ (বুখারি, হাদিস : ৫৬৪১)

তাই দুনিয়ায় কোনো কিছু না পেলে বা কোনো বিপদে পড়লে ধৈর্যহারা না হয়ে মহান আল্লাহর সাহায্য চাওয়া উচিত। কারণ মানুষ জানে না, কোনটা তার জন্য ভালো, আর কোনটা খারাপ। কোনটা কল্যাণকর আর কোনটা অকল্যাণের। আল্লাহ তার বান্দাদের জন্য যখন যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন, তা-ই তাদের জন্য কল্যাণকর। এতে কখনো কখনো সাময়িক কষ্ট অনুভূত হলেও এর বিনিময়ে রয়েছে মহাপ্রতিদান। তাই কষ্টের সময়গুলোতেও ধৈর্যসহকারে মহান আল্লাহর কাছেই সাহায্য চাওয়া উচিত।

 

 

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

আজকের দিন-তারিখ
  • বৃহস্পতিবার (রাত ৩:১৪)
  • ২রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • ২৩শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি
  • ১৯শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (গ্রীষ্মকাল)
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com